শনিবার ● ২৯ মে ২০২১
প্রথম পাতা » সারাদেশ » কয়রার প্লাবিত এলাকায় খাবার পানির তীব্র সংকট
কয়রার প্লাবিত এলাকায় খাবার পানির তীব্র সংকট
অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা ।।
কয়রায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলােচ্ছাসে সাতটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙো নদীর লােনা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে এলাকার খাবার পানি ও ঘর গৃহাস্থালীর কাজে ব্যবহৃত পানির উৎস নষ্ট হয়ে যায়। ফলে প্লাবিত ৪০টি গ্রামে এখন খাবার পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। সেখানকার লােকজনকে অনেক দুর থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে।
প্লাবিত এলাকার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে সেখানকার বেশিরভাগ নলূকূপের পানি পানযােগ্য নয়। খাবার পানির প্রধান উৎস পুকুর ডুবে যাওয়ায় পিএসএফ থেকে পানি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় বৃষ্টির পানি জমিয়ে রাখার বড় পাত্রগুলােও খালি পড়ে আছে। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন মধ্য বিলে অবস্থানরত বাসিন্দারা। তাদের আশেপাশে কােথাও শুকনা জায়গা না থাকায় কেউ ভেলায় চড়ে, আবার কেউ লােনাপানি ভেঙে খাবার পানি সংগ্রহের জন্য দুরের গ্রামে পাড়ি জমাচ্ছেন।
শুক্রবার সকালে আটরা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সাজেদা খাতুন নামের এক গৃহীনি তার শশুরের সঙ্গে ভেলায় চড়ে খাবার পানি সংগ্রহের জন্য বেরিয়ছেন। তিনি বলেন, গ্রামের সকল মানুষ পাশ্ববর্তী একটি পুকুরপর পানি পান করাতাম। সেটি ডুবে যাওয়ার পর তিন মাইল দুরের কালনা সরকারি পুকুর থেকে পানি সংগ্রহ করতি হচ্ছে।’ এভাবে ভেলায় চড়ে পানি সংগ্রহ করতে তাদের একদিনের অর্ধেক সময় ব্যয় হচ্ছে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহাদাৎ হােসেন বলেন, খাবার পানির চাইতে এখন ঘর গৃহাস্থালী ও গাসলের পানির বেশি সমস্যা দেখা দিয়েছে। মানুষ যে করেই হােক খাবার পানি জােগাড় করতে পারছে কিন্তু গােসলের পানি পাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে লােনা পানিতেই গোসল সারতে হচ্ছে।
অপরদিকে উত্তর বেদকাশীর হরিহরপুর লঞ্চঘাট ও পদ্মপুকুর গেলে দেখা যায় অনেকগুলি ঝুপড়ি। কথা হয় সঞ্জয় দাসের সাথে। তিনি বলেন, আমার বাড়ী গাঁতীরঘেরী। নদী ভসঙ্গনে ঘর-বাড়ী ডুবে যাওয়ায় এখানে আসতে বাধ্য হয়েছি। কিন্তু সুপেয় পানির পুকুর ও নলকূপ ডুবে যাওয়ায় খাবার জলের অসুবিধায় ভুগছি। প্রায় এক কিলোমিটার দূরে শাকবাড়ীয়ায় একটি মাত্র নলকূপ আছে। তবুও ২ গ্রামের মানুষ লাইন দিয়ে হাতল চেপে চেপে জল আনতে হচ্ছে। নাখেয়ে থাকা যায় কিন্তু জল তেষ্টায় বাঁচা যায়না।
কয়রা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মিঠুন রায় বলেন, আগে থেকেই এ এলাকায় খাবার পানির সংকট রয়েছে। নলকুপ সফল না হওয়ায় বৃষ্টির পানি ও পুকুরপর পানি এখানকার মানুষের একমাত্র ভরষা। তবে দীর্ঘ দিন বৃষ্টি না হওয়ায় সমস্যা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় এ সমস্যা আরাে প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে।