শিরোনাম:
পাইকগাছা, শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
মঙ্গলবার ● ২৮ মার্চ ২০১৭
প্রথম পাতা » নারী ও শিশু » পাটকেলঘাটায় সরুলিয়ায় হতদরিদ্র দীপালী দাসী স্বপ্ন প্রকল্পের মাটির কাজ করে স্বাবলম্বী
প্রথম পাতা » নারী ও শিশু » পাটকেলঘাটায় সরুলিয়ায় হতদরিদ্র দীপালী দাসী স্বপ্ন প্রকল্পের মাটির কাজ করে স্বাবলম্বী
৪৮৯ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ২৮ মার্চ ২০১৭
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পাটকেলঘাটায় সরুলিয়ায় হতদরিদ্র দীপালী দাসী স্বপ্ন প্রকল্পের মাটির কাজ করে স্বাবলম্বী

---

মো. রিপন হোসাইন ॥

স্বামী সংসার সবই আছে। তবে স্বামী বাক-প্রতিবন্ধী ,সংসারে ২টি ছেলেমেয়ে আছে । পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠি একজন হতদরিদ্র জীবন সংগ্রামী মহিলার নাম দীপালী দাসী (৪০)। প্রতিবন্ধী স্বামীর চিকিৎসা,ছেলেমেয়েদের মুখে দু’বেলা দুমুটো  অন্ন তলে দিতে দিনরাত অন্যের জমিতে দীপালী দিনমজুর হিসেবে কাজ করে ৪জন সংসার চালিয়ে আসছিল। জীবন সংগ্রামে জয়ী হতে চাইলেও দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জারিত । প্রতিদিন ভোর হলেই সংসারের চাকা সচল রাখতে অভূক্ত অবস্থায় চলে যেত দিনমজুরের কাজে । তবে এভাবে আর কতদিন। নিজের শরীরের দিকে লক্ষ্য রাখতে না পারায় সংসার  নিয়ে  একজন মহিলার পক্ষে ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠে।যতই দিন যায় ততই দীপালীর সংসার ব্যয়  বাড়াতে থাকে। কিন্তু শরীরে তো আর পারেনা । মনের জোরেই স্বামী সন্তানদের দিকে তাকিয়ে শুধু দু’বেলা দু-মুঠো অন্নের সন্ধানে যখন যে কাজ পায় যে সৎসামান্য মজুরীতে করে দেয়। কিন্তু শীর্নতায় হতে থাকে । রোগব্যাধি বাসা বেধেছে শরীরে । সংসারে নেমে আসতে থাকে ভোর অমানিশার অন্ধকার । কুল হারা মাঝির মত জীবন। তবুও সংসাবের মোহ তাকে বাঁচালেও জীবন তরী ডুবু-ডুবু ।

ঠিক এমনই সময় অর্থ্যাৎ ২০১৫ সালে আগষ্ট মাইকে বাঁজতে পায় পাটকেলঘাটা সরুলিয়া ইউনিয়নে স্বপ্ন প্রকল্পের ৩৬জন হতদরিদ্র মহিলা নিয়োগ করা হবে । শুনে দীপালী দাসী নির্ধারিত স্থানে এসে লটারীর মাধ্যমে কাজটি মিলে যায় ।এরপর ১৮ মাসে ৪৩০দিন কাজের চুক্তিতে রাস্তায় মাটি দিয়ে সংস্কারের কাজ শুরু করে। প্রতিদিন ২’শ টাকা হিসেবে পেতে শুরু করে । ইউএনডি বাংলাদেশের অর্থায়নে, বেসরকারী সংস্থার সুশিলনের সহযোগিতায় উৎপাদনশীল  সম্বাবনাময় কর্মের সুযোগ গ্রহনে নারীর সামর্থ উন্নয়ন ‘স্বপ্ন প্রকল্পের মৌলিক সেবা প্রদানের লক্ষে’ হতদরিদ্র মহিলাদের নিয়ে সাতক্ষীরা জেলার ৫টি উপজেলায় কাজ শুরু করে। তাদের প্রকল্পের কাজ পেয়ে সদস্য হিসেবে কাজ শেষে নিজ নামে ব্যাংক থেকে মজুরির টাকা উত্তোলনের সময় সঞ্চায় হিসেবে ৫০ টাকা করে রেখে দিতো।  বর্তমানে দিপালী দাসী সংসার চালিয়ে বাক প্রতিবন্ধী স্বামী চিকিৎসা করিয়ে ,সন্তানদের লেখা পড়ার খরচ  চালিয়েও তার ব্যাংক ২২ হাজার ১’শ ৫০ টাকা করে প্রত্যেকে এ্যাকাউন্টে রয়েছে।২০১৭ সালে ফেব্রুয়ারী মাসে প্রকল্পের প্রথম মেয়াদে শেষ হয়েছে। দিপালী দাসী পূর্বের অবস্থার দিনমুজুরি পাশা পাশি ছোটকাশিপুর তার গ্রামের বাড়ীতে একটি মুদি দোকার চালু করে মাত্র ৩হাজার টাকা দিয়ে শুরু করে বর্তমানে সেটা ৫০-৬০ হাজার টাকা মালসামগ্রী আছে।  ঐ মুদির দোকান থেকে প্রত্যেক দিনে ২’শ / ৪’শ টাকা উর্পাজন করে আসছে। বর্তমানে দিপালী দাসী সংসারে যে সু-বাতাস বইছে।   সাবলম্ববী  হয়ে উঠা দিপালী দাসী এই প্রতিবেদককে সাথে একান্ন আলাপচারিতায়,ছোট কাশিপুর ঋষি পাড়ার বাক প্রতিবন্ধী মান্দার দাসের স্ত্রী ২ সন্তানের জননী দিপালী দাসী । তিনি আরো জানান আমার স্বামী একজন বাক-প্রতিবন্ধী স্বামী,এক পুত্র ও এক কন্যা নিয়ে অনেক কষ্টে  দিনাতিপাত করতাম।  দিন মজুরী হিসেবে কাজ করে সংসার চালাতে হতো । তিনি  বলেন, তিন বেলা ঠিকমতো খেতে পারতাম না । ভাল পোশাক পরার মতো ভাগ্য ছিল না । স্বপ্ন প্রকল্পের কাজ পেয়ে এখন অনেক সুখী সংসার নিয়ে স্বামী ও সন্তান নিয়ে ভাল আছি । এমনি করে একই প্রকল্পের স্বাবলম্বী হয়েছেন অত্র ইউনিয়নে সরুলিয়া গ্রামের শরিফা,পাটকেলঘাটা (বস্তি) রুপা, ছোটকাশিপুর গ্রামে কল্পনা দাসী, লতা দাসী, তৈলকুপি গ্রামের শিরিনা, লালচন্দ্রটুর গ্রামের সালমা বেগসসহ অনেকে।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)