শিরোনাম:
পাইকগাছা, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৮ আশ্বিন ১৪৩২

SW News24
বুধবার ● ১৩ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » কৃষি » প্রবল বর্ষণে মাগুরার শালিখায় ৮৫৫ হেক্টর জমির ধান পানির নিচে,বিপাকে কৃষক
প্রথম পাতা » কৃষি » প্রবল বর্ষণে মাগুরার শালিখায় ৮৫৫ হেক্টর জমির ধান পানির নিচে,বিপাকে কৃষক
১২২ বার পঠিত
বুধবার ● ১৩ আগস্ট ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

প্রবল বর্ষণে মাগুরার শালিখায় ৮৫৫ হেক্টর জমির ধান পানির নিচে,বিপাকে কৃষক

---শাহীন আলম তুহিন,মাগুরা : কয়েক সপ্তাহে প্রবল বর্ষণের ফলে মাগুরার শালিখা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ৮৫৫ হেক্টর জমির ফসলি ধান পানিতে তুলিয়ে গেছে। প্রবল এ বর্ষণের ফলে শালিখা উপজেলার ফুটকি নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফটকি নদীর এ অতিরিক্ত পানি প্লাবিত হয়ে বিভিন্ন ফসলি জমিতে ঢুকে পড়েছে। এ পানি ধানের জমি সহ বিভিন্ন সবজি  ফসলের মাঠে প্লাবিত হয়েছে ফলে এই এলাকার কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। সরজমিন  শালিখা উপজেলার তালখড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, এখানে বিভিন্ন ফসলের মাঠে নদীর পানি ঢুকে যাওয়ায় ধানের জমি, সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। পাশাপাশি শালিখা উপজেলার সিংড়া, তিলখড়ি, সেওজগাতী,ধাওখালি, দেবিলা,চতে,থৈ পাড়া,মানিকনগরসহ প্রায় ৪০টি গ্রাম ফটকি নদীর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। নদীর পানি ঢুকে পড়েছে বসত বাড়িতে ফলে বিপাকে পড়েছে গ্রামবাসী। অনেকে বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রামে। নদীর পানিতে ডুবে গেছে গ্রামের রাস্তাঘাট ফলে গ্রামবাসীরা হাটে বাজারে যেতে পারছেন না। চলছে কোন যানবাহন।
উপজেলার তালখড়ি ইউনিয়নের কৃষক মন্টু মন্ডল জানান, কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণের ফলে আমার দুই বিঘা জামে জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছে। নষ্ট হয়েছে ধানের বীজ। একমাস আগে এ জমিতে রোপন করা হয়েছিল ধানের বীজ। বর্ষণে ধানের চারা পানিতে তলিয়ে  নষ্ট হয়েছে। জমির পানি ঠিকমতো বের হতে পারছে না ফলে আমাদের চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে।
সেওজগাতি গ্রামের কৃষক ইন্দ্রজিৎ জানান, কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে ফটকি নদীর  পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হয়ে বিভিন্ন ফসলের মাঠে ঢুকে পড়েছে। আমি ২ একর জমিতে ধানের চাষ করেছিলাম। এখন পুরো জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছে। আমাদের মাঠে এখন এদিকে তাকাই  শুধু পানি আর পানি। ফসলি জমিতে এ পানি  কোনভাবেই কমছে না ফলে আমরা বিপাকে আছি।
দেবীলা গ্রামের কৃষানী গুরুদাসী বিশ্বাস জানান, নদীর পানিতে আমার বাড়িতে পানি ঢুকে গেছে ফলে আমি অন্যত্র চলে যাচ্ছি। আমার সবজি ক্ষেত ও ধানের জমি এখন পানির নিচে। নদীর এ  পানি শুধু ফসলের জমিতে নয়  রাস্তাঘাটে পানি থাকায় আমরা চলাচল করতে পারছিনা।
মাগুরা সদরের কেচুয়াডুবি গ্রামের কৃষক মিলন হোসেন জানান, প্রবল বর্ষণে আমার দুই বিঘা জমির ধান পানির নিচে। এ পানি কোনভাবেই কমছে না ফলে আমরা চাষাবাদ করতে পারছি না।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে আরো দেখা গেছে চাষিরা স্যালো মেশিনের সাহায্যে জমির পানি পাইপের সাহায্যে অন্য স্থানে স্থানান্তর করছেন এলাকার কৃষকরা।
শালিখা উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৪৬ টি দিঘির মধ্যে ২৭ টি দিঘির মাছ প্রবল বর্ষণে ভেসে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মৎস্য চাষী। দিঘির এ মাছ ভেসে যাওয়াই বিপাকে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা।
শালিখা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবুল হাসনাত জানান, গত তিন মাসে শালিখা উপজেলায় ৭ হাজার মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টানা বর্ষণের ফলে ফটকি নদী সহ আশেপাশের নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ পানি প্লাবিত হয়ে ঢুকে পড়েছে ফসলি জমিতে। ফলে উপজেলার প্রায় ৮৫৫ হেক্টর জমির ধান পানিতে তলিয়ে গিয়েছে। নষ্ট হয়েছে ১৫০ হেক্টর জমির ধান। ইতিমধ্যেই ফসলি জমির এ পানিতে স্যালো মেশিনের সাহায্যে সেচে ফেলা হচ্ছে। আপদকালীন সময়ে  আমরা উপজেলায় ১ হাজার কেজি বীজ বিনামূল্যে ২ শ কৃষকের মাঝে  বিতরণের কাজ শুরু করেছি। ৬৫ জন সবজি কৃষকের মাঝে চাল,ডালসহ শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। আশা করছি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফসলি জমির এ পানি কমে যাবে।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)