মঙ্গলবার ● ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » আশাশুনির কুঁড়িকাহুনিয়া কপোতাক্ষ নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ৫ গ্রাম প্লাবিত পানি বন্ধি প্রায় ৫ সহশ্রাধিক পরিবার, কর্তৃপক্ষ উদাসীন
আশাশুনির কুঁড়িকাহুনিয়া কপোতাক্ষ নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ৫ গ্রাম প্লাবিত পানি বন্ধি প্রায় ৫ সহশ্রাধিক পরিবার, কর্তৃপক্ষ উদাসীন
আহসান হাবিব, আশাশুনি ঃ আশাশুনির কুঁড়িকাহুনিয়ায় কপোতাক্ষ নদীর বেড়ি বাধঁ ভেঙ্গে ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে প্রায় ৫ সহ¯্রাধিক পরিবার। পানিতে তলিয়ে ভেঁসে গেছে দুই শতাধিক চিংড়ী ঘের ও ফসলি জমি। রোববার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুঁড়িকাহুনিয়ায় পুরাতন লঞ্চঘাট সংলগ্ন ৭/২নং পোল্ডারের কপোতাক্ষ নদীর পাউবোর বেড়িবাঁধ প্রবল জোয়ারের চাপে প্রায় ২০০/২৫০ ফুট বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। নদীর পানির তোড়ে ৫টি গ্রামের প্রায় ৫ সহ¯্রাধিক পরিবার ও তাদের গৃহপালিত জীব-জন্তু, পানি বন্ধি হয়ে পড়ে, ভেঁসে গেছে ২ শতাধিক ছোট-বড় চিংড়ী ঘের ও ৫/৬শ বিঘা আবাদী জমি। ফলে আশ্রয় হীন হয়ে পড়েছে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার। স্থানীয় প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, দীর্ঘদিন থেকে পুরাতন লঞ্চঘাট থেকে রুইয়ারবিল পর্যন্ত প্রায় ৬শ ফুট বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় স্থানীয়ভাবে স্বেচ্ছাশ্রমে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বাঁধ রক্ষায় কাজ করে আসছিল। বিষয়টি পাউবো’র কর্মকর্তাদের অবহিত করলেও কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় ও তাদের গাফিলতির কারণে বাঁধটি প্রবল জোয়ারের চাপে নদীর পানি বৃদ্ধি হওয়ায় ওই দিন বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ভিতরে পানি প্রবেশ করে এলাকা প্লাবিত হয়। অতিদ্রুত ভাঙ্গন এলাকা বাঁধতে না পারলে এবং ঝুকিপূর্ণ এলাকা সংস্কার না করলে পরবর্তী জোয়ারে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হবে। এলাকাবাসি আক্ষেপ করে আমাদের এ প্রতিবেদনকে জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের আর প্রয়োজন নেই। কারণ বাঁধ না ভাঙ্গা পর্যন্ত তারা এলাকায় আসে না। কেননা ভেড়িবাঁধ ভাংলে পাউবোর কর্মকর্তাদের কপাল খোলে আর কপাল পোড়ে এলাকাবাসীর। এ ব্যাপারে প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি শেখ জাকির হোসেন জানান, বাঁধটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুকিপুর্ণ থাকায় বার বার পানি উন্নয়ন বোর্ডকে তাগিদ দেওয়ার পরও সংস্কারের কোন পদক্ষেপ নেয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলাতি আর উদাসীনতার কারণেই ইউনিয়নবাসীর এ দৈন্য দশা। তিনি আরো জানান, এখনই বাঁধটি সংস্কার করতে না পারলে পরবর্তী জোয়ারে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হবে এবং আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে পার্শ্ববর্তী গ্রামের হাজার হাজার পরিবার। বাঁধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে মুঠো ফোনে জানানোর পরও পাউবো’র কোন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা বা দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এখনও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেননি বা পদক্ষেপ নেননি। বর্তমানে ভাঙ্গনের যে ভয়াবহতা তা এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে রোধ করা অত্যান্ত কঠিন ব্যাপার। প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন প্লাবিত এলাকায় পানি বন্দি ও আশ্রয়হীন মানুষের খাদ্য সামগ্রী সহ বিশুদ্ধ পানি নিয়ে প্রশাসন ও এনজিওদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তিনি আরও জানান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সেলিম খান এ খবরে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাঁধ রক্ষায় আমার সাথে পরামর্শ করে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ভাঙ্গন বেড়িবাঁধ বাঁধার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। রাতের জোয়ারে আর যাতে পানি না ঢোকে সে জন্য আপাতত কিছু শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে। এদিকে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রস্তুত করে ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তিনি সহ ভুক্তভোগী এলাকাবাসী অতিদ্রুত বাঁধ রক্ষায় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।