মঙ্গলবার ● ১৭ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » প্রযুক্তি » মোংলা বন্দরে আউটার বারে ড্রেজিং করা নতুন চ্যানেল দিয়ে জাহাজ চলাচল শুরু
মোংলা বন্দরে আউটার বারে ড্রেজিং করা নতুন চ্যানেল দিয়ে জাহাজ চলাচল শুরু
মোঃএরশাদ হোসেন রনি, মোংলা
বর্তমান সরকার ও বন্দর কর্তৃপক্ষের নানামুখী যুগান্তকারী পদক্ষেপের ফলে
মোংলা এখন ক্রমশই উন্নতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতায় মোংলা বন্দরের আউটার বারে ড্রেজিংকৃত নতুন চ্যানেল দিয়ে জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। মোংলা বন্দরের এ্যাংকোরেজ এলাকায় ১০.৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিং এর উদ্দেশ্যে “মোংলা বন্দর চ্যানেলের আউটার বারে ড্রেজিং” শীর্ষক প্রকল্পটি মোট ৭১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা
প্রাক্কলিত ব্যয়ে একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। প্রকল্প অনুমোদনের পর আন্তর্জাতিক
দরপত্র আহবান করে হংকং রিভার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী লিমিটেড এবং চায়না সিভিল ইঞ্জি নিয়ারিং কনষ্ট্রাকশন কর্পোরেশনের সাথে ২০১৮ সালের ১৩ ডিসেম্বর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের পর হতে ঠিকাদার ড্রেজিং শুরু করে। ড্রেজিং এলাকাটি দুইটি সেকশনে বিভক্ত যার মধ্যে একটি সেকশন হিরণ পয়েন্ট হতে প্রায় ২০ কিলোমিটার দক্ষিণে উন্মূক্ত সাগরের মধ্যে এবং অপর সেকশন হিরণ পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত। সমুদ্রের মধ্যের সেকশনটি সম্পূর্ণ এবং হিরণ পয়েন্ট সংলগ্ন সেকশনটির প্রায় ৮৫% ড্রেজিং সমাপ্ত হওয়ায় ফেয়ারওয়ে বয়া হতে হিরণ পয়েন্ট পর্যন্ত সম্পূর্ণ চ্যানেলে ৮.৫ মিটার সিডি গভীরতা সম্পন্ন চ্যানেল সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য এই চ্যানেলটি বর্তমানে ব্যবহৃত চ্যানেলের পশ্চিমে বঙ্গবন্ধু চরের পাশ দিয়ে অবস্থিত। বর্তমানে বিদ্যমান চ্যানেলে ফেয়ারওয়ে বয়া হতে হিরণ পয়েন্ট পর্যন্ত কিছু স্থানে সর্বনিম্ন ৬.৫ মিটার সিডি গভীরতা থাকায় বেশি ড্রাফটের জাহাজ বন্দরে আসতে পারত না। অথচ হিরণ পয়েন্টের পর হতে হারবাড়িয়া এ্যাংকোরেজ পর্যন্ত ৮.৫ মিটার সিডি এর অধিক গভীরতা রয়েছে এবং কিছু এ্যাংকোরেজে ১০.৫ মিটারের অধিক ড্রাফটের জাহাজ বার্থিং করার জন্য প্রয়োজনীয় গভীরতা আছে। শুধুমাত্র আউটার বারের সীমাবদ্ধতার জন্য
বন্দরের এ্যাংকোরেজে বেশি ড্রাফটের জাহাজ আনা যেত না। এছাড়া বর্তমান চ্যানেলটি বেশ আঁকাবাকা। আউটার বারে ৮.৫ মিটার সিডি গভীরতায় ড্রেজিং এর ফলে জোয়ারের সময় বন্দরে এখন ১০.৫ মি. ড্রাফটের জাহাজ আসার সুবিধা সৃষ্টি হয়েছে। নতুন ড্রেজিংকৃত চ্যানেলে নেভিগেশন বয়া স্থাপন করার পর মঙ্গলবার ১৭ নভেম্বর থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। নতুন চ্যানেলটি অপেক্ষাকৃত সোজা হওয়ায় সেখান দিয়ে বন্দরে জাহাজ আসতে সময় কম লাগছে এবং জাহাজ নিরাপদে আসতে পারছে। এর ফলে বন্দরে জাহাজের সংখ্যা ও রাজস্ব অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯৫% এবং অবশিষ্ট কাজ প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
জানতে চাইলে মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, বন্দরের আউটার বারে ড্রেজিংয়ের কারনে অনায়াসেই বন্দরে বেশি ড্রাফটের জাহাজ আসতে পারবে। বন্দরের উন্নয়নে বাকী মেগা প্রকল্পের কাজগুলোও দ্রত শেষ হবে বলে জানান তিনি। আউটার বারে ড্রেজিংয়ের কারনে মোংলা বন্দর ভিশন - ২০২১ বাস্তবায়নে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছে বন্দর ব্যবহারকারীরা।