মঙ্গলবার ● ২১ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » সুন্দরবন » শ্যামনগরের বনজীবী মুজিবুরের ডান পা খেয়ে ফেলেছে হিংস্র বাঘ
শ্যামনগরের বনজীবী মুজিবুরের ডান পা খেয়ে ফেলেছে হিংস্র বাঘ
এস ডব্লিউ; বন বিভাগের থেকে অনুমতিপত্র নিয়ে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন মুজিবর রহমান। তবে এবার আর জীবন নিয়ে ফিরতে পারেননি এই বনজীবী। অনিশ্চিত এ যাত্রায় এবার বাঘের আক্রমণে জীবনটাই হারিয়েছেন। পরিবারে এখন চলছে আহাজারি। সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণের ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পর মুজিবরের মরদেহ উদ্ধার করে বন বিভাগ।
বাঘের আক্রমণে নিহত মুজিবর রহমান (৫০) শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের পারশেখালী গ্রামের আক্কাজ আলী গাজীর ছেলে। সোমবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের পায়রাটুনি খালে কাঁকড়া ধরার সময় বাঘের আক্রমণে নিহত হন তিনি।পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালীনি স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান আহম্মেদ জানান, আজ মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বাঘের আক্রমণে নিহত মুজিবর রহমানকে পায়রাটুনি খাল এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। উপকূলে ফিরিয়ে আনতে বিকেল ৪টা বেজে যায়। ফিরিয়ে আনার পর মরদেহটি তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।তিনি বলেন, মুজিবর রহমানের ঘাড়ে আক্রমণ করে বাঘটি। এরপরে বনের ভেতরে নিয়ে যায়। মুজিবরের ডান পা পুরোটাই খেয়ে ফেলেছে বাঘে। এছাড়া শরীরের বাকি অংশটুকু অক্ষত রয়েছে। মরদেহটি উদ্ধার করা সম্ভব না হলে পুরো শরীরটাই হয়তো বাঘে খেয়ে ফেলতো।সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের আয়ের প্রধান মাধ্যম সুন্দরবন। মধু আহরণ, কাঁকড়া, মাছ ধরতে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন বনজীবীরা। জীবন নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলেও জীবন নিয়ে ফিরতে পারবেন কি না সেই নিশ্চয়তা নেই উপকূলীয় এই বনজীবীদের। মুজিবর রহমান ছিলেন সেই বনজীবীদের একজন।
পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের কৈখালী স্টেশন অফিসার হারুন-অর রশিদ জানান, বন বিভাগ, কোস্টগার্ড ও টাইগার টিমের সদস্যরা একযোগে মরদেহ উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। একপর্যায়ে গহিন অরণ্যের মধ্যে মরদেহটি পাওয়া যায়। পরে মরদেহটি ঘাড়ে তুলে ফিরিয়ে আনা হয় নৌকায়।
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্চের কর্মকর্তা এমএ হাসান বলেন, কৈখালী ফরেস্ট স্টেশন থেকে অনুমতিপত্র নিয়ে মুজিবর রহমান তিন দিন আগে কাঁকড়া ধরার জন্য একটি দলের সঙ্গে সুন্দরবন গিয়েছিলেন। পায়রাটুনি খালে বাঘের আক্রমণে নিহত হন তিনি। একই স্থানে ২০২০ সালে একজন মৌয়ালও বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছিলেন। বন বিভাগের পক্ষ থেকে তদন্ত কার্যক্রম শেষে নিহত মুজিবর রহমানের পরিবারকে সরকারিভাবে সহায়তা প্রদান করা হবে।