শিরোনাম:
পাইকগাছা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
বুধবার ● ২৬ আগস্ট ২০২০
প্রথম পাতা » বিশ্ব » মহীয়সী নারী মাদার তেরেসার জন্মদিন আজ
প্রথম পাতা » বিশ্ব » মহীয়সী নারী মাদার তেরেসার জন্মদিন আজ
৫৪২ বার পঠিত
বুধবার ● ২৬ আগস্ট ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মহীয়সী নারী মাদার তেরেসার জন্মদিন আজ

---এস ডব্লিউ নিউজ:

মহীয়সী নারী মাদার তেরেসা ভালোবাসা দিয়ে পৃথিবীর বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিরন্তর কাজ করে গেছেন। তিনি বলতেন, ‘পৃথিবীবাসীর গুলি আর বোমার দরকার নেই, দরকার ভালোবাসার।’ এই ভালোবাসো দিয়েই তিনি বিশ্ববাসীর হৃদয় জয় করে অমরত্ব লাভ করেছেন। আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে গেছেন। ভালোবাসা দিয়ে দরিদ্র, দুস্থ, অসহায় মানুষকে মায়ের মমতায় আগলে রেখেছেন। তার নিঃস্বার্থ ভালোবাসার স্রোতে যাদের বুক ভিজেছে, তাদের কাছে তিনি ‘মা’ হয়ে ওঠেন। পৃথিবীবাসী ছিল তাঁর কাছে সন্তানের মতো, মায়ের মমতা দিয়ে বিশ্ববাসীকে আগলে রাখতে চেয়েছেন। তিনি পৃথিবীর আনাচে–কানাচে ঘুরে মানুষের কাছে ভালোবাসার বাণী পৌঁছে দিতেন।

দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে মাদার তেরেসা দরিদ্র, অসুস্থ, অনাথ ও মৃত্যুপথযাত্রী মানুষকে সেবা দিয়ে গেছেন

আলবেনীয় বংশোদ্ভূত মাদার তেরেসার জন্ম ১৯১০ সালের ২৬ আগস্ট মেসেডোনিয়ার স্কোপিতে। পরিবার প্রদত্ত নাম অ্যাগনেস বোইয়াক্সিউ এবং ডাক নাম গোস্কসা। গোস্কসা মূলত একটি তুর্কি শব্দ, যার অর্থ ‘কুসুমকলি’। তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। তার বাবা ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ। তাদের পরিবারটি ছিল অত্যন্ত সুখী। কিন্তু ভাগ্যের এমনই নির্মম পরিহাস, মাত্র ৯ বছর বয়সে মাদার তেরেসাকে পিতৃহারা হতে হয়। শুধু বাসস্থানটুকু ছাড়া সর্বস্ব হারিয়ে মহাবিপদে পড়তে হয় পরিবারটিকে। আকস্মিক এই বিপর্যয়ের ফলে তেরেসার মা ভীষণভাবে মুষড়ে পড়েন। সংসারের সব দায়দায়িত্ব এসে পড়ে তেরেসার বড় বোন অ্যাগের ওপর। কাপড় বিক্রি ও এমব্রয়ডারির ব্যবসা দিয়ে তাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম শুরু হলো। জীবনের এই সংগ্রাম থেকে দারিদ্র্য ও প্রতিকূলতাকে সাহস ও উদ্দীপনার সঙ্গে গ্রহণ করার কৌশল আবিষ্কার করেন মাদার তেরেসা।

তেরেসার লেখালেখির হাত খুব ভালো ছিল। তাই অনেকেই ধারণা করেছিলেন, লেখালেখি করেই তিনি জীবিকা নির্বাহ করবেন। কিন্তু তার আগ্রহ ছিল মানবসেবায়। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি ঠিক করলেন সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করার। তৎকালে ভারতে বাংলায় ধর্মীয় কাজ করতেন যুগোস্লাভিয়ার ধর্মযাজকেরা। তাদের সিদ্ধান্ত ছিল, লরেটা সিস্টারদের মধ্যে যারা আইরিশ সম্প্রদায়ভুক্ত তারা যাবেন ভারতবর্ষের মতো এলাকায় কাজ করতে। অ্যাগনেস (মাদার তেরেসা) তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ শুরু করতে চাইলেন। কিন্তু এই কাজ পেতে হলে, তাকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। পরীক্ষাটি হবে প্যারিসে। মাত্র ১৮ বছর বয়সে যার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য বিনয়ী, নম্র এবং পরোপকারে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করা, তাকে কি কোনো পরীক্ষায় পেছনে ফেলা যায়? যায় না বলেই হয়তো প্যারিসের সাক্ষাৎকারে সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হওয়ার পর তেরেসা ও তাঁর সঙ্গীকে পাঠানো হলো আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে তাদের সন্ন্যাস জীবনের প্রশিক্ষণ এবং ইংরেজি শিক্ষার জন্য। সেখানে মিশনারি মেয়েদের দল ‘সিস্টার্স অব লোরেটো’–এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষ করে প্রায় ৬ সপ্তাহ শেষে ১৯২৮ সালের ১ ডিসেম্বর দুই সন্ন্যাসিনী সুদূর ভারতবর্ষের উদ্দেশ্যে সমুদ্র পথে পাড়ি দিলেন। ভারতে এসে দার্জিলিংয়ে নব দীক্ষিত নান হিসেবে কাজ শুরু করেন।

