শিরোনাম:
পাইকগাছা, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

SW News24
শনিবার ● ১৯ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » উপ-সম্পাদকীয় » দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জনসচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে
প্রথম পাতা » উপ-সম্পাদকীয় » দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জনসচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে
৭৫৬ বার পঠিত
শনিবার ● ১৯ মার্চ ২০১৬
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জনসচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে

---

প্রকাশ ঘোষ বিধান

ভৌগলিক ও ভুতাত্ত্বিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ। বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে উপকুলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি এর ধরনও পাল্টাচ্ছে। বন্যা, ঘুর্ণিঝড়, নদীভাঙন, জলোচ্ছাস সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ এ জনপদের প্রায় নৈত্যনৈমত্তিক ঘটনা।

বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ। ঘুর্ণিঝড়, টর্নেডো, বন্যা, জলোচ্ছাস, খরা, নদীভাঙন ইত্যাদি দুর্যোগের কোন না কোনটি এদেশে আঘাত হানে। বৈস্মিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংকের এক সমীক্ষায় জানাগেছে, প্রতিবছর সমুদ্রের পানির স্তর ৩-৮ মিঃমিঃ বাড়ছে। ফলে সুন্দরবন তলিয়ে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। এ কারণে সব থেকে বিপদে পড়বে এ এলাকার বন্য প্রাণী। পানির তল যদি মাত্র ৪৫ সেঃমিঃ বৃদ্ধি পায় তাহলে বাংলাদেশ এবং ভারতের সুন্দরবনের ৭৫ শতাংশ সমুদ্র গর্ভের তলিয়ে যাবে। খুব দ্রুত সমুদ্রের পানির স্তর বিপদজনকভাবে বেড়ে যাচ্ছে সুন্দরবন এলাকায়। ভুমিক্ষয় ও পানির স্তর বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসাবে প্রাকৃতিক ও জনবসতির মাত্রাতিরিক্ত সম্প্রসারণ এবং বিভিন্ন কর্মকান্ডকে দায়ী করেছে বিশ্বব্যাংক সমীক্ষা। প্রতিবছর এপ্রিল থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা বেশী ঘটে। দেশের দক্ষিণ পশ্চিম উপকুলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বেশী। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এদেশের জনজীবনে প্রায় নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সাথে দ্রুত বনায়নের সাথে সাথে বাড়ছে জলাবদ্ধতা, অগ্নীকান্ড ও ভবন ধ্বস। এছাড়া এদেশ সিসমিক জোনে অবস্থান হওয়ায় বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশংখ্যা রয়েছে।

বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অন্যান্য দেশের থেকে অনেক ভালো। দুর্যোগের ক্ষয় ক্ষতি কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম বিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে। উপকুলীয় এলাকায় ঘুর্ণিঝড় এর ভয়াভয়তা এবং জলোচ্ছাস হতে উপকুলীয় জনগন ও গবাদি পশু রক্ষায় সাইক্লোন শেল্টার বা ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মান করেছে। দুর্যোগ কবলিত বিপন্ন জনগোষ্টীর ঝুঁকি হ্রাসের লক্ষ্যে বিজ্ঞান ভিত্তিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের তত্বাবধানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। এর মধ্যে রয়েছে দুর্যোগে আগাম বার্তা প্রচারে তথ্য ও প্রযুক্তি, দুর্যোগ ঝুঁকি ও বিপন্নতা নিরুপনে জিআইএস ও দুর অনুধাবন প্রযুক্তি, নদী অববাহিকা ব্যবস্থাপনা দুর অনুধাবন প্রযুক্তি, বিভিন্ন দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন, ওয়েব বেইজড সাইক্লোন শেল্টার তথ্য ব্যবস্থাপনা, সামাজিক নিরাপত্তা তথ্য প্রক্রিয়া ব্যবস্থাপনা, প্লাবিত এলাকার গভীরতার মানচিত্রায়ন ইত্যাদি। দুর্যোগ বিষয়ক জনসচেতনতা বৃদ্ধি, দুর্যোগ বিপদ সংকেত পদ্ধতি, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস পদ্ধতি, সাড়াদান, ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন, পূর্নাবাসন ও পূর্ণগঠন ইত্যাদি কার্যক্রমে সরকার তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। দুর্যোগকালে মানুষকে সতর্ক ও সচেতন করতে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ের ডিজিটাল সেন্টারগুলো অবদান রাখছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক সফলতা থাকলেও নতুন নতুন হুমকি ও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রযুক্তি যত বেশী থাকবে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি ততটা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি কবলিত জনগোষ্টীর সহনশীল পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপন ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের দুর্যোগ সম্পর্কিত জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসমুলক বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে দুর্যোগ ঝুঁকিমুক্ত সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়তে দেশে সম্ভাব্য দুর্যোগ বিষয়ে ঝুঁকি হ্রাস ও প্রস্তুতিমুলক কার্যক্রমে সর্বস্তরের জনগনের সচেতনতা বৃদ্ধি ও সহযোগীতা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)