শিরোনাম:
পাইকগাছা, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

SW News24
রবিবার ● ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
প্রথম পাতা » অপরাধ » পাইকগাছায় প্রতিপক্ষদের ফাঁসাতে তাজমিরাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা
প্রথম পাতা » অপরাধ » পাইকগাছায় প্রতিপক্ষদের ফাঁসাতে তাজমিরাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা
২১২ বার পঠিত
রবিবার ● ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পাইকগাছায় প্রতিপক্ষদের ফাঁসাতে তাজমিরাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা

 

 

---পাইকগাছার আলোচিত গৃহবধু তাজমিরা হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন থানা পুলিশ। ৫ দিনের মধ্যে আলোচিত গৃহবধু তাজমিরা হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছেন থানার ওসি মো জিয়াউর রহমান।জমি নিয়ে বিরোধে পতিপক্ষেকে ফাসাতে ভাসুর শহীদুল্লাহ পরিকল্পনায় তাজমিরাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ এ পর্যন্ত  মোট ৩ জনকে আটক করেছে।

তাজমীরা হত্যা মামলার পূরো মোটিভ সহ হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি সহ অন্যান্য আলামত উদ্ধার করেছে পুলিশ। হত্যাকান্ডে জড়িত চাঁদখালী ইউপি’র ধামরাইল গ্রামের শহীদুল ( মাষ্টার) সুন্দরবনে পালানোর চেষ্টাকালে শনিবার বিকেলে কুমখালী থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেন। এ মামলায় এ পর্যন্ত ৩ ব্যক্তির গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়ে ওসি মোঃ জিয়াউর রহমান বলেন, শহীদুল ( মাষ্টার) হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা বলে গতকাল আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, গত ৩০ জানুয়ারি রাতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে চাঁদখালীর ধামরাইলের ওবায়দুল্লাহ মীরের স্ত্রী ৩ কন্যা সন্তানের মা তাজমীরা (৩৮) কে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে চায়ের দোকানে ফেলে হত্যা করে বাড়ীর ৫০ গজ দুরে বোরো ধান ক্ষেতে লাশ ফেলে দুর্বত্তরা রেখে পালিয়ে যায়। পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ ও আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে শহীদুল ( মাষ্টার) এ হত্যাকান্ড সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। ২০১৮ সালে নিহতের স্বামী ওবায়দুল্লাহ মীরের সাথে তার বড় ভাই মৃতঃ সাংবাদিক আব্দুল্লাহ মীরের ছেলে খুলনার বাসিন্দা ইমন ও মেয়ে মৌসুমীর মধ্যে ৭ শতক জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। এক পর্যায়ে ইমন-মৌসুমী বাড়ীর চচা কামরুল মীরের কাছে এ জমি বিক্রয় করলে ত্রিমুখি বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে বহুবার সালিশী সভায় মিমাংশা না হলে সর্বশেষ ওবায়দুল্লাহ ও কামরুল মীর পাইকগাছার নির্বাহী কোর্টে পাল্টা-পাল্টি ১৪৪ ধারার মামলা করলে পুলিশ দু’পক্ষকে নোটিশ করে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে নির্দেশ দেয়। এদিকে জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে ফাঁয়দা নিতে কামরুল মীর ও ইমন-মৌসুমীকে শায়েস্তা করতে ওবায়দুল্লাহ’র সেঝভাই চা দোকানদার জেলহাজতে আটক শহীদুল্লাহ মীর ও শহীদুল (মাষ্টার) সহ ৪ জন খুঁনের পরিকল্পনা করে। টার্গেট করে আপন ভাই ওবায়দুল্লাহ’র স্ত্রী তাজমিরাকে। পরিকল্পনা মতে ৩০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় জমি বুঝে দেবার কথা বলে ভাসুর শহীদুল্লাহ মীরের চায়ের দোকানে তাজমিরাকে ডাকা হয়। ঐদিন রাতের খাবার খেয়ে স্বামী ওবায়দুল্লাহ এক রুমে ও মেয়ে তামান্নাকে নিয়ে অন্যরুমে তাজমিরা ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১২ দিকে তাজমিরাকে শহীদুল্লাহ মীরের চায়ের দোকানে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে শহীদুল্লাহ ও শহীদুল ( মাষ্টার) ৬ জন তাজমিরার গলায় গামছা পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এক পর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ৪ জন লাশ ঘাড়ে করে ওয়াপদার ভিতরে বোরো ধান ক্ষেত ফেলে রেখে নিহতের গলায় ছুরির টান মেরে পালিয়ে যায়। পরের দিন ৩১ জানুয়ারি পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য খুমেক হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মৌখালীর আলমগীর গাজী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন,যার নং-৩২।

  ওসি জিয়াউর রহমান জানান, এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩জনকে আটক করা হয়েছে। প্রথমে গৃহবধুর ভাসুর শহীদুল্লাহ মীর, পরে মফিজুল গাজী এবং সর্বশেষ শহিদুল মোড়ল ওরফে মাস্টারকে আটক করা হয়েছে। ওসি বলেন, শহিদুল সুন্দরবনে পালিয়ে যাচ্ছিল। বিষয়টি জানতে পেরে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার ট্রলার থেকে তাকে আটক করা হয়। আটকের পর তার কাছ থেকে হত্যা ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটন হয়েছে। কি ভাবে পরিকল্পনা করা হয়, কিভাবে হত্যা করা হয়, কারা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে আটক শহিদুল মাস্টার। সে শনিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আটক অপর দুই আসামীর রিমান্ড আবেদন সোমবার শুনানীর দিন ধার্য্য রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত যারা পলাতক রয়েছে তাদেরকে খুব দ্রুত গ্রেফতার করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে থানা পুলিশের এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।





আর্কাইভ