শিরোনাম:
পাইকগাছা, শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

SW News24
বৃহস্পতিবার ● ৩০ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » অপরাধ » প্রেমিকার চোখে ‘নায়ক’ সাজতেই শিক্ষকের মাথায় আঘাত
প্রথম পাতা » অপরাধ » প্রেমিকার চোখে ‘নায়ক’ সাজতেই শিক্ষকের মাথায় আঘাত
২৩৫ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ৩০ জুন ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

প্রেমিকার চোখে ‘নায়ক’ সাজতেই শিক্ষকের মাথায় আঘাত

লের অন্যান্য শিক্ষার্থী এবং এক প্রেমিকার সামনে ‘হিরোইজম’ দেখানোর জন্যই আশুলিয়ার হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্ট্যাম্প দিয়ে শিক্ষকের মাথায় আঘাত করে গুরুতর আহত করে আশরাফুল আহসান জিতু। এ সময় ছাত্রীদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলছিল। খেলার দায়িত্ব পালন করছিলেন শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার। এ ঘটনায় গাজিপুরের শ্রীপুর এলাকা থেকে জিতুকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

খন্দকার আল মঈন জানান, গত ২৫ জুন আশুলিয়ার হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রীদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে আঘাত করে গুরুতরভাবে আহত করে ওই প্রতিষ্ঠানেরই শিক্ষার্থী আশরাফুল আহসান জিতু। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭ জুন সোমবার ভোরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

আল মঈন আরও জানান, এই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নম্বর-৮৯। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে বুধবার সন্ধ্যায় র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-১ এবং র‍্যাব-৪ এর যৌথ অভিযানে গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে আশরাফুল আহসান জিতু ওরফে জিতু দাদাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার প্রসঙ্গে খন্দকার আল মঈন বলেন, তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে ২০১৩ সালে আশুলিয়ার হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ওই কলেজের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের স্কুল ইউনিফর্ম, চুল-কাটা, ধুমপান করা ও ইভটিজিংসহ বিভিন্ন নিয়ম-শৃঙ্খলা ভঙ্গজনিত বিষয়ে প্রেষণা এবং পরামর্শ দিতেন। এছাড়াও, তিনি স্কুল ও কলেজের খেলাধুলা পরিচালনা করাসহ শিক্ষার্থীদের সুপরামর্শ, মোটিভেশন ও কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে সৃজনশীলতা বিকাশে ভূমিকা রাখতেন।

জিতু প্রসঙ্গে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, জিতু ওই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্র। সে শিক্ষা জীবনে বিরতি নিয়ে প্রথমে স্কুলে ভর্তি হয়ে পরে মাদ্রাসা ও সর্বশেষ পুনরায় স্কুলে ভর্তি হয়। সে স্কুলে সকলের কাছে একজন উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, মারামারিসহ স্কুলের পরিবেশ নষ্টের জন্য তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

আল মঈন আরও বলেন, স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ও স্কুল চলাকালীন ছাত্রীদের ইভটিজিং ও বিরক্ত করত, স্কুল প্রাঙ্গণে সকলের সামনে ধুমপান, স্কুল ইউনিফর্ম ব্যতীত স্কুলে আসা-যাওয়া, মোটরসাইকেল নিয়ে বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করত। সে তার নেতৃত্বে এলাকায় একটি কিশোর গ্যাং গড়ে তোলে। পাশাপাশি গ্যাং সদস্যদের নিয়ে মাইক্রোবাসে করে যত্রতত্র আধিপত্য বিস্তার করত। পরিবারের কাছে তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলে জিতু তার গ্যাং নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হতো ও বিভিন্ন সময় এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির লক্ষ্যে হামলা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে শোডাউন দিত।

জিতুকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, ঘটনার কয়েক দিন আগে ওই স্কুলের এক ছাত্রীর সঙ্গে জিতুকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। তখন উৎপল কুমার সরকার অযাচিত ঘোরাফেরা থেকে জিতুকে বিরত থাকতে বলেন। তিনি বলেন, এই ঘটনায় জিতু তার শিক্ষকের ওপর ক্ষুব্ধ হয় এবং ওই ছাত্রীর সামনে নিজের হিরোইজম দেখানোর জন্য উৎপল কুমার সরকারের ওপর হামলার পরিকল্পনা করে।

আল মঈন আরও বলেন, জিতু পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৫ জুন ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প নিয়ে স্কুলে আসে এবং তা শ্রেণি কক্ষের পেছনে লুকিয়ে রাখে এবং সেই শিক্ষককে আঘাত করার সুযোগ খুঁজতে থাকে। পরবর্তীতে কলেজ মাঠে ছাত্রীদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালীন উৎপল কুমারকে মাঠের এক কোনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তার কাছে থাকা ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে বেধড়ক আঘাত করতে থাকে। প্রথমে পেছন থেকে মাথায় আঘাত করে এবং পরবর্তীতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতরভাবে জখম করে।

এ ঘটনার পর জিতু এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করে জানিয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, জিতু সন্ধ্যা পর্যন্ত এলাকায় অবস্থান করলেও পরবর্তীতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় সে এলাকা ত্যাগ করে। প্রথমে বাসে করে মানিকগঞ্জে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে যায়। পরদিন সে তার অবস্থান পরিবর্তন করে আরিচা ফেরিঘাটে পৌঁছায় এবং ট্রলারে করে নদী পার হয়ে পাবনার আতাইকুলাতে আত্মগোপন করে। পরদিন ভোরে সে আবারও তার অবস্থান পরিবর্তন করার জন্য আতাইকুলা থেকে বাসে করে কাজিরহাট লঞ্চ টার্মিনালে এসে লঞ্চে করে আরিচাঘাট পৌঁছায় এবং সেখান থেকে গাজীপুরের শ্রীপুরের ধনুয়া গ্রামে আত্মগোপনে ছিলেন। ---গ্রেপ্তার জিতুর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।





অপরাধ এর আরও খবর

পাইকগাছার লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান ও মহিলা ইউপি সদস্যের পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ পাইকগাছার লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান ও মহিলা ইউপি সদস্যের পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ
নকলে বাধা, শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করলো ছাত্রীর বাবা ! নকলে বাধা, শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করলো ছাত্রীর বাবা !
আশাশুনি প্রেসক্লাবে জীবনের নিরাপত্তার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন আশাশুনি প্রেসক্লাবে জীবনের নিরাপত্তার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন
পাইকগাছা শিক্ষক লাঞ্চিতের ঘটনায় শিক্ষকদের  বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা পাইকগাছা শিক্ষক লাঞ্চিতের ঘটনায় শিক্ষকদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা
পাইকগাছায় সভাপতি কতৃক প্রধান শিক্ষককে কান ধরে অফিস থেকে বের করে দেয়ায় ইউএনও দপ্তরে অভিযোগ পাইকগাছায় সভাপতি কতৃক প্রধান শিক্ষককে কান ধরে অফিস থেকে বের করে দেয়ায় ইউএনও দপ্তরে অভিযোগ
নড়াইলে চিত্রা নদী থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার নড়াইলে চিত্রা নদী থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার
জবি অধ্যাপক পেটানো মামলায় কয়রায় সেই চেয়ারম্যান কারাগারে জবি অধ্যাপক পেটানো মামলায় কয়রায় সেই চেয়ারম্যান কারাগারে
নড়াইলের কালিয়ায় বালু উত্তোলন বন্ধসহ ইজারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন নড়াইলের কালিয়ায় বালু উত্তোলন বন্ধসহ ইজারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন
নড়াইলে গ্রামপুলিশকে কুপিয়ে হত্যা নড়াইলে গ্রামপুলিশকে কুপিয়ে হত্যা
বিএনপি হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে বিএনপি হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)