

বুধবার ● ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » বিশেষ সংবাদ » ডাক্তার পঙ্কজ কান্তি মণ্ডলের হাতের ছোঁয়ায় পাল্টে গেছে শ্রীপুরের দোরাননগর গ্রামের চিত্র
ডাক্তার পঙ্কজ কান্তি মণ্ডলের হাতের ছোঁয়ায় পাল্টে গেছে শ্রীপুরের দোরাননগর গ্রামের চিত্র
মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার কাদিরপাড়া ইউনিয়নের একটি গ্রাম দোরাননগর। গড়াই নদীর তীরবর্তী হওয়ায় প্রতি বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের কবলে পড়ে গ্রামটি। প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় গ্রামটি অবহেলিত। গ্রামটিতে শুধুমাত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস। সরকারি উদ্যোগে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া না লাগলেও ওই গ্রামের বাসিন্দা ডাক্তার পঙ্কজ কান্তি মণ্ডলের নিজ অর্থায়নে করা বিভিন্ন কাজে গ্রামের চিত্র সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। তিনি বর্তমানে ঢাকা মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।
সরেজমিনে দোরাননগর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, লাঙ্গলবাঁধ-ওয়াপদা সড়ক থেকে দোরাননগর গ্রামে ঢুকতেই চোঁখে পড়ে নাম ফলক ও সোলার লাইট। রাতে রাস্তার দু-পাশে সোলার লাইটের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছে গ্রামটি। যার ফলে গ্রামে চোরের উপদ্রব অনেক কমেছে। গ্রামে ঢোকার রাস্তার কিছু অংশ পাকা হলেও অনেকটা রাস্তায় কাঁচা রয়েছে। সরকারি রাস্তাটি নদী গর্ভে চলে গেছে। ডাক্তার পঙ্কজ কান্তি মণ্ডল নিজ অর্থায়নে বাগান কেটে, বড় বড় গর্ত ও পুকুর বন্ধ করে প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি পুরো রাস্তায় সোলার লাইট লাগিয়ে দিয়েছেন। তিনি নদীর ভাঙন রোধে গড়াই নদীর ভিতর ৪৫ টি বাঁধ নির্মাণ করেছেন। যার ফলে নদী ভাঙন কবলিত একটি গ্রাম নদী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে। মানুষের বিনোদনের জন্য নদীর তীরবর্তী নিজের জায়গায় মায়ের নামে দেবাদাসী ড্রিম পার্ক নির্মাণ করেছেন। প্রতিনিয়ত দুরদুরান্ত থেকে বিনোদনের জন্য পার্কে আসছে। শিশুদের জন্য ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। বিভিন্ন সময় বিনামূল্যে রোগী দেখেন এবং ঔষধ দিয়ে থাকেন। এ সকল মহতি উদ্যোগের সকল খরচ বহন করেছেন ডাক্তার পঙ্কজ কান্তি মণ্ডল। গ্রামবাসী তার এমন উদ্যোগে রাস্তাটি পঙ্কজ কান্তি মণ্ডল সড়ক নামে নামকরণ করেছে। তাঁর এ ভাল কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ২০২৪ সালে মাগুরার তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবু নাসের বেগ পুরস্কার প্রদান করেন। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল ডাক্তার পঙ্কজ কান্তি মণ্ডলের বিরদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে আসছে।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী জানান, ডাক্তার পঙ্কজ কান্তি মণ্ডল একজন মহৎ মানুষ। তাঁর মত একজন মহৎ ব্যক্তিকে পেয়ে আমরা ধন্য। তিনি গ্রামের জন্য সর্বস্ব টুকু করে আসছেন। তিনি নিজ অর্থায়নে রাস্তা নির্মাণ, রাস্তায় সোলার লাইট লাগানো, শিশুদের জন্য ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, দোরাননগর, বিষ্ণুপুর ও গঙ্গারামখালী পর্যন্ত নদী ভাঙন রোধে নদীর ভিতর ৪৫ টি বাঁধ নির্মাণ, মানুষের বিনোদনের জন্য পার্ক নির্মাণ, বিনামূল্যে রোগী দেখা ও ঔষধ প্রদানসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে তিনি জড়িত। রাস্তাটি তাঁর নিজ অর্থায়নে করায় আমরা গ্রামবাসী তাঁর নামে রাস্তাটির নামকরণ করেছি। অনেকের তা সহ্য হচ্ছে না। যার কারণে তারা এ ভাল মানুষটির পিছে লেগেছে। তাদের অভিযোগ, নাম ফলকের কারণে না কি তাদের চলতে সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের বাড়ির সামনে আমাদের কোন সমস্যা হচ্ছে না যত সমস্যা তাদের।
এ বিষয়ে কাদিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন খাঁন জানান, ভাগ্য ক্রমে আমার ইউনিয়নের একজন ক্ষণজন্মা পুরুষ ডাক্তার পঙ্কজ কান্তি মণ্ডল জন্মগ্রহন করেছেন। তিনি গড়াই নদীর ভিতর বাঁধ নির্মাণ করে ভাঙন কবলিত দোরাননগর গ্রামটিকে রক্ষা করেছেন। তা না হলে গ্রামটি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যেত। এ কাজে তিনি প্রচুর টাকা খরচ করেছেন। তিনি প্রতিমাসে গ্রামে এসে ফ্রি রোগী দেখেন এবং বিনামূল্যে ঔষধ প্রদান করেন। মানুষের বিনোদনের জন্য একটি পার্ক করে দিয়েছেন। একই সাথে তিনি গ্রামের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ওই রাস্তাটি তাঁর নামে নামকরণের প্রস্তাব দিয়েছে। এরই মধ্যে শ্রীপুর উপজেলা প্রশাসন রাস্তাটি তাঁর নামে নামকরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছেব। গ্রামের মুষ্টিমেয় কিছু লোকজন এ ভাল কাজের বিরোধিতা করেছে। তাদের এ কর্মকাণ্ডে তাদেরই লোকজন ঘৃণাভরে দেখছে। আশা করছি তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। ডাক্তার পঙ্কজ কান্তি মণ্ডল আরো ভাল কাজ করুন এ প্রত্যাশা আমাদের ইউনিয়নবাসীর।
এ বিষয়ে ডাক্তার পঙ্কজ কান্তি মণ্ডল মুঠোফোনে জানান, আমি যখন বাড়িতে যাই ২০১২ সাল থেকেই ফ্রি রোগী দেখি। দুরদুরান্ত থেকে রোগী আসে। আমি গড়াই নদী ভাঙন রোধে ২০২০ সাল থেকে কাজ করেছি এখনো এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। রাস্তায় চলাচলের মত কোন পরিবেশ ছিল না। আমি নিজ অর্থায়নে রাস্তা নির্মাণের কাজ করেছি। রাস্তার পাশে সোলার লাইট লাগিয়ে দিই যাতে রাতে মানুষগুলো নির্বিঘ্নে চলতে পারে। শিশু শিক্ষার জন্য একটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। বিনোদনের জন্য পার্ক করে দিয়েছি। আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে গ্রামের মানুষগুলো জন্য করে আসছি। আমি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। আমার রাজনৈতিক কোন দলের সাথে সম্পৃক্ততা নেই। আমি ডাক্তার, আমি মানুষের সেবক। আমি যতদিন বেঁচে থাকবো মানুষের সেবায় কাজ করে যাবো যত বাঁধায় আসুক।