বুধবার ● ৩০ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » সর্বশেষ » ‘আন্ডার টেকেন’ উপেক্ষা করে ডুমুরিয়ায় আবারও শিক্ষক সমিতির প্রশ্নে পরীক্ষা চলছে
‘আন্ডার টেকেন’ উপেক্ষা করে ডুমুরিয়ায় আবারও শিক্ষক সমিতির প্রশ্নে পরীক্ষা চলছে
অরুন দেবনাথ, ডুমুরিয়া ঃ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ ও নিজেদের দেওয়া ‘আন্ডার টেকেন’ উপেক্ষা করে উপজেলা শিক্ষক সমিতির করা অভিন্ন প্রশ্নপত্রে এবারও ডুমুরিয়ার ৬৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেওয়া চলছে। বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রশ্ন দেখে ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ডুমুরিয়ায় শিক্ষা বিভাগের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ডুমুরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি অভিন্ন প্রশ্নপত্র তৈরি করে ৬৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে ওই প্রশ্ন কিনতে বাধ্য করেছে। এবং সেই প্রশ্নেই ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষাও নেওয়া চলছে। উল্লেখ্য এ বছর প্রথম সাময়িক পরীক্ষা চলা কালে শিক্ষক সমিতির করা প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনা জানতে পেরে খুলনা জেলা প্রশাসক’র নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে গত ২৫ জুলাই ডুমুরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আমিরুল ইসলাম হালদার ও সাধারণ সম্পাদক অরুণ বিশ্বাসসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এক যৌথ ‘আন্ডার টেকেন’এ লিখেছিলেন, ‘ফাঁস হওয়ার পর বাকি পরীক্ষাগুলো স্ব-স্ব বিদ্যালয়ের নিজস্ব প্রশ্নে অনুষ্ঠিত হবে। আর ভবিষ্যতে আমরা সমিতির মাধ্যমে না করে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী প্রশ্নপত্র করে পরীক্ষা নেবো।’ এ ছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বলা রয়েছে,‘বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্ব-স্ব বিদ্যালয়ের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিজেরাই প্রণয়ন করবে। কোনো অবস্থাতেই বাহির থেকে প্রশ্নপত্র ক্রয় করে পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।’ ডুমুরিয়ার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি মাত্র ৪ মাস আগে দেওয়া ‘আন্ডার টেকেন’ ও সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে আবারও প্রশ্নপত্র তৈরি করে বিদ্যালয়গুলোয় পরীক্ষা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে সমিতির সভাপতি মিকশিমিল মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম হালদার সমিতির প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ওই ঘটনার পর শিক্ষকরা এসএসসি’র টেস্ট পরীক্ষায় নিজেরাই প্রশ্ন করতে যেয়ে বিপুল খরচের মুখে পড়ে। এবার তারা সন্মিলিত ভাবে সমিতির ওপর চাপ দেওয়ায় আমরা বাধ্য হয়ে প্রশ্নপত্র করেছি। এ প্রসঙ্গে ডুমুরিয়া সদরের এনজিসি এন্ড এনসিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব হুসাইন বলেন, পেশা ভিত্তিক সংগঠনের কথা শুনতে হয় বলে আমিও তাদের প্রশ্নপত্র কিনেছি। তবে কয়েকটি পরীক্ষা আমরা নিজেদের প্রশ্নেই নেবো।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ ফিরোজ আহমেদ বলেন, শিক্ষক নেতারা গত ২৫ জুলাই আন্ডার টেকেন দিয়েছিলো। সেই মোতাবেক আমি গত টেস্ট পরীক্ষায় স্ব-স্ব বিদ্যালয়কে প্রশ্ন করতে বাধ্য করেছিলাম। কিন্তু দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় তারা পূর্বের অবস্থায় ফিরে গেছে। খুলনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, ওরা চরম দূর্নীতিগ্রস্থ। গত ২৫ জুলাই আমি সমিতির প্রশ্নে পরীক্ষা বন্ধ করেছিলাম। কিন্তু এবার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমূল আহসান বলেন, আমি জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলছি।