শিরোনাম:
পাইকগাছা, সোমবার, ৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
শনিবার ● ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » সংস্কৃতি ও বিনোদন » নড়াইলে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী পালিত
প্রথম পাতা » সংস্কৃতি ও বিনোদন » নড়াইলে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী পালিত
২৮৪ বার পঠিত
শনিবার ● ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

নড়াইলে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী পালিত

---ফরহাদ খান, নড়াইল

বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে নূর মোহাম্মদ নগরে কোরআনখানি, স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি, গার্ড অব অনার প্রদান, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

এসব কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন-নড়াইল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় পিপিএম (বার), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফকরুল হাসান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শওকত কবির, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আজিজুর রহমান ভূঁইয়া, বীরমুক্তিযোদ্ধা এসএ মতিন, বীরমুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলু, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ছেলে শেখ মোস্তাফা কামালসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ ট্রাস্ট্রের উদ্যোগে এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এদিকে, হঠাৎ করেই বদলে গেছে নূর মোহাম্মদের জন্মবার্ষিকী ! গত বছর ৮৫তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হলেও এবার হঠাৎ করেই ৮৭তম জন্মবার্ষিকী পালন করল আয়োজকরা। কেন, কীভাবে এমনটি হলো; তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বিভিন্ন পেশার মানুষের। এর আগের বছরগুলোতেও একই নিয়মে জন্মবার্ষিকীর সাল গণনা করা হলেও এ বছর (২০২২) ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বিজিবি দিবস ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বরের ক্রোড়পত্রেও নূর মোহাম্মদের জন্মদিন ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারিই উল্লেখ করা হয়েছে। গাণিতিক নিয়মেও ১৯৩৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৮৬তম বার্ষিকী হয়। অথচ, হঠাৎ কইে ‘৮৬তম’ জন্মবার্ষিকীর পরিবর্তে ‘৮৭তম’ জন্মবার্ষিকী উল্লেখ করা হয়েছে ব্যানার, পুষ্পস্তবকসহ অনুষ্ঠানের সবর্কান্ডে।

অপরদিকে, নূর মোহাম্মদের গ্রামের নাম ‘মহিষখোলা’ পরিবর্তন করে ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ ‘নূর মোহাম্মদ নগর’ করা হয়। সেই থেকে উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে গেছে ‘নূর মোহাম্মদ নগর’। এই বীরশ্রেষ্ঠের স্মরণে এখানে নির্মিত হয়েছে-‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’, ‘স্মৃতিস্তম্ভ’, ‘স্কুল এবং কলেজ’ এবং নড়াইল শহরে ‘স্টেডিয়াম’ ও বাড়ি। প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো বিস্তারে এবং খেলাধূলা চর্চার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে এসব প্রতিষ্ঠান। এছাড়া নূর মোহাম্মদ নগরে এই বীরশ্রেষ্ঠের নামে ব্যক্তি ও সামাজিক উদ্যোগে বিভিন্ন ধরণের ক্লাব ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

নূর মোহাম্মদ শেখের জীবনী থেকে জানা যায়, তার বাবার নাম মোহাম্মদ আমানত শেখ এবং মা জেন্নাতুন্নেছা (মতান্তরে জেন্নাতা খানম)। নূর মোহাম্মদ বাল্যকালে বাবা ও মাকে হারান। পড়েছেন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত। তবে, মতান্তর রয়েছে।

নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর) যোগদান করেন। বর্তমানে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’ (বিজিবি) নামে প্রতিষ্ঠিত। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন। পরে ল্যান্স নায়েক পদে পদোন্নতি পান নূর মোহাম্মদ। ১৯৭১ সালে যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যশোরের শার্শা থানার কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। এ সময় এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮নম্বর সেক্টর কমান্ডার ছিলেন কর্নেল (অব:) আবু ওসমান চৌধুরী এবং সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর এসএ মঞ্জুর। ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে মৃতুবরণ করেন নূর মোহাম্মদ। যশোরের শার্শা থানার কাশিপুর গ্রামে তাকে সমাহিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত হন।

নূর মোহাম্মদ শেখের দ্বিতীয় স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেসা (৭৯) বার্ধক্যজনিত কারণে ২০১৮ সালের ২১ নভেম্বর ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। এর আগে ১৯৯০ সালে নূর মোহাম্মদ শেখের প্রথম স্ত্রী তোতা বিবি মারা যান। বর্তমানে ছেলে গোলাম মোস্তফা কামাল ও তিন মেয়ে নড়াইল এবং যশোরে বসবাস করছেন।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)