শনিবার ● ৮ জুলাই ২০২৩
প্রথম পাতা » আঞ্চলিক » কেশবপুরে হরিহর নদের উপর নির্মানাধীন ব্রিজের কাজ ৩ বছরেও শেষ হয়নি
কেশবপুরে হরিহর নদের উপর নির্মানাধীন ব্রিজের কাজ ৩ বছরেও শেষ হয়নি
এম. আব্দুল করিম, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের কেশবপুরে রামন্দ্রপুর ঠাকুরবাড়ি চারের মাথায় হরিহর নদের উপর শুরু হওয়া ব্রীজের নির্মান কাজ তিন বছরেও শেষ হয়নি। ব্রিজের নির্মাণ কাজ ৯৫ ভাগ শেষ হলেও শেষ হয়নি ব্রিজের তলদেশে বাঁধের মাটি অপসারনের কাজ। যার ফলে বর্ষার শুরুতেই নদীর উপচে পড়া পানিতে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসি।
জানা গেছে, কেশবপুর সদর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর ঠাকুর পাড়া ও ব্রহ্মকাটি শেখ পাড়ার ভেতর দিয়ে হরিহর নদীর চারের মাথা হয়ে একটি সড়ক যশোর-সাতক্ষীরা সড়কে মিশেছে। এ সড়ক দিয়ে স্কুল-কলেজ পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীসহ শত শত মানুষ চলাচল করে থাকে। মাঝপথে হরিহর নদীর চারের মাথায় ব্রিজ না থাকায় মধ্যকুল, রামচন্দ্রপুর, ব্যাসডাঙ্গা, হাবাসপোলসহ ১০/১৫ গ্রামের মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাকো দিয়ে চলাচল করতে হতো। শিশুসহ মুমূর্ষু রোগীদের নিয়ে ৬ থেকে ৭ কিলোমিটার ঘুরে কেশবপুরে আসতে হতো। এই দুর্ভোগ লাঘবে ১৯৯৮ সালে পাকা রাস্তাসহ হরিহর নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণে এলাকার দীপক কুমার চক্রবর্ত্তী, শাহীনুর রহমানসহ শতাধিক লোকের স্বক্ষরিত একটি আবেদন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী প্রয়াত এএসএইচকে সাদেক এমপি‘র কাছে দেয়া হয়। প্রয়াত এএসএইচকে সাদেকের আশু হস্তক্ষেপে ব্রিজটির প্রাক্কলনে ৩০ লাখ ২৯ হাজার ৯২ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। পরবর্তীতে কম খরচে ব্রিজটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু প্রকল্পটি ফাইলবন্দী হয়ে পড়ে থাকে।
দীর্ঘ ১৬ বছর পর এএসএইচকে সাদেক পতœী ইসমাত আরা সাদেক আওয়ামী লীগ সরকারের জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী হলে তার কাছে পুনরায় ওই স্থানে ব্রিজ নির্মাণে আবেদন করা হয়। তার হস্তক্ষেপে ব্রিজটি নির্মাণে ৪ কোটি ৩৩ লাখ ৯৭ হাজার ৬৭৬. ১৫ টাকার একটি প্রাক্কলন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে অনুমোদিক হয়। কিন্তু ব্রিজের অ্যাপ্রোচে সরকারি জায়গা না থাকায় এর নির্মাণ কাজ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। এ সময় এলাকাবাসির পক্ষে দীপক কুমার চক্রবর্ত্তী, স্বপন কুমার চক্রবর্ত্তী, প্রবোধ কুমার চক্রবর্ত্তী ও স্বপন কুমার চক্রবর্ত্তী ব্রিজের অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণে তাদের পৈত্রিক জমি সরকারের নামে রেজিস্ট্রি করে দিলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কেশবপুর উপজেলায় হরিহর নদীর ওপর ৫৭ মিটার ব্রিজ ও রামচন্দ্রপুর মধ্যকুল মহিলা আলিয়া মাদ্রাসা হতে ঠাকুর বাড়ি চারের মাথা সড়ক নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৪ হাজার ৩২১.৩৩ টাকা চুক্তিমূল্যে ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর কাজ শুরু করে ২০২২ সালের ১৬ মে সমাপ্ত করার শর্তে কাজটি পান যশোরের ঠিকাদার আনন্দ ঘোষ। কিন্তু ঠিকাদারের সময় ক্ষেপণের কারণে দীর্ঘ ৩ বছরেও শেষ হয়নি ব্রিজের নির্মাণ কাজ।
এলাকার দীপক কুমার চক্রবর্ত্তী অভিযোগ করেন, দীর্ঘ ৩৬ বছর জনপ্রতিনিধি ও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ধরনাসহ নিজের জমি ব্রিজের অনুকুলে সরকারের নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়ার পর ব্রিজটি বরাদ্দ হয়। কিন্তু ৩ বছরেও কাজটি শেষ হয়নি। ব্রিজটি নির্মাণকালে নদীর দু‘পাশে যে মাটির বাঁধ দেয়া হয়েছিল তাও অপসারণ করা হয়নি। মাটি অপসারণ না করলে ভারী বর্ষণে নদীর উপচে পড়া পানিতে এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে। ঠিকাদার আনন্দ ঘোষ বলেন, ২ বছরে কাজ শেষ না হওয়ায় কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এখন ব্রিজের দু‘পাশে অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ চলছে। এখনও অনেক কাজ বাকি। কাজ শেষ হওয়ার আগে নদীর তলদেশের মাটি অপসারণ করা হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম মোল্যা বলেন, বিদ্যুতের খুটি সরানোর জন্যে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসকে পত্র দেয়া হয়েছে। ঠিকাদারকে কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।