শিরোনাম:
পাইকগাছা, শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

SW News24
শুক্রবার ● ৩১ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » কৃষি » ডুমুরিয়ায় নিউটনের পানি কচু দেশের গন্ডি পেরিয়ে কোরিয়া।
প্রথম পাতা » কৃষি » ডুমুরিয়ায় নিউটনের পানি কচু দেশের গন্ডি পেরিয়ে কোরিয়া।
৮১৩ বার পঠিত
শুক্রবার ● ৩১ মে ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ডুমুরিয়ায় নিউটনের পানি কচু দেশের গন্ডি পেরিয়ে কোরিয়া।

---

অরুণ দেবনাথ, ডুমুরিয়া প্রতিনিধি: ডুমুরিয়ার সেই নিউটনের পানিকচু দেশের গন্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে কোরিয়া। দেশের সফল কৃষকদের তালিকায় সে এখন ১১তম। শুধুমাত্র কচু চাষ করেই তার এই সফলতা। শুধু কচু নিয়ে বসে নেই। এখন চাষ করছেন চুঁইঝাল, বিটি বেগুন, পেয়ারা এবং করেছেন গরুর খামার।

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রংপুর ইউনিয়নের ঘোনা মাদারডাঙ্গা গ্রামের নিউটন মন্ডল। মহানগরীর দৌলতপুর-শাহপুর সড়কের পাশে দিয়ে দেখা মেলে পানিকচুর ক্ষেত। তাকে এলাকায় এখন কচু নিউটন বললেই চেনে। একসময় নিউটন মন্ডল বেসরকারি পাটকলে কাজ করতেন। পাটকলে কাজের সময় শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা তাকে পেয়ে বসে। মিলের কাজ ছেড়ে দেন। অভাবের সংসারে কী করবেন। বাড়ির পার্শ্বে ৩৪ শতক জমি বর্গা নিয়ে শুরু করেন চাষাবাদ। লাভজনক না হওয়ায় ২০০৫ সালে তিনি জমির কিছু অংশে স্থানীয় জাতের পানিকচুর চারা রোপণ করেন। এরপর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন জমির পরিমাণ ৫৫ শতক। বর্গা নেওয়া এই জমির প্রতি বছরের ভাড়া দিতে হয় ১২ হাজার টাকা। এখন কচুরলতি, ফুল ও কচু এবং চারা বিক্রি করে প্রতিবছরের প্রায় ৫ লাখ টাকা আয় করেন। এলাকায় সুখ্যাতি হয়েছে বেশ। ঘেরের পাড় থেকে দেশি জাতের কিছু পানিকচুর চারা সংগ্রহ করে সম্পূর্ণ নিজস্ব পদ্ধতিতে চারা রোপণ করা হয়। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে গাছ লাগানো শেষ হয়ে যায়। তিন ফুট দূরত্বে কচুর চারা রোপণ করা হয়। কোদাল দিয়ে এক ফুট গভীর করে চাষ দেওয়া হয়। চারা লাগানোর পর জৈব ও রাসায়নিক সার দেন সুষমভাবে। রোপণের ৪৫ দিনের মাথায় লতি বিক্রির উপযোগী হয়। তার এ কচু ৭ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। প্রত্যেকটির ওজন হয় ২০/৩২ কেজি। নিজস্ব ভ্যানে করে খুলনা শহরে নিয়ে কচু বিক্রি করেন নিউটন। তথ্যপ্রযুক্তি (ফেস বুক) ব্যবহার করেও বিক্রির কার্যক্রম করে থাকেন তিনি। এখন সেই কচু কোরিয়ার পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি চলছে। ক্ষেত থেকে কচু তুলে পরিষ্কার করে ছিলে ফেলা হচ্ছে। পরে একহাত করে কেটে রোদে শুকাতে দেওয়া হয়। তিন-চারদিন শুকানোর পর সেই কচু খুলনা শহরে এনে কোরিয়ান বায়ারের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি।

কচু চাষি নিউটন মন্ডল জানান, এতদিন আমার কচু দেশের মধ্যে খুলনা, বরিশাল, ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগে গিয়েছে। এখন সেই কচু যাচ্ছে দেশের বাইরে। একসময় মানুষের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেও কেউ ফিরে তাকাতো না। এখন দেশের বিভিন্ন স্থানের মানুষ আমারে চেনে। অনেক বড় বড় মানুষ আমার ক্ষেত দেখতে আসে। শ্রম কখনো বিফলে যায় না। এখন একটাই স্বপ্ন মেয়েটা বড় হয়ে ডাক্তার হবে। এলাকার গরিব, দুঃখি মানুষের সেবা করবে।

নিউটনের স্ত্রী স্মৃতিলতা মালাকার জানান, শুরুর দিকে অনেক মানুষ অনেক কথা বলেছিল। আমরা থেমে যাইনি। আর এখন সেই কচুতে আমাদের পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। আমাদের মেয়েটি স্কুলে যাচ্ছে। গরুর খামার করেছি। পেয়ারার চাষ, বিটি বেগুন এবং চুঁইঝালের চাষাবাদও ভাল হচ্ছে।

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মোসাদ্দেক হোসেন জানান, নিউটন মন্ডল একজন ভাল কৃষক। তাকে নিয়মিত আমরা মনিটরিং করছি। প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। তার এই কচু বেশ টেস্টি। তার কচু এখন প্রসেসিং হচ্ছে কোরিয়া যাওয়ার জন্য।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)