শিরোনাম:
পাইকগাছা, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
বৃহস্পতিবার ● ২৬ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » উপকূল » সুন্দরবনের দুবলারচরে রাস পূণিমায় সনাতন ধর্মালম্বীদের অনুমতি থাকায় অন্যদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে; তবে শিকারীরা দুবলার চরে যেতে তৎপর
প্রথম পাতা » উপকূল » সুন্দরবনের দুবলারচরে রাস পূণিমায় সনাতন ধর্মালম্বীদের অনুমতি থাকায় অন্যদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে; তবে শিকারীরা দুবলার চরে যেতে তৎপর
৪০৪ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ২৬ নভেম্বর ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সুন্দরবনের দুবলারচরে রাস পূণিমায় সনাতন ধর্মালম্বীদের অনুমতি থাকায় অন্যদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে; তবে শিকারীরা দুবলার চরে যেতে তৎপর

---

প্রকাশ ঘোষ বিধান ॥

রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে আগামী ২৮ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী সুন্দরবনের দুবলারচরে ঐতিহ্যবাহী ‘রাস পূর্ণিমা পুণ্যস্নান’ অনুষ্ঠিত হবে । প্রতি বছরের ন্যায় কার্তিক মাসের শেষ বা অগ্রহায়ণের প্রথম দিকে শুক্লপক্ষের ভরা পূর্ণিমায় সুন্দরবনের দুবলারচরে ৩ দিন ব্যাপী রাস পূর্ণিমায় পূজা ও  পুণ্যস্নান’ অনুষ্ঠিত হবে। এটি সব থেকে বড় সমুদ্র রাস উৎসব। হাজার হাজার পুর্ণাথী আগমনে মেলা উৎসব মূখর হয়ে ওঠে। এ মেলাকে কেন্দ্র করে সুন্দরবন উপকূলবর্তী মানুষের মধ্যে উৎসব মূখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। মেলায় যেতে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। তবে এ বছর হিন্দু ধর্মালম্বী ছাড়া রাস উৎসবে যাওয়ার অনুমতি না থাকায় উপকূলের শত শত লোকের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। হিন্দু ধর্মালম্বীরা পূর্ণিমার জোয়ারে নোনা জলে স্নানে পাপ মোচন হয়ে মনস্কামনা পূর্ণ হবে এ বিশ্বাসে রাস মেলায় যোগ দিলেও সময়ের ব্যবধানে এখন নানা ধর্ম ও বর্ণের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকা যোগে তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীরা সমবেত হয়। আসে অসংখ্য বিদেশী পর্যটক। তবে মেলাকে সামনে রেখে চোরা শিকারী ও মৌসুমী শিকারী চক্র সুন্দরবনের হরিণ শিকারের সুযোগ নেয়। তাই তাদের আগাম তৎপরতাও শুরু হয়েছে।

সূত্র জানাগেছে, সুন্দরবন সংলগ্ন ৮টি উপজেলার চোরা শিকারী চক্র এখনও সক্রিয়। সুন্দরবনে প্রবেশে কড়াকড়ির মধ্যেও রাস পূর্ণিমার মেলাকে ঘিরে  শিকারীদের হরিণ শিকারের প্রস্তুতি চলছে। হিন্দু ধর্মালম্বী ছাড়া রাস উৎসবে যাওয়ার অনুমতি না থাকায় অনেকেই জেলে সেজে রাস পূণিমার প্রায় ১৫ দিন আগে দুবলার চরে অবস্থান করছে করছে বলে জানা গেছে। রাস পূণিমা উপলক্ষ্যে ব্যাপক নিরাপত্তা গ্রহণ করা হলেও শ্যামনগর, কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, মংলা, রামপাল, সহ উ্পকুলীয় এলাকার শিকারীরা উৎসবে শুরু হওয়ার ১০/১৫ দিন আগে জেলে ও  বনজীবী সেজে বিভিন্ন কৌশলে বনের মধ্যে প্রবেশ করে রেখে আসা শিকারী উপকরণ দিয়ে হরিণ শিকার করে। আবার রাস উৎসব শুরু হলে বিশেষ কায়দায় উ্পকরণ নিয়ে যাওয়া শিকারীরা তীর্থযাত্রীদের সাথে একত্রিত হয়ে মিশে যায়। মেলার আনন্দে মেতে উঠা দর্শনার্থী ও নিরাপত্তা কর্মীদের চোখ ফাকি দেয় এ ফাদ দিয়ে হরিণ শিকারে মেতে উঠে। রাসমেলার সময় হিরণপয়েন্ট, দুবলারচর আলোর কোল সহ বিভিন্ন চর ও সুন্দরবন সাগর মোহনায় পুর্ণার্থী, দর্শনার্থী ও পর্যাটক সহ হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। এ সময় জনসমুদ্রে শিকারী চক্র মিশে গিয়ে চোখ ফাকি দিয়ে হরিণ নিধনে মেতে উঠে। ব্যাপক নজরদারী থাকা স্বত্বেও শুধুমাত্র হরিণ শিকারের উদ্দেশ্যে এ বিশাল মেলায় দর্শনার্থীরুপে আগত শিকারীদের আটকানো অনেক সময় সম্ভব হয় না।

