বৃহস্পতিবার ● ১৫ জুলাই ২০২১
প্রথম পাতা » অপরাধ » আশাশুনিতে নদীর চর থেকে উদ্ধারকৃত নবজাতকের পরিচয় মিলেছে
আশাশুনিতে নদীর চর থেকে উদ্ধারকৃত নবজাতকের পরিচয় মিলেছে
আহসান হাবিব, আশাশুনি : আশাশুনির গুনাকরকাটি বেইলী ব্রিজের নিচে বেতনা নদীর চরে ফেলে দেওয়া নবজাতকের পরিচয় মিলেছে। তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের ফকরাবাদ গ্রামের কার্ত্তিক চন্দ্র মন্ডলের পুত্র মিরনময় মন্ডলের স্ত্রী দিপিকা মন্ডল (২৫) দীর্ঘ ১১ মাস অন্তঃসত্তা ছিলেন। গত সোমবার অন্তঃসত্তার সময় কাল ১১ মাস অতিবাহিত হওয়ায় দিপিকার স্বামী ও পিতাকুলের পরামর্শে বুধহাটা বাজারের জনসেবা ক্লিনিকে ভর্তি হন। ওই ক্লিনিকের পরিচালকের পরামর্শে ও তত্ত্বাবধানে দিপিকাকে সিজার করে এবং কন্যা সন্তান প্রসব করে। নবজাতক কন্যা সন্তানটি প্রতিবন্ধী ও দুর্বল হয়েছে বলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের জানান। তারা নবজাতকের অভিভাবকদের বাচ্চাটি দ্রুত সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। সে মোতাবেক দিপিকার মাতা উর্মি রানী সরকার সহ উভয় পক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দিপিকার বাবা পার্শবতী খাজরা ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের সন্দিপ সরকার নবজাতক কন্যা শিশুটি নিয়ে ভোর রাতেই মটর সাইকেল যোগে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এমনিভাবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দিপিকা মন্ডলের মা উর্মি রানী সরকার জানান। দিপিকা মন্ডল বলেন আমি একেবারেই অচেতন অবস্থায় থাকায় আমার সন্তান অসুস্থ্য বলে তাকে সাতক্ষীরা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে আমাকে জানানো হয়েছে। আমার নবজাতক সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে এবিষয়ে আমার এখনও কেউ বলেনি।
এ ঘটনায় নবজাতক কন্যা শিশুটি উদ্ধারের পর থেকে স্থানীয় সাংবাদিকরা বিভিন্নভাবে তথ্যানুসন্ধানে বের হলে ক্লিনিক মালিক, নবজাতকের মা দিপিকা মন্ডল, দিপিকা মন্ডলের মাতা উর্মি সরকার সহ ক্লিনিকে অবস্থান কারীদের কথাবার্তায় বেশ কিছু অসংলগ্ন পরিলক্ষিত হয়। তখন সাংবাদিকরা আশাশুনি হাসপাতাল, থানা অফিসার ইনচার্জ, ইউপি চেয়ারম্যান সহ বিভিন্ন মহলে তথ্য উদঘাটন করাকালীন বিকালেই দিপিকাসহ তার সাথে থাকা মাতৃকুল ও স্বামী কুলের লোকজন ক্লিনিক থেকে উদাও হয়ে যায়। এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছেত আল হারুন চৌধুরী জানান, তিনি থানা অফিসার ইনচার্জ মু. গোলাম কবিরের সাথে নবজাতকটি হত্যা করা হয়েছে এমন মনে হওয়ায় মামলার জন্য সুপারিশ করি। ওসি সাহেব যে কাউকে অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য, সোমবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে রক্তাক্ত মৃতপ্রায় শিশুটি উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ ঘন্টা পর শিশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। সাংবাদিকরা সেই থেকে শিশু হত্যার সাথে জড়িতদের সন্ধানে মাঠে নামেন। দীর্ঘ দেড় দিন অনুসন্ধানের পর শিশুটির মা’কে জনতা ক্লিনিকে অবস্থানের সন্ধান পান। নবজাতক কন্যা শিশুটি মৃত্যুরপর ওই মুহুর্তে কোন পরিচয় না পাওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান হারুন চৌধুরী সাতক্ষীরা হাসপাতালের মাধ্যমে নবজাতকের ময়না তদন্ত ও ডিএনএ পরীক্ষা শেষে গুনাকরকাটি মাজার শরীফে উপস্থিত হন। পরে রাত ১০.৩০টায় শিশুটির নাম ‘মা ফতেমা’ রেখে জানাযা শেষে মাজার শরীফে দাফন করা হয় বলে জানাগেছে। এঘটনায় সচেতন মহল নবজাতকটি হত্যার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে পুলিশ প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।