শিরোনাম:
পাইকগাছা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
বৃহস্পতিবার ● ২৩ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » কৃষি » কয়রার ঘেরে ঘেরে চিংড়ির মড়ক, দুঃশ্চিন্তায় চাষীরা
প্রথম পাতা » কৃষি » কয়রার ঘেরে ঘেরে চিংড়ির মড়ক, দুঃশ্চিন্তায় চাষীরা
২৫৯ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ২৩ জুন ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

কয়রার ঘেরে ঘেরে চিংড়ির মড়ক, দুঃশ্চিন্তায় চাষীরা

 অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনাঃ  জলবায়ুর পরিবর্তনে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অতিরিক্ত লবণাক্ততা ও অপুষ্ট পোনা ছাড়ার কারণে মৌসুমের শুরুতেই ‘সাদাসোনা’ খ্যাত বাংলাদেশর সর্ব দক্ষিণের জনপদ উপকূলীয় অঞ্চল কয়রায় বাগদা চিংড়ি ঘেরে মড়ক লাগায় চাষীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। খরচ তোলা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় তারা। এক মাস ধরে উপজেলার সাত ইউনিয়নের কমবেশি মৎস্য ঘেরে বাগদা চিংড়ি মারা যাচ্ছে।

জানা যায়, কয়রা উপজেলায় ৯ হাজার ২৪০ হেক্টর জমিতে চিংড়ি চাষ হয়েছে। এ উপজেলায় ঘেরের সংখ্যা ৫ হাজার  ৯০টি। এ উপজেলায় হেক্টর প্রতি ৫৭৯ কেজি চিংড়ি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এদিকে, চলতি চিংড়ি মৌসুমের শুরুতেই অধিকাংশ ঘেরে ভাইরাস দেখা দিয়েছে।

৬নং কয়রা গ্রামের বলাই কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, তেরো  বিঘা জমিতে প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ করে চিংড়ি চাষ করেছিলাম। মাছ গ্রেড হওয়ার আগেই ভাইরাস লেগে মাছে মড়ক লাগায় মাছ ধরতে পারিনি। আবারো বাগদার পোনা ছেড়েছি। কিন্তু হ্যাচারির খারাপ পোনা ছাড়ার কারণেই মনে হয় ঘেরে ভাইরাস লেগে মাছ মারা গেছে। বর্তমানে হ্যাচারির পোনার মান ভাল না। পোনার মান ঠিক রাখতে সরকারের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানান এই চাষী।

একাধিক মৎস্য চাষী বলেন, এ সমস্যা আমার একার না, এই এলাকার অধিকাংশ ঘেরের মাছ মরে গেছে। এই এলাকার অধিকাংশ মানুষ এই ঘেরের উপর নির্ভরশীল। ঘেরের আয় দিয়ে আমাদের চলতে হয়। ঘেরে আমরা যে হ্যাচারির বাগদার পোনা ছাড়ি তা অপুষ্ট। এই পোনার মান ভাল কী মন্দ তার উপর সরকারের কোনো নজরদারি নেই।

হ্যাচারি মালিকরা যা বাজারে বিক্রি করছে আমরা তাই কিনে এনে ঘেরে ছাড়ছি। অপুষ্ট রোগাক্রান্ত পোনার কারণে এই মড়ক লেগে থাকতে পারে। বিশেষজ্ঞরাই ভাল বলতে পারবেন। তাই পোনার বিষয়ে সরকারের উচিত হ্যাচারিগুলোর ওপর নজরদারি করা। চিংড়ি শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেন চাষিরা।

কয়রা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল হক বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে গত এক মাস ধরে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি পর্যন্ত ওঠানামা করছে। এ কারণে চিংড়ি ঘেরে কিছুটা মারা যাচ্ছে। এ ছাড়া চাষীদের ঘেরে নিম্নমানের পোনা ছাড়ার কারণেও মাছ মরে যাচ্ছে বলে ধারণা করছি।মারা যাওয়া চিংড়ি সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে।

প্রতিবেদন পেলে চিংড়ি মারা যাওয়ার সঠিক কারণ জানতে পারবে মৎস্য বিভাগ। চাষীদের পরামর্শ দিয়েছি, ঘেরের পানির তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে। তারা যখন ঘেরে পোনা ছাড়বে অবশ্যই যেন তা পকেট ঘেরে পরিচর্যা করে ছাড়ে। এই পরামর্শ মেনে চললে চিংড়ির মড়ক কমে আসবে। তবে মড়ক লাগায় চলতি অর্থবছরে চিংড়ি রপ্তানিতে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন এই মৎস্য কর্মকর্তা। ---তিনি বলেন, মৌসুমের শুরুতে ঘেরে ভাইরাস লাগলেও ভাইরাসের সংক্রমণের হার কিছুটা কমেছে। মাছ চাষীরা আবার নতুন করে পোনা ছাড়তে শুরু করেছেন। চাষীরা প্রাথমিকভাবে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন।





আর্কাইভ