মঙ্গলবার ● ২৭ অক্টোবর ২০১৫
প্রথম পাতা » সর্বশেষ » কপিলমুনিতে বাল্য বিবাহ হচ্ছেই, প্রশাসনিক মনিটরিং নেই
কপিলমুনিতে বাল্য বিবাহ হচ্ছেই, প্রশাসনিক মনিটরিং নেই
কপিলমুনিতে বাল্য বিবাহ হচ্ছেই, প্রশাসনিক মনিটরিং নেই
এম আজাদ হোসেন, কপিলমুনি ঃ
কপিলমুনিতে বাল্য বিবাহের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোন ভাবেই বাল্য বিবাহের হার কমানো যাচ্ছে না। এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে অধিক হারে বাল্য বিবাহের ঘটনা ঘটছে। কালে ভাদ্রে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বাল্য বিবাহে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জেল জরিমানা হলেও এ ঘটনা নিয়ন্ত্রনে আসছে না। বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে মেয়েদের বিয়ের বয়স সর্ব নি¤œ আঠারো বছর এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে একুশ বছর হিসাবে সরকার বিবাহ আইন প্রনয়ন করলেও এর প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে প্রতিনিয়ত এ আইনকে অবমাননা করা হচ্ছে। চৌদ্দ থেকে ষোল বছরের কিশোরীদের বেলায় হরহামেশাই বিয়ের ঘটনা ঘটছে। কোন কোন পরিবারে সপ্তম শ্রেনী কিম্বা অষ্টম শ্রেনীতে কিশোরীদেরকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে বিয়ের পিড়িতে বসানো হচ্ছে। অন্য দিকে এলাকায় একুশ বছরের নিচে বহু কিশোরদের বিয়ে দেয়া হচ্ছে। কপিলমুনির প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, ও শিক্ষিত পরিবারে বাল্য বিবাহের ঘটনা কম হলেও নি¤œ মধ্যবিত্ত গরীব ও অধিকার বঞ্চিত নি¤œ আয়ের লোকদের ভিতরে বাল্য বিবাহের প্রবনতা অত্যান্ত বেশি। কপিলমুনি মেহেরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকা রহিমা আখতার শম্পা বলেন, দারিদ্রতা, অজ্ঞতা, ধর্মীয় গোড়ামী ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা বাল্য বিবাহের মুল কারণ। তা ছাড়া ফতোয়াবাজদের ফতোয়ার ফাঁদে পড়ে অনেকে তাদের কন্যা ও পুত্রকে অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। তিনি বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে বলেন, বাল্য বিবাহের ফলে প্রসূতি মা ও সন্তানের মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশী থাকে। তা ছাড়া গর্ববতী মা রক্তশুন্যতা ও পুষ্টিহীনতার কারনে নানা রোগে অক্রান্ত হতে পারে। অন্যদিকে শিশুর দৈহিক বৃদ্ধিও বিপর্যয়সহ পুষ্টিহীনতায় ভুগতে পারে। ব্যাপক তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, এক শ্রেনীর অসাধু বিবাহ রেজিষ্টার ও তাদের এজেন্টদের কারসাজিতে শিশু ও কিশোরীদের বিবাহকার্য সম্পন্ন করা হয়। তবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ ব্যাপারে বাস্তব ও বহুমুখি পদক্ষেপ নিলে এ অঞ্চলে বাল্য বিবাহের হার বহুলাংশে হ্রাস পাবে। তাছাড়া ইউনিয়ন ভিত্তিক বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ কমিটির নিয়মিত মনিটরিং ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারলে কপিলমুনি অঞ্চলে বাল্য বিবাহ রোধ করা সম্ভব হবে বলে অভিজ্ঞজনরা জানিয়েছেন। আর এটা না করলে বাল্য বিবাহের বিরুপ প্রতিক্রিয়ায় প্রভাবিত হবে এ অঞ্চলের সমাজ ও সংসার।