১৯৩১ সালের ২৪ মে তেরেসা সন্ন্যাসিনী হিসেবে প্রথম শপথ গ্রহণ করেন। তখন তিনি সাধু সেন্ট তেরেসার নামানুসারে ‘সিস্টার ম্যারি তেরেসা’ নাম গ্রহণ করেন। ১৯৩৭ সালের ১৪ মে পূর্ব কলকাতায় একটি লোরেটো কনভেন্ট স্কুলে পড়ানোর সময় তিনি চূড়ান্ত শপথ গ্রহণ করেন। স্কুলে পড়াতে তার ভালো লাগলেও কলকাতার দরিদ্র মানুষের দুঃখ-কষ্টে তিনি উত্তরোত্তর উদ্বিগ্ন হতে লাগলেন। তিনি সম্পূর্ণভাবে মানবসেবায় আত্মনিয়োগ করার সংকল্পে লোরেটো স্কুলের চাকরি ছেড়ে দিলেন। তিনি যখন লোরেটো স্কুলের চাকরি ছেড়ে দেন, তখন তার হাতে ছিল মাত্র পাঁচ টাকা। এ রকম নিঃস্ব অবস্থায় তিনি আশ্রয় নিলেন শিয়ালদহ রেলস্টেশন-সংলগ্ন এক পুরোনো ভাঙা বাড়িতে। কলকাতার অলিগলি আর বস্তিতে ঘুরে বেড়াতে থাকেন। ১৯৪৮ সালে দরিদ্রের মাঝে মিশনারি কাজ শুরু করেন। প্রথাগত লোরেটো অভ্যাস ত্যাগ করেন। পোশাক হিসেবে পরিধান করেন নীল পাড়ের একটি সাধারণ সাদা সুতির বস্ত্র। এ সময়ই ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করে বস্তি এলাকায় কাজ শুরু করেন। প্রথমে একটি ছোট স্কুল স্থাপনের মাধ্যমে শুরু করেছিলেন। পরে ক্ষুধার্ত ও নিঃস্বদের ডাকে সাড়া দিতে শুরু করেন। মাত্র ১২ জন সদস্য নিয়ে ১৯৫০ সালের ৭ অক্টোবর প্রতিষ্ঠা করেন ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি’, যার শাখা বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে আছে। ১৯৫২ সালে এই চ্যারিটির অধীনেই গড়ে ওঠে ‘নির্মল হৃদয়’, কুষ্ঠ রোগীদের জন্য ‘শান্তিনগর’।

১৯৫৫ সালে মাদার তেরেসা স্থাপন করেন ‘নির্মল শিশুভবন’। ১৯৬৩ সালে গড়ে তোলা হয় ‘মিশনারিজ অব চ্যারিটি’-এর ব্রাদার শাখা। মাত্র ১২ জন সদস্য নিয়ে যে চ্যারিটির যাত্রা শুরু হয়েছিল, সময়ের ব্যবধানে তা এখন কয়েক হাজারে পৌঁছেছে। পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশের দুস্থ মানুষের সেবার লক্ষ্যে ভারতের বাইরে প্রথমবারের মতো ১৯৬৫ সালে ভেনেজুয়েলায় মিশনারি অব চ্যারিটির শাখা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৬৮ সালে রোম, তানজানিয়া এবং অস্ট্রিয়াতে শাখা খোলা হয়। ১৯৭০-এর দশকে এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকার কয়েক ডজন দেশে চ্যারিটির শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭০-এর দশকের মধ্যেই সমাজসেবী এবং অনাথ ও আতুরজনের বন্ধু হিসেবে তার খ্যাতি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।





বিশ্ব এর আরও খবর

সুখী দেশের তালিকায় ফের শীর্ষে ফিনল্যান্ড; তলানিতে বাংলাদেশ সুখী দেশের তালিকায় ফের শীর্ষে ফিনল্যান্ড; তলানিতে বাংলাদেশ
বাংলাদেশি জাহাজের দায়িত্বে নতুন দস্যুদল, হাতে ভারী অস্ত্র বাংলাদেশি জাহাজের দায়িত্বে নতুন দস্যুদল, হাতে ভারী অস্ত্র
ভাষা শহিদদের সম্মান জানাতে কলকাতা থেকে সাইকেল শোভাযাত্রা  মাগুরায় ভাষা শহিদদের সম্মান জানাতে কলকাতা থেকে সাইকেল শোভাযাত্রা মাগুরায়
থ্যালাসেমিয়া রোগমুক্ত সমাজ গড়তে ভারতের প্রতিনিধি দলের ‘সচেতনতা যাত্রা’ থ্যালাসেমিয়া রোগমুক্ত সমাজ গড়তে ভারতের প্রতিনিধি দলের ‘সচেতনতা যাত্রা’
‘গঙ্গা বিলাস’ বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বকে ছড়িয়ে দিয়ে আরো রঙিন করে দিয়ে যাবে   -নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ‘গঙ্গা বিলাস’ বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বকে ছড়িয়ে দিয়ে আরো রঙিন করে দিয়ে যাবে -নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
দুবাইয়ের মন্দিরে ১৬ দেবতার মূর্তি, দর্শনে লাগছে অনলাইন বুকিং দুবাইয়ের মন্দিরে ১৬ দেবতার মূর্তি, দর্শনে লাগছে অনলাইন বুকিং
কারা ভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ৩১ ভারতীয় জেলে কারা ভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ৩১ ভারতীয় জেলে
ভারতে তৈরি প্রথম বিমানবাহী রণতরী উদ্বোধন ভারতে তৈরি প্রথম বিমানবাহী রণতরী উদ্বোধন
পানির নিচে বিশ্বের সবচেয়ে ‘খারাপ’ শহর পানির নিচে বিশ্বের সবচেয়ে ‘খারাপ’ শহর
ঘাড়ের ডান দিকে আঘাত করা হয় সালমান রুশদিকে: চিকিৎসক ঘাড়ের ডান দিকে আঘাত করা হয় সালমান রুশদিকে: চিকিৎসক

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)