শিরোনাম:
পাইকগাছা, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

SW News24
সোমবার ● ২ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » সুন্দরবন » তিন মাসের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
প্রথম পাতা » সুন্দরবন » তিন মাসের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
২৮ বার পঠিত
সোমবার ● ২ জুন ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

তিন মাসের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

 --- সরকার ও বন বিভাগের নির্দেশনায় রোববার থেকে সুন্দরবনে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ হচ্ছে দেশী-বিদেশী পর্যটক প্রবেশ ও বনের নদী-খালে সকল প্রকারের মাছ আহরণ। রোববার থেকে মাছের প্রজনন মৌসুম শুরু হওয়ায় বনের নদী-খাল নিরাপদ ও বন্যপ্রানীদের বিচরণ নির্বিঘ্নে এবং প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা এ তিন মাসের জন্য মাছ ধরা ও পর্যটক প্রবেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ সময় পর্যটক জোঝাই লঞ্চ, জালী বোট, ট্রলার বা অন্যান্য নৌযানসহ পর্যটক প্রবেশ, সাধারণ মানুষের চলাচলসহ সুন্দরবনের অভ্যন্তরে নদী-খালে মাছ ধরাসহ সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে বলে জানায় মৎস্য ও বন বিভাগের সংশ্লিষ্টরা। তবে জেলেদের দাবি ৩ মাস নয় ইলিশ সংরক্ষণসহ ৫ মাসই বন্ধ থাকে সাগর ও সুন্দরবন।

দুশ্চিন্তায় পর্যটকবাহী নৌযান ও জেলে পরিবার। ভৌগোলিক কারণেই সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল এ সকল মানুষগুলো খুবই অসহায়। উপকূলের জেলে পল­ীসহ অনেক জেলে পরিবারের বসবাস, যারা বংশপরম্পরায় বনজীবী। তারা সারা বছর সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে মাছ ও কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।

বন বিভাগ ও মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ ও বন্যপ্রাণী প্রজনন সুরক্ষা সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ ও পর্যটক প্রবেশ বন্ধ থাকত। কিন্তু ২০২২ সালে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে এ নিষেধাজ্ঞা এক মাস বৃদ্ধি করে ১ জুন থেকে তিন মাসের জন্য সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেই থেকেই অদ্যাবদি পর্যন্ত ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস বনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ ও বনে বন্যপ্রাণীদের প্রজনন ও চলাচল নির্বিঘœ করতে পর্যটক প্রবেশও বন্ধ ঘোষণা করে দেয় সরকার।

বন বিভাগ ও মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এখন সুন্দরবনে ২৫১ প্রজাতির মাছের প্রজনন মৌসুম। তাই বন বিভাগ থেকে জেলেদের জন্য সব ধরনের পারমিট বন্ধ রাখার জন্য কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কারণ এই সময়টায় সাগর থেকে মাছ উপরের দিকে উঠে আসে নিরাপদে ডিম ছাড়ার জন্য। সেখানে নিরাপদ হিসেবে সুন্দরবনের বিভিন্ন অভয়ারণ্যসহ বনের খাল-নদীকে বেছে নেয়া হয়। বনের নদী ও খালে নৌযান চলাচল করলে মাছের ডিম ছাড়তে সমস্যা হবে তাই সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানায় মৎস্য বিভাগ। এ ছাড়া বনে ৩১৫ প্রজাতির পাখি, ৩৫ প্রকারের সরীসৃপ, ৪২ প্রকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে। এখন তাদের প্রজনন মৌসুম চলছে। এসব প্রাণীর মধ্যে উলে­খ যোগ্য রয়েছে বাঘ, মায়াবি হরিণ, শুকর, বানর, কুমির, ডলফিন, ভোঁদড়, বন বিড়াল ও মেছো বাঘসহ অন্যান্য বহু প্রজাতির বন্যপ্রাণী।

সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৪ দশমিক ১ বর্গকিলোমিটার, যা পুরো সুন্দরবনের আয়তনের ৩১ দশমিক এক পাঁচ ভাগ। সুন্দরবনের জলভাগে ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে। জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাস প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনের নদী ও খালে থাকা বেশির ভাগ মাছ ডিম ছাড়ে বংশ বৃদ্ধির জন্য।

পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রানী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্টার হাওলাদার আজাদ কবির জানান, জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাস সুন্দরবনের নদী-খালের মাছের প্রজনন মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। এই তিন মাস সুন্দরবনের নদী ও খালে থাকা বেশির ভাগ মাছ ডিম ছাড়ে। এ ছাড়া এই সময়ে বন্যপ্রাণীরও প্রজনন মৌসুম চলে। এ সময় বনের খালে যদি নৌযানের শব্দ হয় তখন বন্যপ্রাণীরা ভয়ে প্রজননে সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই এই তিন মাস বনে পর্যটক ও জেলে না গেলে বনের জীববৈচিত্র ও বন্যপ্রাণী নিরাপদে থাকবে। ইতিপূর্বে বেশ কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে সুন্দরবনে প্রাণী ও জীববৈচিত্রের যে ক্ষতি  হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে বহু বছর সময় লাগবে। তাই বন্ধের এই সময়টা যদি সুন্দরবনকে যার যার স্থান থেকে কঠোর নজরে রাখা যায় তা হলে নতুন করে আবার জীবন ফিরে পাবে বিশ্বের দরবারে পরিচিতি পাওয়া বাংলাদেশের  সৌন্দর্যের লীলা ভূমি আমাদের সুন্দরবন।

পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই দিপন চন্দ্র দাশ বলেন, সরকার তার রাজস্বের দিকে না তাকিয়ে সুন্দরবন ও বনে বিচরণকারী প্রাণীসহ বিভিন্ন খালের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য আগামী তিন মাস সুন্দরবনে পর্যটক ও জেলেদের প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। এই সময় আমাদের বন বিভাগের পক্ষ থেকে অসাধু মৎস্য আহরণকারী ও বিষ দিয়ে বন্যপ্রাণী নিধনকারীদের রুখতে কঠোর অবস্থানে থাকবে বনরক্ষীরা। এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় পূর্ব সুন্দরবনের সকল স্টেশন ও ফাঁড়ি অফিসে থাকা বনকর্মীদের বনে অভ্যন্তরে নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি, যদি এ সময় কেউ চোরাই পথে প্রবেশ করে তার বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নিবে বন বিভাগ।
ভৌগোলিক কারণেই সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল এ সকল মানুষগুলো খুবই অসহায়। মোংলায় জেলে পল­ীসহ অনেক জেলে পরিবারের বসবাস, যারা বংশপরম্পরায় বনজীবী। তারা সারা বছর সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে মাছ ও কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।





সুন্দরবন এর আরও খবর

সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে মধু আহরণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে মধু আহরণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন
সুন্দরবনে মধু আহরণে মৌসুম শুরু হলেও মৌয়ালদের আগ্রহ কম সুন্দরবনে মধু আহরণে মৌসুম শুরু হলেও মৌয়ালদের আগ্রহ কম
ঈদের ছুটিতে সুন্দরবন ঘুরে গেলেন রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত, কুটনৈতিকসহ ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল ঈদের ছুটিতে সুন্দরবন ঘুরে গেলেন রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত, কুটনৈতিকসহ ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল
ঈদ সামনে রেখে সুন্দরবনে হরিণ শিকারিচক্র বেপরোয়া ঈদ সামনে রেখে সুন্দরবনে হরিণ শিকারিচক্র বেপরোয়া
সুন্দরবনে রেড অ্যালার্ট জারি; বনরক্ষীদের ছুটি সীমিত সুন্দরবনে রেড অ্যালার্ট জারি; বনরক্ষীদের ছুটি সীমিত
সুন্দরবনের কলমতেজী এলাকায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস সুন্দরবনের কলমতেজী এলাকায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস
সুন্দরবনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে হরিণ শিকারী চক্র সুন্দরবনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে হরিণ শিকারী চক্র
প্রজনন মৌসুম সুন্দরবনে অসাধু ব্যক্তিরা কাঁকড়া শিকার করায় কাঁকড়া বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে প্রজনন মৌসুম সুন্দরবনে অসাধু ব্যক্তিরা কাঁকড়া শিকার করায় কাঁকড়া বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে
লিডার্স-এর আয়োজনে শ্যামনগরে বিনামূল্যে স্ত্রীরোগ ও মাতৃসেবা ক্যাম্প: সেবা পেল শতাধিক নারী লিডার্স-এর আয়োজনে শ্যামনগরে বিনামূল্যে স্ত্রীরোগ ও মাতৃসেবা ক্যাম্প: সেবা পেল শতাধিক নারী

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)