

শুক্রবার ● ১ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » পরিবেশ » বছরে তৈরি প্লাস্টিক বর্জ্যের ৬০ ভাগ পরিবেশে মিশছে
বছরে তৈরি প্লাস্টিক বর্জ্যের ৬০ ভাগ পরিবেশে মিশছে
নদী ও পরিবেশে মেশা পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য শস্য, মাছ ও প্রাণীর শরীরে ঢুকে মানুষের জীবনচক্রে চলে আসছে।পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আইন করা হলেও, কার্যকর প্রয়োগের অভাবে প্লাস্টিক থেকে পরিবেশ দূষণ শুধু অব্যাহতই নয় বরং উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, বছরে পৃথিবীতে ৪০০ মিলিয়ন টন এবং এর মধ্যে বাংলাদেশ প্রায় ৩ হাজার টন প্লাস্টিক উৎপাদন হয়। বিশ্বব্যাপী ১১ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হয়। দেশে বছরে এখন ৮ লাখ ২১ হাজার ২৫০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর ৪০ শতাংশ, অর্থাৎ ২ লাখ ২৮ হাজার টনের মত রিসাইকেল বা পুনঃব্যবহার হয়। বাকি বর্জ্য পরিবেশে পড়ে থাকে।
সারাদেশের যে বর্জ্য উৎপন্ন হয়, তার ৩০ শতাংশের বেশি হয় রাজধানী ঢাকায়। দেশের প্রধান শহরটিতে বছরে প্রায় আড়াই লাখ টন, অর্থাৎ দিনে ৬৮১ টনের মত বর্জ্য উৎপন্ন হয়। সারা দেশে এর পরিমাণ ২ হাজার ২৫০ টন।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী সারা দেশের মানুষ বছরে মাথাপিছু ৯ কেজি বর্জ্য উৎপন্ন করলেও রাজধানীতে এটি দ্বিগুণ বা ১৮ কেজি। দেশে উৎপাদিত প্লাস্টিক বর্জ্যের ৬০ শতাংশ রাস্তাঘাট ও নদীতে যাচ্ছে। মাছ ও বিভিন্ন প্রাণীর শরীরে ঢুকে সেগুলো মানুষের জীবনচক্র ও শরীরে চলে আসছে।
বাংলাদেশে ২০০২ সালে পলিথিন শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। টিআইবি তথ্য মতে,বৈশ্বিক মোট প্লাস্টিক দূষণের ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ বাংলাদেশে হয়ে থাকে। পরিবেশ দূষণ রোধে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ।এ ছাড়া জৈব রাসায়নিক সারে প্রচুর পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকায়, তা কৃষিকাজে ব্যবহারের ফলে স্থায়ীভাবে মাটি দূষিত হচ্ছে।
প্লাস্টিক পলিথিন বর্জ্যসহ ব্যাপকভাবে বর্জ্য ফেলার কারণে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা ও কর্ণফুলী নদী বাংলাদেশের অন্যতম দূষিত নদীতে পরিণত হয়েছে। পলিথিনের সর্বগ্রাসী রূপ দৃশ্যমান হচ্ছে। প্লাস্টিক দূষণের কারণে আমাদের বাস্তুতন্ত্র ও ভূমির ব্যাপক দূষণ ঘটায় গাছপালা ও অন্যান্য প্রাণীর অস্তিত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন।
পরিবেশ সুরক্ষায় গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের মত পলিথিন কারখানা বন্ধে অভিযান পারিচালনা, পলিথিন তৈরির কাঁচামাল আমদানি প্রক্রিয়া বন্ধ, পলিথিনের বিকল্প পণ্য হিসেবে পাটজাত, কাগজের অথবা কাপড়ের পণ্য ব্যবহার বৃদ্ধি, পলিথিন ব্যবহার বন্ধে জরিমানাসহ আইনের প্রয়োগ এবং পলিথিন মজুদ ও বাজারজাতকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ব্যবস্থা নিতে কার্যকর ও স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।