শনিবার ● ৩০ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » মৎস্য আড়তের বড় অংশ চলে গেছে কাশিমনগর ধ্বংস হতে যাচ্ছে কপিলমুনি বাজার!
মৎস্য আড়তের বড় অংশ চলে গেছে কাশিমনগর ধ্বংস হতে যাচ্ছে কপিলমুনি বাজার!
এম আজাদ হোসেন, কপিলমুনি ০
প্রতিকূল পরিবেশ, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ড থেকে শুরু করে নানা প্রতিবন্ধকতায় ধ্বংস হতে চলেছে দক্ষিণ খুলনার অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র কপিলমুনি। ইতোমধ্যে বাজারের মাছ ব্যবসায়ীদের একাংশ চলে গেছে পার্শ¦বর্তী কাশিমনগর বাজারে। অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। সচেতন এলাকাবাসী সামগ্রীক কপিলমুনি রক্ষায় বাজারের প্রতি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানাযায়, গত কয়েক বছর কপিলমুনির হাট ইজারা দর প্রতিদ্বন্দ্বীতা অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় ইজারার টাকা উঠাতে বহুবিধ খড়গ চাপানো হয়েছে ব্যবসায়ীদের উপর। এতে করে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে আগত পাইকাররা ব্যবসায়ীক মোকাম পরিবর্তনে শুরু করেছিল নিজেদের মধ্যে নানান আলোচনা। এরই মধ্যে কপোতাক্ষ খননের মাটি বাজার অভ্যন্তরে ফেলায় চলতি বর্ষা মৌসুমে অতি বৃষ্টির পানি নিষ্কাষিত হতে না পেরে বাজারের মধ্যে তৈরী হয় এক বিশ্রী পরিবেশ। এক দিকে পঁচা পানি, অন্যদিকে দূর্গন্ধময় কাঁদায় বিক্রেতাদের পাশাপাশি ক্রেতা সাধারণের দূর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। অন্যদিকে বাজার ইজারার টাকা উঠাতে ইজারাদারদের স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানামুখি চাপে ব্যবসায়ীদের মধ্যেও চেপে বসে বাজার ছেড়ে অন্যত্রে যাওয়ার পরিকল্পনা। সে অনুযায়ী ১৫ জুলাই কপিলমুনি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী কাশিমনগর বাজারে ১৬টি আড়ৎদার নতুন করে ব্যবসা শুরু করেছেন। এদিকে সাধারণ ব্যবসায়ীরা বলছেন, মৎস্য আড়তের একটি বড় অংশ কপিলমুনি থেকে চলে যাওয়ায় বাজারটিতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রি কমে গেছে।
সূত্রের দাবী, নানাবিধ চাপ সহ্য করতে না পেরে পান ব্যবসায়ীরাও সেখানে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। এমনটা চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে বাণিজ্যিক জৌলুশ হারাবে ১৩৩৯ সনে রায় সাহেব কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী কপিলমুনি বাজার (বিনোদগঞ্জ)। আড়ৎদার রাজ্জাক বিশ্বাস বলেন, কপিলমুনিতে মৎস্য আড়ৎ ব্যবসার অনুকূল পরিবেশ ছিল না। কিন্তু কাশিমনগর বাজারে প্রধান সড়কের পাশে ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় মনোরম পরিবেশে আড়ৎ স্থাপন করার পর থেকে এখানে খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, আঠারোমাইল, সাগরদাড়ী, চিংড়ি, কেশবপুর, মনিরামপুর, ভাল্লুকঘরসহ দূর-দুরান্ত থেকে পাইকারী ক্রেতারা মাছ কিনতে আসছেন। ফলে আমাদের ব্যবসা ভাল হচ্ছে।
কপিলমুনি এলাকার মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী মেসার্স বাঁধন ফিস কালচারের মালিক এম আজাদ হোসেন বলেন, অধিকাংশ মৎস্য আড়ৎ কপিলমুনি বাজারে থাকাকালীন আমাদের নিকট থেকে ইজারাদার বিভুতি মিশ্র কর্তৃক শতকারা ৫ টাকা ও আড়ৎদারা ৪ টাকা সর্বমোট ৯ টাকা ইজারা নেওয়া হতো। বর্তমানে কাশিমনগর বাজারে মৎস্য আড়ৎ স্থাপনের পর আড়ৎদাররা সাদা মাছ শতকারা ৩ টাকা ও চিংড়ি মাছ শতকারা ২ ইজারা নিচ্ছেন। তাতে অত্র এলাকার ঘের মালিক ও মাছ ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন।
এ বিষয়ে কপিলমুনি হাট ও বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কওছার আলী জোয়ার্দার বলেন, মৎস্য আড়তের চলতি সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে ইজারাদার বিভূতি মিশ্র ও আড়ৎদারদের আমি ডেকেছিলাম আড়ৎদাররা আমার ডাকে আসলেও ইজারাদার বিভূতি মিশ্র আসেনি। ইজারাদারের এক ঘেয়মীপনার কারণে বাজার ভেঙ্গে যাচ্ছে। তবে মৎস্য আড়তের এ সমস্যাসহ কপিলমুনি বাজার রক্ষার জন্য যা যা করার আমি করবো।