সোমবার ● ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » সারাদেশ » খুলনায় যথাযথ মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস-২০১৯ উদযাপিত
খুলনায় যথাযথ মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস-২০১৯ উদযাপিত
এস ডব্লিউ নিউজ:
খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় আজ মহান বিজয় দিবস-২০১৯ উদযাপিত হয়। এ উপলক্ষে
সূর্যোদয়ের সাথে সাথে গল্লামারী শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।
প্রত্যুষে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে ৩১বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে দিবসের শুভ সূচনা
করা হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত এবং বেসরকারি ভবন ও
প্রতিষ্ঠানসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহ
জাতীয় পতাকা দ্বারা সজ্জিত করা হয়।
সকাল সাড়ে আটটায় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন
করেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার ড. মুঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। পরে সেখানে শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন বাহিনী, প্রতিষ্ঠানের বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান ও শরীরচর্চা প্রদর্শনী
হয়। বিভাগীয় কমিশনার প্রধান অতিথি হিসেবে কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন। খুলনা রেঞ্জ
ডিআইজি ড. খঃ মহিদ উদ্দিন, পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির এবং পুলিশ সুপার এসএম
শফিউল্লাহ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা
প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।
নগরীর শহীদ হাদিস পার্কে খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিস, পিআইডি’র আয়োজনে ১৬
ডিসেম্বর দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের ওপর স্থিরচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সন্তানদের
সংবর্ধনা দেয়া হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র
তালুকদার আব্দুল খালেক। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার ড. মুঃ আনোয়ার
হোসেন হাওলাদার, পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হানুরুর রশীদ,
অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ নাহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ ও ডেপুটি পুলিশ
কমিশনার মোঃ এহসান শাহ। সভাপতিত্ব করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।
স্বাগত জানান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ইউসুপ আলী। অন্যান্যর মধ্যে বক্তৃতা করেন সাবেক
জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সরদার মাহবুবার রহমান, মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন মিন্ট, নুর ইসলাম
বন্দ এবং স ম রেজওয়ান আলী প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাবেক মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার
মোঃ আলমগীর কবীর। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, বীর মুক্তিযোদ্ধারা, প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার
ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে খুলনা নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে বীর
মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়।
হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানা, শিশুসদনসমূহে দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ খাবার পরিবেশন
করা হয়। দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বাদ জোহর নগরীর মসজিদসমূহে বিশেষ মোনাজাত
এবং মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ১১টা
থেকে ১২টা পর্যন্ত সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকিটে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী এবং
বেলা দুইটা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত স্থানীয় নৌ-বাহিনীর জাহাজ খুলনাস্থ বিআইডবিউটিএ
রকেট ঘাটে জনসাধারণের দর্শনের জন্য উম্মুক্ত রাখা হয়। বিভাগীয় যাদুঘর সকাল থেকে বিকাল
পাঁচটা পর্যন্ত শিশুসহ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য বিনা টিকেটে উম্মুক্ত রাখা হয়।
বিকেলে পাইওনিয়ার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে মহিলাদের ক্রীড়া অনুষ্ঠান এবং খুলনা জেলা
স্টেডিয়ামে খুলনা সিটি কর্পোরেশন বনাম জেলা প্রশাসন একাদশের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ
অনুষ্ঠিত হয়। পরে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক উভয় দলের মাঝে পুরস্কার
বিতরণ করেন। সন্ধ্যায় খুলনা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে খুলনা সার্কিট হাউস সংলগ্ন শেখ
রাসেল ইন্টারন্যাশনাল টেনিস কমপ্লেক্সে ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার’ শীর্ষক আলোচনা ও
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নগর ভবনে শিশুদের
চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি
ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
দিবসটি উপলক্ষে খুলনা বেতার বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং স্থানীয় সংবাদপত্রগুলো বিশেষ
ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। ১৬ থেকে ১৮ ডিসেম্বর উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে ১০টা থেকে
বিকেল ৫টা পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের দুর্লভ ছবি ও পুস্তক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। ১৬ থেকে ১৮
ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিসিক ভবন প্রাঙ্গণে খুলনা বিসিক ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
মেলার আয়োজন করে। এছাড়াও দিবসটি পালন উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-
সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পৃথক পৃথক কর্মসূচির আয়োজন করে। খবরঃ বিজ্ঞপ্তির