শিরোনাম:
পাইকগাছা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

SW News24
শনিবার ● ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » চিত্রবিচিত্র » কেশবপুরের মেয়ের প্রেমে আমেরিকান ইঞ্জিনিয়ার হলেন বাঙ্গালী
প্রথম পাতা » চিত্রবিচিত্র » কেশবপুরের মেয়ের প্রেমে আমেরিকান ইঞ্জিনিয়ার হলেন বাঙ্গালী
৫১০ বার পঠিত
শনিবার ● ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

কেশবপুরের মেয়ের প্রেমে আমেরিকান ইঞ্জিনিয়ার হলেন বাঙ্গালী

---

এম. আব্দুল করিম, কেশবপুব (যশোর) প্রতিনিধি:

যশোরের কেশবপুর উপজেলার মেহেরপুর গ্রামের মেয়ে রহিমা খাতুনের প্রেমের টানে আমেরিকান নাগরিক ইঞ্জিনিয়ার ক্রিস হোগল নিভৃত পল্লীতে এসে সংসার পেতে হয়েছেন বাঙ্গালী। গত ৫/৬ বছর ধরে তিনি বসবাস করছেন বাংলাদেশের যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার মেহেরপুর গ্রামে গ্রামে এসে। তিনি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন বাংলাদেশের গ্রামীণ সংস্কৃতির সঙ্গে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ক্রিস হোগল বলেন, হোগল থেকে বাঙ্গালী আয়ুব আলী হয়ে ওঠার গল্প। তিনি বলেন, তার বাড়ি যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে। তিনি ভারতের মুম্বাই শহরে থাকতেন। সেখানে তিনি অনিল আম্বানির রিলায়েন্স ন্যাচারাল রিসোর্সেস লিমিটেড কো¤পানিতে পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত ছিলেন। মুম্বাই শহরেই ঘটনাক্রমে রহিমার সঙ্গে তার দেখা হয়। এরপর তাদের স¤পর্ক ভালোবাসায় রূপ নেয়। তার পর বিয়ে এবং দা¤পত্য জীবন শুরু। রহিমা খাতুনের সঙ্গে তিনি জীবনের শেষ পর্যন্ত থাকতে চান। আমেরিকান স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় অনেক আগে। আছে মা ও সন্তানরা। আমেরিকা থেকে মা ও প্রথম পক্ষের সন্তানকেও নিয়ে আসতে চান এ দেশে। এ জন্য তৈরি করছেন বিশাল অট্টালিকা বাড়িও। তিনি এখন তার আগের ক্রিস হোগল নাম বদলে হয়েছেন মো. আয়ূব আলী। আর এই নামেই এলাকায় পরিচিত এক জন মানুষ তিনি। প্রায় এক যুগ ধরে রহিমা খাতুনের সঙ্গে তিনি সংসার করছেন। বর্তমানে মেহেরপুর মুন্সি মেহেরুল্লাহর মাজারের পাশে তাদের বসবাস। বাংলার সবুজ প্রকৃতি, ধানক্ষেত ও সরিষা ফুলের হলুদ রং তাকে বিমোহিত করে বারংবার। তিনি এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য পোশাক কারখানা ও স্বাস্থ্য সেবার কাজ করতে চান।

মেহেরপুরের আশরাদ আলী মোড়ল বলেন, বিদেশি মানুষটি এখানে বিয়ে করে অনেক দিন ধরে বসবাস করছেন। প্রায় ১০/১২ বিঘা ফসলি জমি ক্রয় করেছেন। নিজে ক্ষেত থেকে ধান এনে ভ্যানে উঠিয়ে বাড়িতে নেন। এলাকার মানুষ তার বাঙালি হয়ে ওঠার দৃশ্য দেখে বিস্মিত হন। ভালোবাসা মানুষকে কীভাবে পরিবর্তন করতে পারে তা ভেবে।

রহিমা খাতুন বলেন, শৈশবে তার বাবা আবুল খাঁ ও মা নেছারুন নেছার হাত ধরে অভাবের তাড়নায় পাড়ি জমান ভারতে। পশ্চিমবঙ্গের বারাসাতে তার মা অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। বাবা শ্রম বিক্রি করতেন। আর রহিমা সেই শৈশবে বারাসাতের বস্তিতে একা থাকতেন। ১৩-১৪ বছর বয়সে বাবা তাকে বিয়ে দেন। তারা এক টুকরো জমিও কিনেন। এর মধ্যে রহিমা খাতুন তখন তিন সস্তানের জন্ম দেন। কিন্তু অভাবের তাড়নায় তার স্বামী সেখানকার জমি বিক্রি করে রহিমা খাতুনকে ফেলে তার স্বামী নিরুদ্দেশ হয়ে যান। রহিমা খাতুন চলে যান জীবিকার সন্ধানে মুম্বাই শহরে। সেখানেই পরিচয় হয় ক্রিস হোগলের সঙ্গে। এভাবে দেখা সাক্ষাতের ছয় মাস পর তারা বিয়ে রেজিস্ট্রি করেন। বিয়ের তিন বছর পর কর্মসূত্রে ক্রিস হোগল তাকে নিয়ে চীনে চলে যান। সেখানে পাঁচ বছর ছিলেন। এরপর তারা বাংলাদেশে মেহেরপুরে ফিরে আসেন। মেহেরপুরে ফিরে আসার কিছু দিন পর তার বাবা আবুল খাঁ মারা যান। তার মা নেছারুন নেছা এখনও জীবিত। রহিমার প্রথম স্বামীর তিনটি সন্তান তাদের সঙ্গে থাকে। তিনি আরো বলেন, ক্রিস হোগলের শখ বই পড়া ও মোটরসাইকেলে দূর ভ্রমণে যাওয়াও কুকুর পোষা।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)