শিরোনাম:
পাইকগাছা, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
বুধবার ● ৩০ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » উপকূল » দুবলারচরে রাসমেলায় যেতে উপকূলবাসীর মধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি; তৎপর শিকারীরা
প্রথম পাতা » উপকূল » দুবলারচরে রাসমেলায় যেতে উপকূলবাসীর মধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি; তৎপর শিকারীরা
৫৮৭ বার পঠিত
বুধবার ● ৩০ অক্টোবর ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

দুবলারচরে রাসমেলায় যেতে উপকূলবাসীর মধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি; তৎপর শিকারীরা

---

প্রকাশ ঘোষ বিধান, পাইকগাছা ॥

সুন্দরবনের দুবলারচরে রাসমেলা ঘিরে উপকূল অঞ্চলে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। মেলায় যেতে পূর্ণার্থী ও দর্শনার্থীদের প্রস্তুতি চলছে। প্রতিবছর কার্তিক মাসের শেষ বা অগ্রহায়ণের প্রথম দিকে শুক্লপক্ষের ভরা পূর্ণিমায় সুন্দরবনের দুবলারচর আলোরকোলে ৩ দিন ব্যাপী রাস মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এটি এশিয়ার সব থেকে বড় সমুদ্র মেলা। ১০ নভেম্বর থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত ৩ দিন ব্যাপী রাসমেলা অনুষ্ঠিত হবে। হাজার হাজার পুর্ণার্থী ও দর্শনার্থীদের আগমনে মেলা উৎসব মূখর হয়ে ওঠে। এ মেলাকে কেন্দ্র করে সুন্দরবন উপকূলবর্তী মানুষের মধ্যে উৎসব মূখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। মেলায় যাওয়ার জন্য ট্রলার ভাড়াসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি চলছে। হিন্দু ধর্মালম্বীরা পূর্ণিমার জোয়ারে নোনা জলে ¯œানে মধ্যদিয়ে পাপমোচন হয়ে মনস্কামনা পূর্ণ হবে, এ বিশ্বাসে রাসমেলায় যোগ দিলেও সময়ের ব্যবধানে এখন নানা ধর্ম ও বর্ণের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকা যোগে তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীরা সমবেত হয়। আসে অসংখ্য বিদেশী পর্যটকও। তবে মেলাকে সামনে রেখে চোরা শিকারী ও মৌসুমী শিকারী চক্র সুন্দরবনের হরিণ শিকারের সুযোগ নেয়। তাই তাদের আগাম তৎপরতাও শুরু হয়েছে।

সূত্র জানাগেছে, সুন্দরবন সংলগ্ন উপজেলার চোরা শিকারী চক্র সক্রিয় রয়েছে। সুন্দরবনে প্রবেশে কড়াকড়ির মধ্যেও রাস পূর্ণিমার মেলাকে ঘিরে  শিকারীদের হরিণ নিধনের সুযোগ গ্রহণ করে। সুন্দরবন সংলগ্ন  উপজেলার শিকারীরা রাসমেলার আড়ালে হরিণ শিকারের ফাঁদ, জাল, বরশি সহ বিভিন্ন উপকরণ তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছে। হরিণ শিকারী চক্রের দৌরত্ব আশংখাজনক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় পরিবেশবিদরা ধারণা করছেন, এভাবে হরিণ শিকার করলে হরিণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। অভিনব কায়দায় শিকারীরা হরিণ শিকার করে। শিকারীদের কাছ থেকে জানা গেছে, লাইলনের তৈরী ফাদ, জাল পেতে, স্পিং বসানো ফাঁদ, বিষটোপ, তীর, গুলি করে, কলার মধ্যে বরশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা ফাঁদ ও ঘাস পাতার উপর চেতনা নাশক ঔষধ দিয়ে হরিণ নিধন করা হয়। রাসমেলা উপলক্ষ্যে ব্যাপক নিরাপত্তা গ্রহণ করা হলেও শ্যামনগর, কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, মংলা, রামপাল, সহ উপকূলীয় এলাকার শিকারীরা মেলা শুরু হওয়ার ১০/১৫ দিন আগে জেলে বা বনজীবী সেজে বনের মধ্যে প্রবেশ করে রেখে আসা শিকার করার উপকরণ। মেলার আনন্দে মেতে উঠা দর্শনার্থী ও নিরাপত্তা কর্মীদের চোখ ফাকি দিয়ে এসব ফাঁদ দিয়ে হরিণ শিকারের সুযোগ গ্রহণ করে। রাসমেলার সময় হিরণ পয়েন্ট, দুর্বারচর আলোর কোল সহ বিভিন্ন চর ও সুন্দরবন সাগর মোহনায় পুর্ণার্থী, দর্শনার্থী ও পর্যাটক সহ হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। এ সময় জনসমুদ্রে শিকারী চক্র মিশে গিয়ে চোখ ফাকি দিয়ে হরিণ নিধনে মেতে উঠে। ব্যাপক নজরদারী থাকা স্বত্বেও শুধুমাত্র হরিণ শিকারের উদ্দেশ্যে এ বিশাল মেলায় দর্শনার্থীরুপে আগত শিকারীদের আটকানো অনেক সময় সম্ভব হয় না।

