শিরোনাম:
পাইকগাছা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
শুক্রবার ● ১৫ জুলাই ২০২২
প্রথম পাতা » উপকূল » শ্যামনগরে খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভেঙ্গে ৫ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
প্রথম পাতা » উপকূল » শ্যামনগরে খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভেঙ্গে ৫ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
৩৫২ বার পঠিত
শুক্রবার ● ১৫ জুলাই ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

শ্যামনগরে খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভেঙ্গে ৫ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে খোলপেটুয়া নদীর বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দূর্গাবাটি এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ভাঙ্গন পয়েন্টের আশেপাশের অন্তত পাঁচটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে হাজারো চিংড়ি ঘের।

খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারের তোড়ে বৃহস্পতিবার ১৪ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দূর্গাবাটি এলাকায় আগেই ভাঙ্গন ধরা পাউবো’র বেড়িবাঁধের ১৫০-১৬০ ফুট অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে করে ভাঙ্গন পয়েন্ট দিয়ে নদীর পানি ঢুকে ওই ইউনিয়নের চারটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। শুক্রবার ১৫ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নদীতে ফের জোয়ার শুরু হলে উপজেলার পশ্চিম পোড়াকাটলা, পশ্চিম ও পূর্ব দূর্গাবাটি, আড়পাঙ্গাশিয়া, বুড়িগোয়ালিনীর আংশিকসহ কয়েকটি গ্রাম চোখের সামনেই প্লাবিত হয়। নদীর লোনা পানিতে ওই এলাকার প্রায় সাড়ে ৩ হাজার বাগদা চিংড়ির ঘের প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার ১৪ জুলাই বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের দূর্গাবাটির জীর্ণশীর্ণ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দেয়। যা রাতে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন প্রবল স্রোতে  লোকালয়ে নদীর পানি প্রবেশ করছে। এইভাবে নদীর পানি ঢোকা অব্যহত থাকলে রাতের জোয়ারে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের আরো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়বে।

দুর্গাবাটি গ্রামের নিলুৎপল মন্ডল জানান, শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম দুর্গাবাটি এলাকায় সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-১ এর আওতাধীন ৫ নং পোল্ডারের উপকূল রক্ষা বাঁধের প্রায় দেড়শ ফুটেরও বেশী এলাকা জুড়ে বেড়িবাঁধের অর্ধেক অংশ খোলপেটুয়া নদীতে ধ্বসে পড়ে। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে পশ্চিম দুর্গাবাটি এলাকার সাইক্লোন শেল্টার সংলগ্ন অংশের ওই বাঁধের এই ধ্বস দেখা দেয়। এসময় সম্পূর্ন বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকায় আশপাশের এলাকাজুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ভাঙ্গন কবলিত অংশে মাটি ফেলার কাজ শুরু করে। খবর পেয়ে সন্ধ্যা সাতটার দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। কিন্তু তাৎক্ষনিক বাঁধ রক্ষার কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে রাতের জোয়ারে ওই বেড়িবাঁধ সম্পূর্ন ভেঙ্গে যায়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, পাউবো’র বেড়িবাঁধের ওই অংশে সংস্কার কাজের সময় গুনগত মান রক্ষা করা হয়নি। যে কারণে বাঁধের অর্ধেক দেবে যাওয়া চরের উপরিভাগের বাঁধ নদীতে ধসে গেছে। দ্রুত রিং বাঁধ নির্মাণ করা না গেলে মধ্য রাতের জোয়ারে তদসংলগ্ন আরো ৫/৬টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার শংকা রয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দুর্গাবাটির বিভিন্ন অংশে কোটি কোটি টাকার কাজ করা হলেও ভাঙনকৃত অংশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাটির কোনো কাজ করা হয়নি। এছাড়া প্রভাবশালীরা পাশের নদী হতে   বালু উত্তোলন করায় চর দেবে গেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কেউ তদারকি করেননি।

বুুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে রিং বাঁধ নির্মানের কাজ শুরু করেছে। তবে দুপুরের জোয়ারে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। জোয়ার নামতে নামতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। সন্ধ্যায় কাজ করা কঠিন হবে। তিনি অভিযোগ করেন পাশের খোলপেটুয়া নদী থেকে অবৈধভাবে প্রভাবশালীরা বালু উত্তোলন করায় চর দেবে যেয়ে পাশ্ববর্তি অংশের বাঁধে ভাঙ্গন লেগেছে।

পাউবোর সাব ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়র মোঃ জাকির হোসেন জানান, ভাঙ্গনকবলিত বাঁধ সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বস্তা, দঁড়ি, বাঁশ, পেরেক সরবরাহ করা হয়েছে। তাছাড়া গতকাল ১৩০ ফুট এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিলেও রাতে ১৫০-১৬০ ফুট নদীগর্ভে চলে গেছে। সেক্ষেত্রে ৫৫০ ফুট এলাকায় পাইলিং করার জন্য আমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। দুপুরের জোয়ারে সেটি করা সম্ভব না হলেও আমরা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় বিকালে পাইলিং এর কাজ শুরু করবো।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে বাঁধ খাটাভাবে নদীতে ধসে পড়ে। রাতের জোয়ারে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দূর্গাবাটি গ্রামসহ একাধিক গ্রাম বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়ে গেছে। খরস্রোত--- খোলপেটুয়া নদীর দূর্গাবাটিতে ৪০ ফুটের বেশী ভাঙ্গনে দূর্গাবাটি, আড়পাঙাশিয়া, পোড়াকাটলার মাছের ঘের, ফসলী জমি প্লাবিত হয়ে ঘরবাড়িতে পানি ঢুকছে। ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেছি। ভাঙ্গন পয়েন্টে পাইলিং করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তাৎক্ষণিক বালুর বস্তা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ভাটায় কাজ শুরু করা হবে।





উপকূল এর আরও খবর

উপকূলের সংকট নিরসনে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান উপকূলের সংকট নিরসনে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান
বঙ্গোপসাগরে বৈরী আবহাওয়ায় চারদিন যাবৎ;মাছধরা বন্ধ দুবলারচরে হাজার হাজার জেলে অলস সময় পার করছেন বঙ্গোপসাগরে বৈরী আবহাওয়ায় চারদিন যাবৎ;মাছধরা বন্ধ দুবলারচরে হাজার হাজার জেলে অলস সময় পার করছেন
পাইকগাছায় উপকূল দিবস পালিত পাইকগাছায় উপকূল দিবস পালিত
১২ নভেম্বর উপকূল দিবস ঘোষিত হোক ১২ নভেম্বর উপকূল দিবস ঘোষিত হোক
উপকূলের সংকট নিরসনে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন উপকূলের সংকট নিরসনে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন
বঙ্গোপসাগরে মাছ আহরণে জন্য পাইকগাছার জেলে পল্লীতে ট্রলার তৈরির ধুম বঙ্গোপসাগরে মাছ আহরণে জন্য পাইকগাছার জেলে পল্লীতে ট্রলার তৈরির ধুম
পাইকগাছা শিবসা নদীর চরে আড়াই মন ওজনের শুশুক উদ্ধার পাইকগাছা শিবসা নদীর চরে আড়াই মন ওজনের শুশুক উদ্ধার
উপকূলীয় অঞ্চলকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করার দাবী উপকূলীয় অঞ্চলকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করার দাবী
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত খুলনার উপকূলীয় এলাকা পরিদর্শন করলেন বেলজিয়ামের রানি জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত খুলনার উপকূলীয় এলাকা পরিদর্শন করলেন বেলজিয়ামের রানি
শ্যামনগরে উপকূল দিবসে উপকূলের মানুষের বাঁচার দাবী শ্যামনগরে উপকূল দিবসে উপকূলের মানুষের বাঁচার দাবী

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)