সোমবার ● ২৭ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » করোনাকালে দেশে নতুন কোটিপতি ১৭ হাজার ২৯৩ জন
করোনাকালে দেশে নতুন কোটিপতি ১৭ হাজার ২৯৩ জন
এস ডব্লিউ; মহামারি করোনাভাইরাসে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও বেড়েছে কোটিপতির সংখ্যা। কোটি টাকার বেশি ব্যাংকে আমানত রেখেছেন এমন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। এরমধ্যে গত দেড় বছরে (করোনকালীন সময়ে) নতুন কোটিপতি হয়েছেন ১৭ হাজার ২৯৩ জন। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিক সেপ্টেম্বর শেষে নতুন কোটিপতি সংখ্যা বেড়েছে ৩২১ জন।
তবে, বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনায় মানুষের আয় কমলেও কোটিপতি বাড়ার প্রবণতা সমাজে বৈষম্য তৈরি করছে। একদিকে, কিছু মানুষ গরিব হচ্ছে, অন্যদিকে বাড়ছে কোটিপতির সংখ্যা।
বিগত কয়েক বছরের আমানত ও ঋণ বিতরণের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জুন শেষে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ৯৯ হাজার ৯১৮ জন। অর্থাৎ গত তিন মাসে ব্যাংক খাতে নতুন কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে ৩২১ জন।
২০০৯ সালের জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ৪৯২ জন। ২০২১ সালের জুন শেষে এই সংখ্যা দাড়ায় ৯৯ হাজার ৯১৮ জনে। অর্থাৎ গত ১৩ বছরে ব্যাংক ব্যবস্থায় নতুন কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে ৭৮ হাজার ৪২৬ জন । এরমধ্যে করোনাকালের দেড় বছরেই নতুন করে কোটিপতি হয়েছেন ১৭ হাজার ২৯৩।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের মার্চে দেশে মহামারি করোনা সংক্রমণ যখন শুরু হয়, তখন ব্যাংকে কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৬২৫টি। এই বছরের জুনে এটি বেড়ে হয়েছে ৯৯ হাজার ৯১৮টি। অর্থাৎ এই পরিমাণ অ্যাকাউন্টে কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা হয়েছে। যদিও গত সোয়া বছরের করোনাকালে এর কয়েকগুণ মানুষ নতুন করে গরিব হয়েছে।
তবে দেশে বর্তমানে কোটিপতির প্রকৃত সংখ্যা কত, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও পরিসংখ্যান নেই। তবে ২০১৮ সালে সম্পদশালী বৃদ্ধির হার ও ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রক্ষেপণ ধরে ওয়েলথ-এক্স’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ৩ কোটি ডলার বা আড়াইশ’ কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিকদের সংখ্যা বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি হারে বাড়ছে।ওয়েলথ-এক্সের হিসাবে, ২০১৭ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে অতি ধনীর সংখ্যা বেড়েছে গড়ে ১৭ শতাংশ হারে। এ হার যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, ভারতসহ মোট ৭৫টি বড় অর্থনীতির দেশের চেয়ে বেশি।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই পরিসংখ্যান কোটিপতির প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করে না। বাস্তবে নতুন কোটিপতি বেড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। এই বৃদ্ধিকে সমাজে আয় বৈষম্যের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত বলে মনে করেন তারা। তারা বলছেন, দেশে কোটিপতির সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনি গরিবের সংখ্যাও বেড়েছে।