শিরোনাম:
পাইকগাছা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
প্রথম পাতা » পরিবেশ » গ্রীষ্মে পাখিদের প্রজননের জন্য গাছে গাছে কৃত্রিম বাসা
প্রথম পাতা » পরিবেশ » গ্রীষ্মে পাখিদের প্রজননের জন্য গাছে গাছে কৃত্রিম বাসা
৩১৬ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

গ্রীষ্মে পাখিদের প্রজননের জন্য গাছে গাছে কৃত্রিম বাসা

  ---বাংলাদেশের দেশিয় বা আবাসিক পাখিদের এখন প্রজনন মৌসুম চলছে। মার্চ থেকে সেপ্টম্বর মাস পর্যন্ত বিভিন্ন গোত্রীয় ও পরিবারভুক্ত পাখিদের প্রজননকাল। পাখিদের বাসা বাঁধতে এবং ডিম পাড়ার দৃশ্য বসন্ত ঐতিহ্যকে জাগিয়ে তোলে।  অনেক পাখি বসন্তে প্রজনন করে এবং ডিম দেয়।তবে বেশ কয়েকটি প্রজাতি গ্রীষ্মে প্রজনন করে না। কিছু শীতের প্রথম দিকে শুরু হয়, কিছু গ্রীষ্মের শেষের দিকে এবং অন্যরা প্রজনন করে সারা বছর ধরে।

আমাদের দেশে বড় গাছপালা নির্বিচারে নিধনের ফলে এদেশের আবাসিক পাখিদের প্রজননের জন্য যে আবাস প্রয়োজন তা বিলুপ্ত হচ্ছে। প্রকৃতি ও পরিবেশের বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে বিচিত্র প্রজাতির পাখি। কিন্তু পাখিদের আবাসস্থল নিরাপদ থাকছে না।পাখির প্রজনন ও বিচরণক্ষেত্র দিন দিন শিকারিদের দখলে চলে যাচ্ছে। এ ছাড়া কৃষক ও জেলেদের অসচেতনতার কারণে পাখির অভয়ারণ্য হুমকির মুখে পড়েছে।---

বৈশাখ মাস থেকে এসব পাখিরা বিশেষ করে ঝুঁটি শালিক, টুনটুনি, ভাত শালিক, দোয়েল, কুটুরে প্যাঁচা, কাঠ শালিক, চড়ুঁই পাখিরা প্রজনন ঘটায়। এই সময় এসব পাখিদের বাসা বাঁধবার জন্য নির্দিষ্ট জায়গার প্রয়োজন হয়। যেমন বড়সড় গাছের কোটর, নারকেল গাছের ফোঁকর সহ পুরনো দালানের ভাঙ্গা ভেন্টিলেটার। এই জায়গাগুলোই এ সব পাখিদের বাসা বাঁধবার প্রকৃত স্থান। এ সকল জায়গা পাখিদের জন্য নেই বললেই চলে।

পাখির জন্য নিরাপদ প্রজনন ও অভয়ারণ্য গড়ে তুলতে পাইকগাছায় গাছে গাছে বাঁধা হয়েছে মাটির পাত্র। সেসব পাত্রে পাখি বাচ্চাও দিচ্ছে। পরিবেশবাদী স্থানীয়  সংগঠন বনবিবি এলাকার গাছে গাছে পাখির বাসার জন্য মাটির পাত্র বেঁধে দিচ্ছে। দেখা গেছে, বিভিন্ন গাছে বাঁধা মাটির পাত্রে পাখি বাসা তৈরি করেছে, ডিম পেড়েছে ও বাচ্চা ফুটিয়েছে।

বনবিবির সভাপতি সাংবাদিক প্রকাশ ঘোষ বিধান জানান, গাছে বাঁধা মাটির পাত্রে পাখি বাসা তৈরি করায় আমাদের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে সাড়া পড়েছে। গাছে গাছে বাঁধা হচ্ছে মাটির পাত্র, ছোট ঝুড়ি,টিন- কাঠের বাসা ও বাঁশের তৈরি বাসা। উপজেলার সরল মেইন সড়কের পাশে বট গাছে বাঁধা মাটির পাত্রে শালিক বাসা বেঁধেছে। নতুন বাজারের পাশে বকুল ও মেহগনি গাছে বাঁধা মাটির পাত্রে দোয়েল ও  চড়ুই পাখি বাসা বেঁধেছে। গোপালপুর স্কুলের পাশের মেহগনি গাছে ও বোয়ালিয়া কপোতাক্ষ নদের তীরে বটগাছে দোয়েল পাখি বাসা বেঁধেছে। উপজেলায় বিভিন্ন গাছে বাধা প্রায় দুল শতাধিক কৃত্রিম পাখির বাসায় পাখি বাসা তৈরি করেছে।

এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত পাখিদের প্রজননের সময়। এপ্রিল থেকে বাসা বানাতে শুরু করে পাখি। এক সময় জলাশয় ও ধানখেতে ফাঁদ, জাল, বিষটোপ দিয়ে পাখি শিকার করা হতো। পাখি রক্ষায় সচেতনতামূলক লিফলেট ও উদ্বুদ্ধকরণ সভা করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন গাছে প্রায় ১ হাজার ৭০০ মাটির পাত্র স্থাপন করা হয়েছে। তবে বিভিন্ন সময় ঘূর্ণিঝড়ে গাছের ডালপালা ভেঙে প্রায় চার শতাধিক মাটির পাত্র ভেঙ্গে গেছে। যেসব গাছে মাটির পাত্র ভেঙে গেছে, সেখানে পুনরায় বাসা স্থাপন করা হচ্ছে।---

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন, বনবিবির কৃত্রিম বাসা তৈরির এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এর ফলে আমাদের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হবে। পাখিরা ফিরে পাবে নিরাপদ আবাসস্থল। পাখি শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়, মানুষের উপকারী বন্ধু। তাই পাখির সুরক্ষায় সবার সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৭২২টি প্রজাতির পাখির উপস্থিতি নথিভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে কমবেশি ৩৪০টি প্রজাতি আবাসিক। এরা সারা বছর দেশের ভৌগোলিক সীমানায় থাকে এবং বংশবৃদ্ধি করে। বাকি প্রায় ৩৭০ প্রজাতি পরিযায়ী।অল্প কিছু প্রজাতি বাদে বেশির ভাগ পরিযায়ী পাখি আসে শীতকালে। তার মানে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় ওরা এ দেশে আসে, বাস করে এবং সময়মতো আগের আবাসে ফিরে যায়। এরা পরিযায়ী পাখি নামে পরিচিত।

প্রজননের সময় পাখিদের জোড়া বাঁধার আকাঙ্খা, ঘর বাঁধার স্বপ্ন, প্রেম বিনিময় খুবই লক্ষ্যণীয় একটি ঘটনা। যারা পাখি নিয়ে কাজ করেন ও ছবি তুলেন একমাত্রই তারাই পাখিদের প্রেম বিনিময়ের কৌশলগুলি পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। বাহারি রঙের এসব পাখির খুনসুটি আর ছোটাছুটি যে কারো মনকে উদ্বেলিত করে তোলে।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)