শিরোনাম:
পাইকগাছা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
শনিবার ● ১০ নভেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » কৃষি » মাগুরার শালিখায় শীতের শুরুতে খেঁজুরের রস আহরনে ব্যস্ত গাছিরা
প্রথম পাতা » কৃষি » মাগুরার শালিখায় শীতের শুরুতে খেঁজুরের রস আহরনে ব্যস্ত গাছিরা
৪৮০ বার পঠিত
শনিবার ● ১০ নভেম্বর ২০১৮
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মাগুরার শালিখায় শীতের শুরুতে খেঁজুরের রস আহরনে ব্যস্ত গাছিরা

---

মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরার শালিখায় শীতের আগমণী বার্তার সাথে সাথে গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন খেঁজুরের রস আহরণের জন্য। শীতের হিমেল হাওয়ায় গাছিরা রস আহরণের আনুসঙ্গিক কাজ শেষ করেছেন। আবহমানকাল থেকে গ্রামবাংলার আদি ঐতিহ্যের সাথে খেঁজুরের রস ও শীতকাল একাকার হয়ে আসছে। শীতের মূল উৎসবই হলো শীতের পিঠা। যার মূল উপাদান খেঁজুরের রস, তাৎরস, ঝোলাগুড় ও পাটালী। শীতের সকালে রোদে বসে  যেমন পিঠা খেতে শিশু থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ সকলের ভাল লাগে।তেমনই শীতের সকালে গাছ থেকে পেড়ে আনা খেঁজুরের কাচা রস খেতেও মজা কম নয়। আবার গ্রামের ঘরে ঘরে পিঠা ও পায়েস তৈরির ধুম পড়ে যায়। শিশু, যুবক, বৃদ্ধ সবাই মেতে উঠে পিঠা খাওয়ার উৎসবে। তাই প্রতিবছর খেঁজুরের রস সংগ্রহের প্রস্তুতি শুরু হয় শীতের শুরুতেই। এ বছরও উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে খেঁজুরগাছ কাটার কাজ শেষ করেছেন গাছিরা।গাছের মাথায় অনেকখানি বাকল তুলে সেখানে হাঁড়ি বেঁধে এ রস সংগ্রহ করা হয়। উপজেলার অনেক গ্রামে মহাজনরা আগাম রসের জন্য গাছিদের অগ্রিম টাকা দিয়ে থাকে। সেই টাকায় অনেকে রস সংগ্রহের বিভিন্ন উপকরণ কিনে রস সংগ্রহ শুরু করেন।

উপজেলার শরুশুনা গ্রামের, মৃত তবিবুর বিশ্বাসের ছেলে গাছি আহাদুর রহমান বিশ্বাস জানান, অন্য মৌসুমে তিনি বিভিন্ন কাজ করেন থাকেন। কিন্তু শীত এলেই খেঁজুরগাছ কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি।এঅঞ্চলে  খেঁজুর রসের পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় ভালো আয় করেন তিনি। এছাড়া শীতের সময় ধনী-গরীব সকলের কাছে খেঁজুরের গুড়েরও বেশ কদরি আছে। তিনি আরো জানান, তার নিজের  গাছের সংখ্যা খুবই কম।বেশির ভাগই অন্যের গাছ কেটে রস সংগ্রহ করতে হয় তাকে। তাই গাছের মালিককে রসের একটা অংশ দিতে হয় তাদের। তারপরেও প্রতিবছর তিনি রস ও গুড় বিক্রি করে লাভবান হন।তবে বেশি লাভবান হন কাচা রস বিক্রয় করে।আপনি কতগুলো খেঁজুর গাছ এবছর কেটেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন এবছর ১৮০ থেকে ২০০ টি গাছ কেটেছি। আশা করি ভালই রস পাবো।উপজেলার শরুশুনা,গঙ্গারামপুর,দীঘলগ্রাম,শতখালী,তালখড়ি সহ আরো কয়েকটি গ্রামঘুরে জানা যায়, গাছিদের বাড়ির একপাশে স্তপ করা থাকে অসংখ্য ছোটবড় রসের হাঁড়ি।মহিলারা বাড়ির উঠানে উনুনে মস্ত পাত্রে রস জ্বাল দেয়ে থাকেন। আর সারাদিন ধরে চলে জ্বালাইয়ের মাধ্যমে রস শোধন প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে রসের মিষ্টি গুড় তৈরি হয়। এসময় পুরো এলাকা খেঁজুরের রসের মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠে।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে খেঁজুরগাছের ভূমিকা অপরিসীম। এ উপজেলায় এখনো ২৭ হাজার ৩০০ খেঁজুরগাছ  আছে। খেঁজুরগাছ ও রসের সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে ক্রমশ তা হ্রাস পাচ্ছে।তবে বাণিজ্যিক ভিত্তিক কোন গাছ আমাদের এই উপজেলায় নাই।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানায়, এলাকার কতিপয় দুর্বৃত্ত, গাছ খেকো ও অসাধু কাঠ ব্যবসায়ীরা রাতের আধারে খেঁজুর গাছ কর্তন করে তা উপজেলার বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রয় করে দিচ্ছে।যে কারনে এখন শালিখা উপজেলার প্রায় গ্রামে এখন খেঁজুর গাছ নেই বললেই চলে।যা আছে তাও আবার এলাকার দৃর্বৃত্তদের নজরে রয়েছে।কোন সময় ফাক পেলেই ভাটায় বিক্রয় করে দেবে গাছ গুলো।এদের হাত থেকে খেঁজুর গাছ রক্ষা করা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে প্রশাসন বিষয়টি নজর দিলে হয়তো গ্রামবাংলার এই আদি ঐতিহ্য রক্ষা পেতো।

 





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)