শিরোনাম:
পাইকগাছা, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১

SW News24
রবিবার ● ১৭ মার্চ ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » রাস্তার পাশে সৌন্দর্যময় বনজুঁই বা ভাটি ফুল সৌরভ ছড়াচ্ছে
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » রাস্তার পাশে সৌন্দর্যময় বনজুঁই বা ভাটি ফুল সৌরভ ছড়াচ্ছে
২৬২ বার পঠিত
রবিবার ● ১৭ মার্চ ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

রাস্তার পাশে সৌন্দর্যময় বনজুঁই বা ভাটি ফুল সৌরভ ছড়াচ্ছে

মাঠে প্রান্তরে, রাস্তার পাশের বনজুঁই সৌরভে সুভাষিত করে তুলছে মনকে। রাতে আধারে ছড়াচ্ছ সুভাষিত সৌরভ।ফুলগুলো সহজেই নজর কেড়ে নেয়। এই ফুল দিনে ফোটে এবং রাতে সৌরভ ছড়ায়। বসন্ত ঋতুতে মাঠে প্রান্তরে যে ফুল গুলো সহজেই মানুষের নজর কাড়ে-তা হলো বনজুঁই।বনজুঁই বা  ভাঁট গুল্মজাতীয় বহুবর্ষজীবী সপুষ্পক উদ্ভিদ। এই ফুলটি অঞ্চল ভেদে ‘ভাটি ফুল,ভাট ফুল, বাইট ফুল, ভান্টকী,ঘেটু, চৈতিগাড়া ফুল, ভাত ফুল, ঘণ্টাকর্ণ’ নামে পরিচিত। ভাটি ফুল বাংলাদেশের মানুষের একেবারে চোখের সামনে অনাদরে থাকা একটি ফুল। এটি বুনো ফুল। ঋতুরাজ বসন্তে দেখা যায় এই ফুল। ঝোপ-ঝাড়ে, জঙ্গলে, রাস্তার ধারে, এখানে-সেখানে নিজের সুন্দর রূপ ছড়িয়ে থাকে ভাটি ফুল বা বন জুঁই। এ ফুলটি বাংলাদেশের আদি ফুল।

---ভাঁট গাছের প্রধান কাণ্ড সোজাভাবে দন্ডায়মান, সাধারণত ২ থেকে ৪ মিটার লম্বা হয়। পাতা ৪ থেকে ৭ ইঞ্চি লম্বা হয়। দেখতে কিছুটা পানপাতার আকৃতির ও খসখসে। ডালের শীর্ষে পুষ্পদণ্ডে ফুল ফোটে। পাপড়ির রং সাদা এবং এতে বেগুনি রঙের মিশেল আছে। বসন্ত থেকে গ্রীষ্ম অবধি ফুল ফোটে। এই ফুলের রয়েছে মিষ্টি সৌরভ। ফুল ফোটার পর মৌমাছিরা ভাঁট ফুলের মধু সংগ্রহ করে। গ্রামের মেঠো পথের ধারে, পতিত জমির কাছে এরা জন্মে থাকে এবং কোনরূপ যত্ন ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে। এছাড়াও পাহাড়ি বনের চূড়ায় এবং পাহাড়ি ছড়ার পাশে এদের উপস্থিতি বিশেষভাবে লক্ষনীয়।

বাংলাদেশের মাটিতে এই ফুলের গাছ অত্যন্ত অনাদর আর অবহেলায় জন্মে এবং বেড়ে ওঠে। গাছ গুল্ম জাতীয়। ছোট আকৃতির ও বেশ ঝোপালো হয়। সবুজ বহুপত্রী ভাটি গাছের ফুল ধবধবে সাদা। ফুল ফোঁটে থোকায় থোকায়। দেশের সর্বত্রই দেখা যায় এই ফুল। তবে দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে এ ফুলটি।

ভাঁট গাছ ঔষধি গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। এর পাতার রস শিশুর জ্বর দূর করে। ভাট ফুল ও পাতার প্রচুর ঔষধি গুণ রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে। ফ্ল্যাভোনয়েড থাকার জন্য এটি ক্যানসার দমনে সহায়ক। এছাড়াও কৃমি, চুলকানি, কোলেস্টেরল, ব্লাড সুগার ও উদরাময় প্রভৃতি রোগ নিরাময়ে এটি সাহায্য করে।তবে এটি খুব বেশি স্বীকৃত নয়।

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল এলাকায় কৃষিজীবী সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ভাট ফুল দিয়ে ভাটি পুজোর আয়োজন করে থাকেন। বাংলাদেশের  খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, বরিশাল, ফরিদপুর, সাতক্ষীরা অঞ্চলের মানুষ ভাটি পুজো করে।সনাতন ধর্মালম্বীরা চৈত্রের শেষ দিন এই ফুল দিয়ে ভাঁটি পূজা করছেন।

ভাঁট ফুল দিয়ে সনাতন ধর্মের লোকেরা ভাঁটি পূজার আয়োজন করে ফাল্গুনের শেষ দিনটিতে। তবে পূজা শুরু হয় মাসের প্রথম দিন থেকেই। ঘরের কাছে ভিটা তৈরি করে, চারপাশে গাছের কাণ্ড দিয়ে বর্গাকার ঘর তৈরি করে ভাঁট ফুল সংগ্রহ করে প্রতিদিন সন্ধ্যায় পূজা দেওয়া হয় এবং শেষ হয় ফাল্গুনের শেষ দিনে। সেদিন সকালে শিশুরা ভাঁট ফুল সংগ্রহ করে পূজামঞ্চে প্রার্থনা করে। এই পূজার মর্মকথা হলো, ভাঁট ফুল মাথায় নিয়ে জলে স্নান করার পর শিশুদের বিপদ ও রোগবালাই দূর হয়।তাছাড়া গবাদি পশুর রোগবালাই থেকে মুক্তির কামণায় এ পুজো করে থাকেন। এ পূজার নাম অঞ্চলভেদে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)