

বুধবার ● ১৮ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » কৃষি » মাগুরায় প্রথমবারের মতো আঙ্গুর চাষে সফল জামাল মন্ডল
মাগুরায় প্রথমবারের মতো আঙ্গুর চাষে সফল জামাল মন্ডল
শাহীন আলম তুহিন মাগুরা থেকে : এই প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আঙ্গুর চাষে সাফল্য পেয়েছে শালিখা উপজেলার ধনেশ্বরগাতি ইউনিয়নের পিপরুল গ্রামের জামিল মন্ডল নামের এক কৃষক । বাংলাদেশে আঙ্গুর চাষ হয় না,অনেকে শখের বশে বিভিন্ন স্থান থেকে আঙ্গুর চাষে সফল হয়নি । জামাল মন্ডল দীর্ঘদিন মালয়েশিয়া চাকুরি করতেন। তার স্ত্রী থাকতেন সৌদি আরবে। এ দুই দম্পতি বিদেশ থেকে চাকুরি শেষে নিজ গ্রামে ফিরে ২০ শতকে জমিতে গড়ে তোলেন আঙ্গুর বাগান। তার বাগানে এখন ধরেছে থোকায় আঙ্গুর । বাতাসে দোল যাচ্ছে সেই আঙ্গুর । জামাল মন্ডলের আঙ্গুর বাগান দেখতে প্রতিদিনই তার গ্রামের বাড়িতে ভিড় করছে উৎসুক মানুষ । কেউ তার বাগন ঘুরে দেখছে ,আবার কেউ জামাল মন্ডলের নিকট তার সাফল্যের গল্প শুনছে । জামাল মন্ডল এখন নিজ বাগানেই আঙ্গুর গাছের চারা উৎপাদন করে তা বিক্রি করছে । মাগুরার বিভিন্ন স্থানের মানুষ তার বাগানের চারা ক্রয় করে বাগান করার ইচ্ছা পোষন করছে।
উদ্যোক্তা জামাল মন্ডল জানান, আমি ও আমার স্ত্রী বিদেশ থেকে এসে আঙ্গুর বাগান করার ইচ্ছা পোষন করি। বিদেশে বিভিন্ন ফলের বাগান দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি । তারা খুব যতœ সহকারে বিভিন্ন ফলের বাগান করে । তা দেখেই আমি স্বপ্ন দেখি আঙ্গুর বাগান করার । আমি ভারত থেকে চোরাই পথে আসা ৬০টি আঙ্গুর গাছের চারা সংগ্রহ করি । যশোরের লেবু তলায় আমার ভাইরা ভাই থাকে । তার সহযোগিতায় আমি জমি প্রস্তুত করে পাতলা পাতলা করে আঙ্গুর গাছের চারাগুলো রোপন করি। আঙ্গুর চাষ করতে হলে প্রথমে জমির মাটি ভাগ ভাগ করে পিলি আকারে বেড তৈরি করতে হবে । তারপর বাঁশের চটার মাচা করতে হবে । চারা গাছ বড় হলে তার চারপাশে আগাছা গুলো সুন্দর ভাবে পরিস্কার করতে হবে । আস্তে আস্তে চারা গাছ আরো বড় হলে বাঁশের চটার লাঠির সাহায্যে গাছগুলো মাচাতে তুলতে হবে । সবসময় মতো সার ও পরিমান মতো পানি দিতে হবে মাঝে মাঝে । সাবের ক্ষেত্রে দেশি জৈব সার ব্যবহার করলে ভালো হয়। ৩-৪ মাসের মধ্যে গাছে ফুল আসে। তারপর ৬ মাসের মধ্যে গাছে ফল আসতে শুরু করে । এ চাষে প্রথমবার আমার খরচ হয়েছে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। এ বছর ২ লক্ষ টাকার ফল বিক্রির আশা আমার। এটি আমি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে করার ইচ্ছা পোষন করছি। ইতিমধ্যে আমি আমার বাগান থেকে আঙ্গুর গাছের চারা উৎপাদন করছি এবং তা বিক্রি করছি। মাগুরাসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ আসছে আমার বাগানে। তারা আঙ্গুর খাচ্ছে ,তৃপ্তি বোধ করছে এতেই আমি খুশি । আমি প্রতিটি চারা ২শ’টাকা দরে বিক্রি করছি।
জামাল মন্ডল আরো বলেন,আমার ২০ শতক জমিতে ২৫-৩০ মণ আঙ্গুর পাব বলে আশা পোষন করছি। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ইতিমধ্যে অনেক মহাজন আসছে আমার বাগানে। তারা বাগান দেখছে ,আঙ্গুর খাচ্ছে। পছন্দ হলে তা ক্রয় করছে। আমার বাগান দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক আঙ্গুর বাগান করার ইচ্ছা পোষন করছে। এ কাজে আমার স্ত্রী আমাকে সারাদিন সহযোগিতা করছে । তার সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণায় আমি এগিয়ে যাচ্ছি। চাষের কাছে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ নিচ্ছি। বেশি বৃষ্টি হলে আমার বাগানের ফল নষ্ট হয়। তাই ফল পেকে যাওয়ার সাথে সাথেই আমি উত্তোলন করি।