---

পুণ্য¯œনে নিরাপদে যাতায়াতের জন্য দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ আটটি পথ নির্ধারণ করেছে। এ সকল পথে বন বিভাগ, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ড বাহিনীর টহল দল তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীদের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে।

অনুমোদিত আটটি পথ হলো-বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক থেকে বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা হয়ে হংসরাজ নদী হয়ে দুবলারচর। কদমতলা হতে ইছামতি নদী, দোবেকী হয়ে আড়পাঙ্গাসিয়া-কাগাদোবেকী হয়ে দুবলার চর। কৈখালী স্টেশন হয়ে মাদার গাং, খোপড়াখালী ভাড়ানী, দোবেকী হয়ে আড়পাঙ্গাসিয়া-কাগাদোবেকী হয়ে দুবলার চর। কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে আড়–য়া শিবসা-শিবসা নদী-মরজাত হয়ে দুবলার চর। নলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর। ঢাংমারী অথবা চাঁদপাই স্টেশন হয়ে পশুর নদী দিয়ে দুবলারচর। বগী-বলেশ্বর-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলার চর হয়ে দুবলার চর এবং শরণখোলা স্টেশন-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলার চর হয়ে দুবলার চর।

দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীরা ১০ নভেম্বর হতে ১২ নভেম্বর এ তিন দিনের জন্য অনুমতি প্রদান করা হবে এবং প্রবেশের সময় এন্ট্রি পথে নির্দিষ্ট ফি প্রদান করতে হবে। যাত্রীরা নির্ধারিত রুটের পছন্দমতো একটি মাত্র পথ ব্যবহারের সুযোগ পাবেন এবং দিনের বেলায় চলাচল করতে পারবেন। বনবিভাগের চেকিং পয়েন্ট ছাড়া অন্য কোথাও নৌকা, লঞ্চ বা ট্রলার থামানো যাবে না। প্রতিটি ট্রলারের গায়ে রং দিয়ে বিএলসি অথবা সিরিয়াল নম্ব^র লিখতে হবে। রাস পূর্ণিমায় আগত পুণ্যার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট হতে প্রাপ্ত সনদপত্র সাথে রাখতে হবে। পরিবেশ দূষণ করে এমন বস্তু, মাইক বাজানো, পটকা ও বাজি ফোটানো, বিস্ফোরক দ্রব্য, দেশীয় যে কোন অস্ত্র এবং আগ্নেয়াস্ত্র বহন থেকে যাত্রীদের বিরত থাকতে হবে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবস্থানকালীন সবসময় টোকেন ও টিকেট নিজের সঙ্গে রাখতে হবে। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ বশিরুল আল-মামুন জানান, পশ্চিম বনবিভাগে অভিযান পরিচালনার জন্য বিভিন্ন টিম গঠন করা হবে। তীর্থযাত্রীরা যাতে নিবিঘেœ চলাচল করতে পারে তার জন্য সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে। রাসমেলাকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরী করা হবে। র‌্যাব সহ আইন শৃংখলা বাহিনী সার্বক্ষণিক টহলে নিয়জিত থাকবে।

 





উপকূল এর আরও খবর

উপকূলের সংকট নিরসনে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান উপকূলের সংকট নিরসনে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান
বঙ্গোপসাগরে বৈরী আবহাওয়ায় চারদিন যাবৎ;মাছধরা বন্ধ দুবলারচরে হাজার হাজার জেলে অলস সময় পার করছেন বঙ্গোপসাগরে বৈরী আবহাওয়ায় চারদিন যাবৎ;মাছধরা বন্ধ দুবলারচরে হাজার হাজার জেলে অলস সময় পার করছেন
পাইকগাছায় উপকূল দিবস পালিত পাইকগাছায় উপকূল দিবস পালিত
১২ নভেম্বর উপকূল দিবস ঘোষিত হোক ১২ নভেম্বর উপকূল দিবস ঘোষিত হোক
উপকূলের সংকট নিরসনে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন উপকূলের সংকট নিরসনে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন
বঙ্গোপসাগরে মাছ আহরণে জন্য পাইকগাছার জেলে পল্লীতে ট্রলার তৈরির ধুম বঙ্গোপসাগরে মাছ আহরণে জন্য পাইকগাছার জেলে পল্লীতে ট্রলার তৈরির ধুম
পাইকগাছা শিবসা নদীর চরে আড়াই মন ওজনের শুশুক উদ্ধার পাইকগাছা শিবসা নদীর চরে আড়াই মন ওজনের শুশুক উদ্ধার
উপকূলীয় অঞ্চলকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করার দাবী উপকূলীয় অঞ্চলকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করার দাবী
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত খুলনার উপকূলীয় এলাকা পরিদর্শন করলেন বেলজিয়ামের রানি জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত খুলনার উপকূলীয় এলাকা পরিদর্শন করলেন বেলজিয়ামের রানি
শ্যামনগরে উপকূল দিবসে উপকূলের মানুষের বাঁচার দাবী শ্যামনগরে উপকূল দিবসে উপকূলের মানুষের বাঁচার দাবী

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)