সোমবার ● ২৭ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » বিবিধ » ৪৭ বছর হলো মোংলা পোর্ট পৌরসভার নেই নিজস্ব ভবন
৪৭ বছর হলো মোংলা পোর্ট পৌরসভার নেই নিজস্ব ভবন
মোঃএরশাদ হোসেন রনি, মোংলা
মোংলা বাংলাদেশের ২য় সামুদ্রিক বন্দর।পৃথিবীর সববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের কোন ঘেঁষেই এ বন্দরের অবস্থান।মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠার হওয়ার ২৫ বছর পর মোংলা পোর্ট পৌরসভার জন্ম হয়।মোংলা পোর্ট পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর ৪৬ বছর পেরিয়ে ৪৭ বছরে পা দিলেও এখনো নেই তাদের নিজস্ব কোন ভবন। এত বছর পরও নিজস্ব জায়গার অভাবে পৌরসভার কোনো ভবন হয়নি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভবন ভাড়া নিয়ে সেই ভবনেই চলছে মোংলা পোর্ট পৌরসভার অফিসিয়াল কার্যক্রম।তৃতীয় শ্রেণির পৌরসভা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে মোংলা পোর্ট পৌরসভা বাংলাদেশের একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা।
১৯৭৫ সালের ১ ডিসেম্বর বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে প্রতি মাসে ২২ হাজার টাকায় ২৭ শতাংশ জমি ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম শুরু হয় মোংলা পোর্ট পৌরসভার । এভাবে কেটে যায় প্রায় ৩৬ বছর।এরপর পৌরসভার নিজস্ব জায়গা না থাকায় ২০১১ সাল থেকে পৌরসভার কার্যক্রম চলছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের তিনতলা বিশিষ্ট জরাজীর্ণ পরিত্যক্ত একটি ভবনে। যেটি একসময় মোংলা বন্দরে কর্মরত ডক শ্রমিকদের হাসপাতাল হিসাবে ব্যবহারিত হতো। ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী জারাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ন হওয়ায় হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,মোংলা পোর্ট পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের টি এন্ড টি’র পাশে জরাজীর্ণ ৩ তলা ভবনেই চলছে পৌরসভার অফিসিয়াল কার্যক্রম। ভবনের নিচ তলায় রয়েছে করশাখা,জন্ম নিবন্ধন শাখা,লাইসেন্স শাখা,স্বাস্থ্য শাখা,ষ্টোর রুম ও কাউন্সিলরদের কার্যালয়। ২ তলায় রয়েছে হিসাব শাখা,প্রকৌশলী শাখা,পানি শাখা,বিদ্যুৎ শাখা,ডিজিটাল শাখা,ডেসপাস শাখা,কনফারেন্স রুম,সচিব, প্রকোশলী,মেয়রের কার্যালয়।তয় তলার একটি রুমে রয়েছে পৌরসভার যাদুঘর।
তিনতলা বিশিষ্ট ভবনটির বিভিন্ন স্থান থেকে পলেস্তরা খুলে পড়েছে। সামনের অংশের রড বের হয়ে গেছে। পিলারে ফাটল ধরেছে।ছাদের রেলিং ভেঙে পড়েছে কয়ক জায়গা থেকে। অত্যন্ত জরাজীর্ণ হওয়ায় ঝুঁকি মাথায় নিয়েই এখানে কাজ করছেন মেয়রসহ ৩৫ জন স্থায়ী এবং ১০৫ জন অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী।ঝুঁকি নিয়েই সেবা নিতে হচ্ছে পৌরসভার নাগরিকদের।
পৌর ভবন সম্পর্কে মোংলা পোর্ট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃইউনুছ মাষ্টার বলেন মোংলা উপজেলার সব কয়টি ইউনিয়নেও এর চেয়ে ভালো ভবন রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে আমাদের পৌরসভায় বিভিন্ন কাজ নিয়ে যেতে হচ্ছে।প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হওয়া সত্বেও মোংলা পোর্ট পৌর ভবনের এই দূর্দশা। বিষয়টি আসলেই খুব কষ্ট দায়ক। বিষয়টির প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান বলেন আমাদের অনেক দুঃখ।মোংলা পোর্ট পৌরসভা ৪৬ টি বছর পার হয়ে ৪৭ বছরে পা দিলেও আমরা পৌরসভার জন্য কোন স্থায়ী জায়গায় ভবন করতে পারি নাই। অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে নাগরিকদের সেবা দিতে হচ্ছে আমাদের।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর দায়িত্ব বুঝে নিয়ে আমি বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছি। জেলা প্রসাশকের কাছে ৫২ শতাংশ জায়গা চেয়ে আবেদনও করেছি। বিকল্প হিসেবে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের কাছেও জায়গার জন্য আবেদন জানিয়েছি। তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।নিজস্ব জায়গায় নিজস্ব ভবন হলে পৌর সভার নাগরিক সেবার কার্যক্রমের গতিশীলতা বাড়বে বলেও জানান তিনি।