শিরোনাম:
পাইকগাছা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
রবিবার ● ২৮ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » কৃষি » তালায় অর্জিত হয়নি আউশ চাষের লক্ষ্যমাত্রা
প্রথম পাতা » কৃষি » তালায় অর্জিত হয়নি আউশ চাষের লক্ষ্যমাত্রা
৫০৩ বার পঠিত
রবিবার ● ২৮ আগস্ট ২০১৬
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

তালায় অর্জিত হয়নি আউশ চাষের লক্ষ্যমাত্রা

---

ইলিয়াস হোসেন, তালা ঃ
তালা উপজেলায় কৃষকদের আউশ ধান চাষ সম্প্রসারণে সরকারী প্রণোদনা দেয়া সত্বেও চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম জমিতে আউশ আবাদ হয়েছে। এতে করে সরকারী উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে।
এলাকাবাসী ও প্রণোদনা সুবিধা প্রাপ্ত বেশ কয়েকজন কৃষকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, প্রকৃত কৃষক ছাড়া ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের চাপে অনেকে সরকারী প্রণোদনা পেয়েছেন। ভূয়াভাবে নাম দিয়ে এ সুবিধা গ্রহণ করেছেন এমনও অভিযোগ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ।
উপজেলা কৃষি অফিসের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, চলতি আউশ মৌসুমে কৃষকদের প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকদের অগ্রাধিকার তালিকা প্রস্তুতের মাধ্যমে ১ হাজার ৮০ জনকে সরকারী প্রণোদনার আওতায় আনা হয়। এরমধ্যে ৫’শ ৩০ জনকে উফসী আউশ এবং ৫’শ ৫০ জনকে নেরিকা আউশ ধান চাষের জন্য প্রণোদনা দেয়া হয়। প্রতিজন কৃষককে ১ বিঘা জমি চাষ করতে নেরিকা জাতের ধান বীজ ১০ কেজি, উফসী জাতের ৫ কেজি, ইউরিয়া ২০ কেজি, ডিএপি ১০ কেজি, এমওপি (পটাশ) ১০ কেজি এবং নেরিকা ধান চাষে কৃষক প্রতি সেচের জন্য নগদ ৮’শ টাকা ও উফসী জাতের জন্য ৪’শ টাকা মোবাইল বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করা হয়। সবমিলিয়ে নেরিকা ধান বীজ প্রাপ্ত কৃষক প্রতি ১’হাজার ৭’শ ৫০ টাকা এবং উফসী জাতের কৃষক প্রতি ১ হাজার ৩’শ ৫০ টাকা হিসেবে সর্বসাকুল্যে গোটা উপজেলায় ১ হাজার ৮০ জন কৃষককে ১৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকার প্রণোদনা সুবিধা দেয়া হয়।
উপজেলা কৃষি অফিস চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৬’শ ৪০ হেক্টর জমিতে আউশ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও অর্জিত হয়েছে অর্ধেকের কম এমন অভিযোগ প্রকৃত কৃষকদের। এসব বিষয়ে উপজেলার কয়েকটি গ্রামে তথ্যানুসন্ধান চালিয়ে এবং প্রণোদনা প্রাপ্ত কৃষকদের সঙ্গে আলাপ করে জানাগেছে অধিকাংশ কৃষক প্রণোদনা ধান বীজ সার ও সেচের জন্য নগদ টাকা পেয়েছেন।
কিন্তু পাওয়ার পর তা বিক্রি করে দিয়েছে। অনেকে মাছ বা হাস মুরগীর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেছেন এমনও অভিযোগ উঠেছে। প্রণোদনা তালিকা অনুযায়ী নেরিকা ধান বীজ সার ও নগদ টাকা প্রাপ্ত কুমিরা গ্রামের কৃষক সেকেন্দার আলী মোল্ল্যা চাষ না করে মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেছেন বলে এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন। একই গ্রামের কওসার আলী আদৌ আউশ ধান চাষ করেননি। অভয়তলা গ্রামের ইদ্রিস আলী ৫ কাঠা জমিতে চাষ করেছেন বলে জানা যায়। সরুলিয়া ইউনিয়নের পুটিয়াখালী গ্রামের জাতীয় পার্টির নেতা সিরাজুল মল্লিক, যুগিপুকুরিয়া গ্রামের তকিম সরদার, রাজেন্দ্রপুর গ্রামের অশোক ঘোষ, ভারসা গ্রামের ফারুক হোসেন সহ অন্তত ২০/২৫ জনের সঙ্গে কথা হলে তারা কেউই আউশ ধান করেননি বলে জানান। খোজ খবর নিয়ে আরও জানা গেছে, শাকদাহ গ্রামের সতীশ দাশের দুই ছেলে অমল ও পরিমল, কুমিরা ইউনিয়নের জগদানন্দকাটি গ্রামের মুনতাজ আলীর দুই ছেলে আবুল কাশেম ও আবুল হোসেন, কুমিরা গ্রামের জামাল সরদারের দুই ছেলে আনিচুর ও রেজাউল সহ একই পরিবারে একাধিক ব্যক্তিকে প্রণোদনা সুবিধা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া প্রণোদনার অগ্রাধিকার তালিকায় সরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে ফিরোজ আহম্মেদ এবং কুমিরা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শেখ শাহাজান আলী ও শেখ আব্দুল বারিক কে ও প্রণোদনা সুবিধা দেয়া হলেও তারা চাষ করেননি এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জানান, উপজেলার সব ইউনিয়নে ক্ষমতাসীন দলের লোকজনদের চাপে দায়িত্বরত কৃষি কর্মকর্তারা তালিকা প্রস্তুতে কিছুটা অনিয়ম করতে বাধ্য হয়েছে। ঐ কর্মকর্তা আরও জানান, প্রণোদনা সুবিধার পর বারংবার তাগিদ দেয়া সত্বেও অনেকে চাষ করেননি, যে কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুল আলম এর নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি প্রথমে শতভাগ অর্জিত হয়েছে বলে জানান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ৮০% অর্জিত হওয়ার কথা স্বীকার করে শতভাগ অর্জিত কোনো কাজে হয়না বলে এ প্রতিনিধিকে জানান।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)