তীর্থযাত্রীদের জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ পাঁচটি পথ নির্ধারণ করেছে। এ সকল পথে তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীদের জানমালের নিরাপত্তায় বন বিভাগ, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ড বাহিনীর টহল দল নিয়োজিত থাকবে।অনুমোদিত পাঁচটি রুট হলো: বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক থেকে বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা খাল হয়ে হংসরাজ নদী হয়ে দুবলারচর। কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে আড়ুয়া শিবসা-শিবসা নদী-মরজাত হয়ে দুবলার চর। নলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর। ঢাংমারী অথবা চাঁদপাই স্টেশন-তিনকোনা দ্বীপ হয়ে দুবলার চর এবং বগী-বলেশ্বর-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলার চর হয়ে দুবলার চর।

পূর্ণিমা পুণ্যস্নানে কেবল তিন দিনের জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনুমতি দেওয়া হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং মাস্কবিহীন কোন তীর্থযাত্রীকে পূণ্যস্নানস্থলে যেতে দেওয়া হবে না। অনুষ্ঠান স্থলে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী হ্যান্ডস্যানিটাইজার ও হ্যান্ডওয়াস রাখা হবে।

তীর্থযাত্রীদের আগামী ২৮ থেকে ৩০ নভেম্বর এ তিন দিনের জন্য অনুমতি প্রদান করা হবে এবং প্রবেশের সময় এন্ট্রি পথে নির্দিষ্ট ফি প্রদান করতে হবে। যাত্রীরা নির্ধারিত রুটের পছন্দমতো একটি মাত্র পথ ব্যবহারের সুযোগ পাবেন এবং দিনের বেলায় চলাচল করতে পারবেন। বনবিভাগের চেকিং পয়েন্ট ছাড়া অন্য কোথাও নৌকা, লঞ্চ বা ট্রলার থামানো যাবে না। প্রতিটি ট্রলারের গায়ে রং দিয়ে বিএলসি অথবা সিরিয়াল নম্বর লিখতে হবে। রাস পূর্ণিমায় আগত পুণ্যার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট হতে প্রাপ্ত সনদপত্র সাথে রাখতে হবে। পরিবেশ দূষণ করে এমন বস্তু, শব্দযন্ত্র বাজানো, পটকা ও বাজি ফোটানো, বিস্ফোরক দ্রব্য, দেশীয় যে কোন অস্ত্র এবং আগ্নেয়াস্ত্র, হরিন মারার ফাঁদ, কুড়াল, দড়ি বহন করা থেকে যাত্রীদের বিরত থাকতে হবে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবস্থানকালীন সবসময় টোকেন ও টিকেট নিজের সঙ্গে রাখতে হবে। প্রতিটি লঞ্চ, নৌকা ও ট্রলার-কে মেলা প্রাঙ্গণে কন্ট্রোলরুমে আবশ্যিকভাবে রিপোর্ট করতে হবে। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ সকল তথ্য জানিয়েছেন।





উপকূল এর আরও খবর

উপকূলের সংকট নিরসনে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান উপকূলের সংকট নিরসনে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান
বঙ্গোপসাগরে বৈরী আবহাওয়ায় চারদিন যাবৎ;মাছধরা বন্ধ দুবলারচরে হাজার হাজার জেলে অলস সময় পার করছেন বঙ্গোপসাগরে বৈরী আবহাওয়ায় চারদিন যাবৎ;মাছধরা বন্ধ দুবলারচরে হাজার হাজার জেলে অলস সময় পার করছেন
পাইকগাছায় উপকূল দিবস পালিত পাইকগাছায় উপকূল দিবস পালিত
১২ নভেম্বর উপকূল দিবস ঘোষিত হোক ১২ নভেম্বর উপকূল দিবস ঘোষিত হোক
উপকূলের সংকট নিরসনে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন উপকূলের সংকট নিরসনে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন
বঙ্গোপসাগরে মাছ আহরণে জন্য পাইকগাছার জেলে পল্লীতে ট্রলার তৈরির ধুম বঙ্গোপসাগরে মাছ আহরণে জন্য পাইকগাছার জেলে পল্লীতে ট্রলার তৈরির ধুম
পাইকগাছা শিবসা নদীর চরে আড়াই মন ওজনের শুশুক উদ্ধার পাইকগাছা শিবসা নদীর চরে আড়াই মন ওজনের শুশুক উদ্ধার
উপকূলীয় অঞ্চলকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করার দাবী উপকূলীয় অঞ্চলকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করার দাবী
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত খুলনার উপকূলীয় এলাকা পরিদর্শন করলেন বেলজিয়ামের রানি জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত খুলনার উপকূলীয় এলাকা পরিদর্শন করলেন বেলজিয়ামের রানি
শ্যামনগরে উপকূল দিবসে উপকূলের মানুষের বাঁচার দাবী শ্যামনগরে উপকূল দিবসে উপকূলের মানুষের বাঁচার দাবী

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)