শুক্রবার ● ২২ জুলাই ২০২২
প্রথম পাতা » বিবিধ » কয়রায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষকে পিটিয়ে জখমের অভিযোগ
কয়রায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষকে পিটিয়ে জখমের অভিযোগ
খুলনার কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্থানীয় মাদ্রাসা অধ্যক্ষকে পিটিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কয়রা উত্তরচক আমিনীয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ মাসুদুর রহমান কয়রা থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ সেটি গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ তার। পরে বাধ্য হয়ে তিনি খুলনা জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ দাখিল করেন। বর্তমানে ওই শিক্ষক প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ইউপি চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ ও এজাহারে তিনি উলেখ করেন, গত ১৮ জুলাই তিনি মাদ্রাসায় কর্মরত ছিলেন। এসময়ে সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলামের নেতৃত্বে স্থানীয় ইউনুসুর রহমান, মোঃ নিয়াজ হোসেন, মাসুদুর রহমান, মিলন হোসেন, জহুরুল ইসলাম, রিয়াল, আমিরুল, অমিত মন্ডল, রফিকুল গাজী, সাদিকসহ ১৫ থেকে ২০ জন তাকে জোর করে রুম থেকে বের করে নিয়ে আসে। পরে ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল ইসলাম তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। ঘটনাস্থলে ওই প্রতিষ্ঠানের সাবেক অধ্যক্ষ মোস্তফা আব্দুল মালেক এ কাজে সহযোগিতা করেন। এরপর তাকে সেখানেই ফেলে চোখে, ঘাড়ে, কানে পিঠে এলোপাতাড়ি মারপিট করে। পরে তাকে সেখান থেকে তুলে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে। সেখানেও তাকে বেদম মারপিট করে। এতে তার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং কানের পর্দা ফেটে যায়। সেখানে আটকে রেখে চেয়ারম্যান তাকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করতে বলেন। বিষয়টি তার পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে থানায় খবর দেয়া হলে কয়রা থানার এস আই মনিরুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তাকে উদ্ধার করে। প্রথমে তাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে, পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান এসএম বাহারুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসাটি আমার ইউনিয়নের মধ্যে, তবে সেখানে অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছেন পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। সে কারণে সেই ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে একটু মনোমালিন্য ছিল। এ ঘটনার জেরধরে কিছু লোকজন মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে আমার অফিসে নিয়ে এসেছিল, পরে পরিবারের লোকজন এসে তাকে নিয়ে গেছেন। এ ঘটনা নিয়ে তো থানা-পুলিশ হবার কথা নয়।
ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, থানা পুলিশ পুরো বিষয়টি সম্পর্কে অবগত রয়েছে। অথচ এত বড় ঘটনা নিয়ে থানায় অভিযোগ দাখিল করা হলেও সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করেননি ওসি। ওসি চেয়ারম্যানের পক্ষ নিয়ে বিষয়টি বসাবসির মধ্যদিয়ে মিটিয়ে ফেলার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। আমি একজন শিক্ষক অথচ আমাকে যেভাবে হয়রানি করা হলো তার কোন প্রতিকার পাবো না।
এ বিষয়ে কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এবিএমএস দোহা বলেন, ‘আমি ছুটিতে ছিলাম। এসে ঘটনাটি শুনেছি। তবে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। তিনি মামলা করলে অবশ্যই রেকর্ড হবে।’