শিরোনাম:
পাইকগাছা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
সোমবার ● ৬ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » সুন্দরবন » ঘূর্ণিঝড় থেকে নিম্নচাপে রুপ নেওয়া “জাওয়াদ”র কারনে নষ্ট হচ্ছে দুবলায় চটের শুটকি
প্রথম পাতা » সুন্দরবন » ঘূর্ণিঝড় থেকে নিম্নচাপে রুপ নেওয়া “জাওয়াদ”র কারনে নষ্ট হচ্ছে দুবলায় চটের শুটকি
৩৩৯ বার পঠিত
সোমবার ● ৬ ডিসেম্বর ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ঘূর্ণিঝড় থেকে নিম্নচাপে রুপ নেওয়া “জাওয়াদ”র কারনে নষ্ট হচ্ছে দুবলায় চটের শুটকি

---



মোঃএরশাদ হোসেন রনি, মোংলা  
ঘূর্ণিঝড় থেকে নিম্নচাপে রুপ নেওয়া “জাওয়াদ” সোমবার সকালে ভারতের উড়িষ্যায় গেলেও এর প্রভাব পড়েছে সুন্দরবন উপকূল অঞ্চলে। এ অবস্থায় টানা ভারী বৃষ্টিতে সুন্দরবনের দুবলার চরে নষ্ট হয়েছে কয়েক কোটি টাকার শুটকি মাছ।


গত শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হয়ে আজ সোমবার (৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত  সেখানে বৃষ্টি ও দমকা বাতাস বইছে এর ফলে সুন্দরবনের দুবলার জেলে পল্লীর ১০ টি চরের শুঁটকি তৈরির সব মাছ পচে নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান বন বিভাগ। 

এদিকে উত্তাল ঢেউয়ে টিকতে না পেরে শুঁটকি ও সাধারণ জেলেরা সাগর ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে। সহস্রাধিক মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলার বর্তমানে আলোরকোল, নারকেলবাড়িয়া, শ্যালা, মাঝের কিল্লাসহ শুঁটকি উৎপাদনকারী চারটি চরের বিভিন্ন খালে অবস্থান করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে  জানায়, সমুদ্র মোহনা থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আহরণ শেষে তা রোদে শুকিয়ে শুটকি প্রক্রিয়া করেন জেলেরা। আর এই মাছ চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এমনকি বিদেশেও বাজার জাত করা হবে। চরের অভ্যন্তরে ১৩ টি মৎস্য আহরণ, প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণ কেন্দ্র নিয়ে
গঠিত দুবলার জেলে পল্লী। এখানে প্রায় ৩০ হাজার জেলে অবস্থান করছেন। এবার তাদের ১০ থেকে ১৫ মেট্রিক টন শুটকি নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

আলোরকোলের শুঁটকি ব্যবসায়ী বুলবুল ইজারাদার বলেন বৃষ্টিতে চাতাল ও মাচার সব মাছ পচে গেছে। সাগরের অবস্থা খুবই খারাপ। ঝাড়ো বাতাস হচ্ছে। তিন দিন ধরে মাছ ধরাও বন্ধ রয়েছে। সাগরে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে চরের বেশির ভাগ জেলের ঘরে পানি ঢুকে গেছে। এ অবস্থায় ক্ষতির পাশাপাশি দুর্ভোগে পড়েছে চরের সব জেলে-মহাজন।

দুবলার আরেক জেলে আবুল বাশার বলেন,  গত তিনদিনে আমরা যে মাছ পেয়েছি, সেটা শুকাতে পারি নাই। এমন অবস্থা থাকলে এই মাছ গুলো নষ্ট হতে শুরু করবে। আগামীদিন যদি সূর্যের দেখা না পাই, তাহলে আমিসহ এখানে অবস্থান করা জেলে মহাজনদের অনেক টাকার ক্ষতি হয়ে যাবে।

দুবলা ফিশারমেন গ্রুপের সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ দাবি করেছেন, তিন দিনের বৃষ্টিতে শুঁটকি উৎপাদনকারী ১০ টি চরের কমপক্ষে তিন কোটি টাকার মাছ নষ্ট হয়েছে। এসব চরে এক হাজারেরও বেশি মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলার বিভিন্ন খালে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে। মাছ নষ্ট হওয়া এবং মাছ ধরতে না পারায় বড়
ধরনের লোকসানে পড়বে মহাজনরা। তবে শুঁটকি খাত থেকে সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করলেও জেলেদের ক্ষতির দিকটা কেউ দেখে না। এ ব্যাপারে বন বিভাগ বা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোথাও আবেদন করেও কোনো লাভ হয় না বলেও জানান কামাল উদ্দিন আহমেদ।

 তিনি আরও বলেন, গত কয়েক বছরের জলোচ্ছাসে চরের বালু মাটি ধুয়ে চর অনেক নিচু হয়ে গেছে। যার ফলে সামান্য দুর্যোগেও জেলেঘরে ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। যা পাঁচ বছর আগেও এমনটা হয়নি। আমি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির
দুবলার চরের টিম লিডার হিসেবে আছি। আমার অধীনে চারটি চরে ৮০জন সেচ্ছাসেবক রয়েছে। তারা দুর্যোগকালীন সংকেত প্রচার এবং প্রত্যেক জেলে ঘরে গিয়ে সবাইকে সতর্ক করছে।

দুবলার চরের জেলে পল্লী টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রহ্লাদ চন্দ রায় বলেন, তিন দিন ধরে ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। এতে শুঁটকির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে, মহাজনরা আড়াই থেকে তিন কোটি টাকার ক্ষতির কথা বললেও এখন পর্যন্ত সঠিক হিসাব
জানা সম্ভব হয়নি। আবহাওয়া স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত মাছ ধরার কোনো সুযোগ নেই। সাগরের বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে কূলে। চারটি চরের ১০ হাজার জেলে সবাই যার যার ঘরে অবস্থান করছে। পানির উচ্চতা প্রায় ৬-৭ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় বহু জেলেঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। সব জেলে-মহাজনকে নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন  বলেন দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় অবকাঠামোগত কিছু ক্ষতি না হলেও দুবলার জেলে পল্লীতে জেলেদের অনেক শুটকি মাছ নষ্ট ও পঁচে গেছে। তাছাড়া এখনও নতুন করে সাগরে মাছ ধরতে নামতেও পারছেনা তারা। তবে কত টাকার মাছ নষ্ট হয়েছে সেটি জানাতে পারেননি তিনি।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)