শিরোনাম:
পাইকগাছা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
রবিবার ● ১৫ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » ভেষজ চিকিৎসায় হরিতকি ফলের গুরুত্ব
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » ভেষজ চিকিৎসায় হরিতকি ফলের গুরুত্ব
৫৪৭ বার পঠিত
রবিবার ● ১৫ নভেম্বর ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ভেষজ চিকিৎসায় হরিতকি ফলের গুরুত্ব

---

প্রকাশ ঘোষ বিধান, পাইকগাছাঃ হরিতকি একটি ভেষজ উদ্ভিদ। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় কমবেশি হরিতকি গাছ পাওয়া যায়। হরিতকি ফল বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় এবং রন্ধনশিল্পে বহুল ব্যবহৃত হয়। ভেষজ চিকিৎসকরা  হরিতকি গাছকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। তারা বলেন, মানুষের কাছে এ বৃক্ষ মায়ের মতই আপন। মানুষের শরীরে সংক্রমিত প্রায় সব রোগ-ব্যাধির ঔষধ হিসাবে হরিতকির ব্যবহার রয়েছে। সব রোগ হরণ করে বলেই প্রাচীন শাস্তকাররা এর নাম দিয়েছেন হরিতকি।

হরিতকি স্বাদে খুব তিতা। এটি ট্যানিন, অ্যামাইনো এসিড, ফ্রুকটোজ ও বিটা সাইটোস্টেবল সমৃদ্ধ একটি ফল। হরিতকি দেহের রক্ত পরিষ্কার করে; একইসঙ্গে দেহের শক্তি বৃদ্ধি করে। এটা রক্তচাপ ও অন্ত্রের খিঁচুনি কমায়। হৃদপিণ্ড ও অন্ত্রের অনিয়ম দূর করে হরিতকি। এটি পরজীবীনাশক, পরিবর্তনসাধক, অন্ত্রের খিঁচুনি রোধক এবং স্নায়ুবিক শক্তিবর্ধক। হরিতকি কোষ্ঠকাঠিন্য, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, অবসাদ এবং অধিক ওজনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

পাইকগাছা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কমবেশী ঔষধী গাছ হরিতকি রয়েছে। এ সকল গাছে প্রচুর পরিমানে ফল ধরেছে। পাইকগাছা পৌরসভার প্রাণ কেন্দ্র বাতিখালী মন্দির প্রাঙ্গনে অবস্থিত হরিতকি গাছটি ফলে ফলে ঢেকে গেছে। বিভিন্ন এলাকার লোকজন তাদের প্রয়োজনমত ফল পেড়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয় বাতিখালী মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক প্রমথ রঞ্জন সানা বলেন, গাছটিতে প্রতি বছর হরিতকি ফলে ভরে যায়। ফলে ভারে এ বছর গাছের ৩টি ডাল ভেঙ্গে গেছে। গাছের ফল যার প্রয়োজন সে ইচ্ছামত পেড়ে নিয়ে যেতে পারে তার জন্য কোন বাঁধা নেই। এ গাছের ফল বিক্রয় করা হয় না। সকলের জন্য উন্মুক্ত।

হরিতকির ৭টি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধী গুণাগুণ রয়েছে। হরিতকিতে অ্যানথ্রাইকুইনোন থাকায় রেচক বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। অ্যালার্জি দূর করতে হরিতকি বিশেষ উপকারী। হরিতকি ফুটিয়ে সেই পানি খেলে অ্যালার্জি কমে। হরিতকি গুঁড়া নারিকেল তেলের সঙ্গে ফুটিয়ে মাথায় লাগালে চুল ভালো থাকে। হরিতকির গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। গলা ব্যথা বা মুখ ফুলে গেলে হরিতকি পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গার্গল করলে আরাম পাওয়া যায়। দাঁতে ব্যথা দূর করতে হরিতকির গুঁড়া লাগানো যেতে পারে। রাতে শোয়ার আগে অল্প বিট লবণের সঙ্গে দুই গ্রাম লবঙ্গ বা দারুচিনির সঙ্গে হরিতকির গুঁড়া -মিশিয়ে সেবন করা যেতে পারে। এতে পেট পরিষ্কার হবে।

হরিতকি একটি বৃক্ষ জাতিয় সপুষ্প উদ্ভিদ। বাংলাদেশ ও ভারত হরিতকির আদিনিবাস। এ গাছ ৪০/৫০ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়। ফেব্রুয়ারি ও মার্চে পাতা ঝরে নতুন পাতা গজাতে থাকে। বাকলের গায়ের রং বাদামি, বাকলের লম্বা ফাটল তাকে। পাতা লম্বা-চেপ্টা, কিনার চোখা, লম্বয় ৫/৬ ইঞ্চি। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে হরিতকির ফুল ফোটে। ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত গাছ থেকে পাঁকা ফল সংগ্রহ করা হয়। ডালের শেষ প্রান্তে ফুল ফোটে। রং হালকা হলুদাভ। ফল লম্বাটে, মোচাকৃতি। ফল লম্বয় প্রায় দেড় ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। কাঁচা ফল সবুজ, পরিপক্ষ হলে হালকা হলুদ আর শুকালে কালচে খয়েরি রঙ্গের হয়। ফলের ত্বক ভিষণ শক্ত। এই ফল বছরের পর বছর ভালো থাকে।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)