শিরোনাম:
পাইকগাছা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
রবিবার ● ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » কৃষি » বাঁকার বিল পাইকগাছা ৭শত একর জমিতে এবারও ধান চাষে শঙ্কা
প্রথম পাতা » কৃষি » বাঁকার বিল পাইকগাছা ৭শত একর জমিতে এবারও ধান চাষে শঙ্কা
৪৮২ বার পঠিত
রবিবার ● ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বাঁকার বিল পাইকগাছা ৭শত একর জমিতে এবারও ধান চাষে শঙ্কা

এস ডব্লিঊ নিঊজ:---

পাইকগাছা উপজেলার রাড়–লী ইউনিয়ানের বাঁকা গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনার কারণে ৭শত একর জমিতে বছরের ৭ মাস ধরে জলাবদ্ধতা থাকছে। এক যুগ ধরে জলাবদ্ধতা থাকায় চরম আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে ওই এলাকার প্রায় ৬ শত কৃষক। এই বিষয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও মিলছে না সুরাহ।

এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার উত্তরে সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলা ও পাইকগাছা উপজেলার রাড়–লী ইউনিয়ানের মধ্যে দিয়ে বয়ে  গেছে কপোতাক্ষ নদ। দুই জেলাকে পৃথক করেছে নদটি। এই নদের পশেই বাঁকা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের এই বিলটির নাম ‘বাকার চর’। এই এলাকায় বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা প্রায় প্রায় ১০ হাজার।  প্রায় ১৩ বছর আগেও এই বিলে আমন (আষাঢ় থেকে পৌষ মাস) ও বোরো ( পৌষ থেকে বৈশাখে) ধানের চাষ করতেন কৃষকরা। এই দু’বার ধান পেয়ে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে বেশ  স্বাচ্ছন্দে বসবাস করতেন। পানি নিষ্কাশন হত এই নদ দিয়ে। ২০০৬ সালে দিকে নদটি সম্পূর্ন ভরাট হয়ে যায়। তখন এই বিলের পানি নিষ্কাশনের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি মৌসুমে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির পানি উঠে যায় ঘরের মধ্যে। তখন ঘরের মধ্যে মাচা করে বসবাস করতে হয় বাসিন্দাদের। ---

সরেজমিনে ২৪ জানুয়ারি দেখা গেছে, কপোতাক্ষ নদটি অস্তিত্বই নেই। নদের মধ্যে ধানের চাষ হচ্ছে। বিলের মধ্যে অনেকে ছোট ছোট বেঁধে মাছ করছেন। সেই মৎস ঘের থেকে ধান চাষের জন্য স্যালে  মেশিনে মাধ্যমে কৃষকরা পানি নিষ্কাশন করছেন।

ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বর) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এই বিলে ৭শত একর বেশি জমি রয়েছে। এর উপর নির্ভরশীল প্রায় ৬শত কৃষক। জলাবদ্ধার কারণে বছরের পর বছর ধরে ধান চাষ করতে পারে না। মাঝে মাঝে সেচের মাধ্যমে পানি অপসরণ করে অনেকে ধান চাষ করেন। তাও অল্প কিছু মানুষ। কারণ পানি অপসরণ করতে গেলে পাম্প খরচ ও যেসব এলাকা দিয়ে পানি অপসরণ হয় সেই সব এলাকার মানুষদের ক্ষতিপূণ দিতে অনেক টাকা চলে যায়। পানি নিষ্কাশনের জন্য এই বছর এ পর্যন্ত ৫ লাখ টাকারও বেশি খরচ হয়ে গেছে। এই টাকা খরচ করে অল্প কিছু জমিতে ধান চাষ করা যেতে পারে।

মো. আবুল হামিদ গাজী বলেন, আগে আমরা এই জমিতে দু’বার ধান চাষ করতাম। সংসার ভাল চলত। এখন একবার ধান চাষ করি। কোন বছর বোরো ধান কাটার সময় কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পানি জমে ধান নষ্ট হয়ে যায়। অথচ এক সময় দু’বার ধান চাষ করতাম। এখন কোন রকমে একবার ধান চাষ করতে পারি।

জবেদ আলী মোড়ল বলেন, বর্ষকালের ৬ মাস এলাকায় জলাবদ্ধতা থাকে। মানুষ মারা গেলে স্যালে মেশিন দিয়ে পানি সেচে তবে কবর দেওয়া লাগে। ওই ৬ মাস এলাকার অধিকাংশ মানুষ বাড়ি ছেড়ে বাইরে থাকে। আমাদের এই কষ্ট দেখার মত কেউ নেই।

রাড়–লী ইউনিয়ানের চেয়ারম্যান আবুল মসজিদ গোলদার বলেন, ওই এলাকার ১০০ জনে ৯০ জন কৃষি কাজ করে। বছরের ৬ মাস এলাায় জলাবদ্ধার কারণে ১০ হাজার হাজার মত মানুষের খুব সমস্যা। পাশের কপোতাক্ষ নদটি যদি খনন করা হতো তবে জলাবদ্ধতা থাকত না। কিন্তু আজও এ বিষয়ে কোন উদ্যোগ দেখছি প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)। আমি যেখানে মিটিংএ যাই সেখানে এই সমস্যার কথা বলি কিন্তু কোন কাজ হয় না। উপজেলা চেয়ারম্যান-এমপি-পানি মন্ত্রী সবাইকে জানিয়েছি কোন ফল হয়নি।

পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, এ বিষয়ে আমাকে  কেউ জানায়নি। খোঁজ-খবর নিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী তহিদুল ইসলাম বলেন, সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার শালিখা থেকে খুলনার কয়রা উপজেলার আমাদি ইউনিয়ান পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার কপোতাক্ষ নদ ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে খনন করা হবে। তখন ওই বিলের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা হবে আশা করা যায়।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)