শিরোনাম:
পাইকগাছা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
রবিবার ● ১০ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » সুন্দরবন » সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষায় বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে ৩টি প্রকল্প
প্রথম পাতা » সুন্দরবন » সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষায় বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে ৩টি প্রকল্প
৩৮৫ বার পঠিত
রবিবার ● ১০ অক্টোবর ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষায় বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে ৩টি প্রকল্প

---

রামপ্রসাদ সরদার, কয়রা, খুলনাঃ
সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষায় ১৮৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে ৩টি প্রকল্প। চলতি অর্থ বছরে চলমান প্রকল্প ৩টি হচ্ছে-সুন্দরবনে ২৫ কেটি টাকায় নতুন ৪টি ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র নির্মাণ, ১৫৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সুন্দরবন সুরক্ষা প্রকল্প ও সুন্দরবনে বাঘসহ বন্যপ্রাণীর সুপেয় পানির চাহিদা মেটাতে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৪টি পুকুর খনন ও পুণঃখনন প্রকল্প। এ সব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি, ইকোট্যুরিজমসহ অবকাঠামোগত সমস্যার বহুলাংশে সমাধান হবে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।

সুন্দরবনে নতুন ৪টি ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প সমগ্র সুন্দরবনের উপর ইকোট্যুরিস্টদের চাপ কমানোসহ এই ম্যানগ্রোভ বনের উপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে বনজ সম্পদের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে স্থানীয়দের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নতুন ৪টি ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। ২৫ কেটি টাকা ব্যয়ে শরণখোলা রেঞ্জের আলিবান্ধা, চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিক, খুলনা রেঞ্জের শেখেরটেক ও কালাবগীতে নতুন ৪টি ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। বর্তমানে সুন্দরবনে ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র হিসেবে করমজাল, হাড়বাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, দুবলারচর, হিরণপয়েন্ট ও কলাগাছিয়া রয়েছে। নতুন ৪টি কেন্দ্র নির্মাণকাজ চলতি অর্থ বছরের মধ্যে শেষ হলে সুন্দরবনে ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রের সংখ্যা দাঁড়াবে ১১টি। সুন্দরবন সুরক্ষা নামের বড় এই প্রকল্পটিতে ব্যয় হচ্ছে ১৫৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এ প্রকল্পে সুন্দরবনের দুবলা, ককিলমুনি, শ্যালা, কচিখালী, চরখালী, তাম্বুলবুনিয়া, জোংড়া ও ঝাপসি টহল ফাঁড়ি সহ ২৮ টি ঝুঁকিপূর্ণ বন অফিসে আরসিসি ভবন, পল্টুন ও গ্যাংওয়ে নির্মাণ, বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বন সন্নিহিত এলাকায় পলি পড়ে ভরাট হওয়া বাইন্ডারি নদী-খাল পুণঃখনন করা হবে।

সুন্দরবনের পানি, মাটি, বৃক্ষরাজি ও বন্যপ্রাণীসহ প্রাণপ্রকৃতি নিয়ে ইকোলজিক্যাল মনিটরিং সিস্টেম গড়ে তোলা হচ্ছে। পাশাপাশি এ সব নিয়ে করা হবে উচ্চতর গবেষণা। খুলনায় সুন্দরবন বিভাগের অফিসে সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে জিওগ্রাফি ইনফরমেশন সিস্টেম বা জিআইএস ল্যাব। এ ল্যাব দিয়ে সুন্দরবনের হালনাগাদ মানচিত্র তৈরি করা হবে। চলতি বছরের ৫ই জানুয়ারী একনেকে পাস হওয়া এ প্রল্পটির কাজ ২০২২ সালের মধ্যে শেষ হলে সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতির হালনাগাদ চিত্র উঠে আসবে। জলবায়ু পরিবর্তনসহ একশ্রেণীর ক্ষমতাবান অসৎ মানুষের কারণে অস্তিত্ব সংকটে থাকা সুন্দরবনের বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ইরাবতীসহ ৬ প্রজাতির ডলফিন, ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়িসহ ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদরাজি, রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও হরিণসহ ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ীসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী ও ৩১৫ প্রজাতির পাখি সুরক্ষায় দ্রুত বিজ্ঞানসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বন বিভাগ।

৮৪টি পুকুর খনন ও পুণঃখনন প্রকল্পের মাধ্যমে লবণাক্ত জলাভূমির সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর বসবাস। বন্যপ্রাণীর দীর্ঘদিনের সুপেয় মিঠাপানির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বনজীবী ও পর্যটকদের খাবার পানির জন্য ৪ টি নতুন পুকুর খনন ও ৮০টি পুকুর পুণঃখনন করা হচ্ছে। জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে ৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এসব পুকুরের মধ্যে ৭০টিতে নির্মাণ করা হচ্ছে পাকা ঘাট। পুরাতন পুকুরগুলো ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে ভরাট হয়ে যাওয়ায় বছরের পর বছর ধরে বাঘ-হরিণসহ বন্যপ্রাণী সুপেয় পানি সংকটের মধ্যে ছিল। এ অবস্থায় ৮৪টি পুকুর খনন ও পুণঃখনন প্রকল্পের কাজ আগামী জুন মাসের মধ্যে শেষ হলে বন্যপ্রাণীগুলোকে আর লবণাক্ত পানি খেতে হবে না। পাশাপাশি ঝড়-জলোচ্ছাসের সময় পুকুরের উঁচু পাড়ে আশ্রয় নিতে পারবে সুন্দরবনের বাঘসহ প্রাণীকূল। খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দে প্রতিবেদককে বলেন, সুন্দরবনে এ প্রকল্প ৩টির কাজ শেষ হলে ইকোট্যুরিজমের উন্নয়ন ও দীর্ঘদিন ধরে বাঘ-হরিণসহ বন্যপ্রাণীর সুপেয় পানির সমস্যা বহুলাংশে সমাধান হবে। অবকাঠামোগত সমস্যা অনেক কমে আসার পাশাপাশি এ ম্যানগ্রোভ বনের প্রাণপ্রকৃতি নিয়ে ইকোলজিক্যাল মনিটরিং সিস্টেমের মাধ্যমে গবেষণা করে সমস্যা সমাধান করা সহজতর হবে।





আর্কাইভ