শিরোনাম:
পাইকগাছা, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩ ফাল্গুন ১৪৩১

SW News24
শুক্রবার ● ১৭ জানুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » মুক্তমত » জয়ন্তী বা জুবিলী পালন
প্রথম পাতা » মুক্তমত » জয়ন্তী বা জুবিলী পালন
৪৭ বার পঠিত
শুক্রবার ● ১৭ জানুয়ারী ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

জয়ন্তী বা জুবিলী পালন

---      বর্তমানে জয়ন্তী পালনের পরিব্যাপ্তি প্রায় সর্বক্ষেত্রে লক্ষণীয়। বিভিন্ন জনপদে কোন বিশেষ ব্যক্তি বা ঘটনা বা কোন কিছুর প্রতিষ্ঠার সময়কালের সূত্র ধরে জয়ন্তী বা জুবিলীর কথা শোনা যায়। প্রকৃত পক্ষে জুবিলীর অর্থ হলো উত্সব মুখর পরিবেশে জন্মতিথি পালন। আর এটাকে বাংলায় বলা হয় জয়ন্তী।

জুবিলীর প্রবর্তন হয়েছে প্রাচীন রোমান সভ্যতা থেকে। জয়ন্তী বা জুবিলীর আদি সূতিকাগার হলো রোমান সভ্যতার তৎকালীন প্রবাহের অন্যতম নিয়ামক হিসেবে সময়কালভিত্তিক সূত্রপাত বা জন্মোৎসব। ইংরেজী জুবিলী শব্দটি এসেছে ফ্রান্স শব্দ Bubile এর অপভ্রংশ থেকে। অবশ্য এর আদি ল্যাটিন শব্দ Jubilaeus মূলত কোন ঘটনা বা ব্যক্তির যথাক্রমে সূত্রপাত ও জন্মকে ঘিরে সুনির্দিষ্ট সময়কাল পূরণ হওয়ার উপলক্ষে করে সম্মান প্রদর্শন পূর্বক স্মৃতিচারণের আনন্দঘন অনুষ্ঠান। কোনও ব্যক্তি, সংস্থা বা কোনও গুরুত্বপূর্ণ কাজের উৎপত্তি বা শুরু হওয়ার পঁচিশ বছর পূর্ণ হওয়া উপলক্ষে উদযাপন করা হয় রজত জয়ন্তী। এই জয়ন্তী পালন এখন প্রায় প্রতিটি দেশে স্ব স্ব আঙ্গিকে পুরোপুরি আনুষ্ঠানিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। জয়ন্তী পালনে বিশেষ আয়োজন নিয়ে জাঁকজমকপূর্ণভাবে সাজানো হয় অনুষ্ঠান।

যতদূর জানা যায়, প্রথমত এর সূত্রপাত হয় ইহুদিদের মধ্যে। তারা ৫০ বছরকাল পূরণ হলে উৎসব পালন করত এবং এটাকে ভিত্তি করে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান এবং ক্রীতদাসদের মুক্তিদান, দেনা মাফ প্রভৃতি পুণ্যকর্ম সম্পাদন করত। তৎপর দ্বিতীয় পর্যায়ে যেটা দেখা যায়, তা হলো, ২৫ বছরকাল পূরণের প্রাক্কালে রোমান ক্যাথলিকদের আনুষ্ঠানিক উৎসব বিশেষ। এটি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে হলেও অনেক ক্ষেত্রে এর গণ্ডি অতিক্রমপূর্বক হতো বিভিন্ন আঙ্গিকে অনুষ্ঠান।
যা হোক, সময় ও ঘটনার পরিক্রমায় এ দুটির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ষাট বছর কাল পূরণ ভিত্তি করে আনুষ্ঠানিক উৎসব পালনের উদ্ভব হয়ে উঠে আর একটি জয়ন্তী। এ ছাড়া এখানেও থেমে থাকেনি। আধুনিকতার ছোঁয়ায় শত বছর কালকেও এর মধ্যে টেনে আনা হয়। অবশ্য এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশে সময়কাল নিয়ে তারতম্য পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। যা হোক, এসব জয়ন্তী শুধু পালন করাও হয় না, যুগপৎ এর নামকরণও করা হয়।

আজকাল জয়ন্তী পালন বছর অনুযায়ী এর নামকরণও করা হয়। সাধারণত ২৫ বছর পূর্তিকে বলা হয়- রজত জয়ন্তী। ৪০ বছর পূর্তিকে বলা হয়- রুবি জয়ন্তী। ৫০ বছর পূর্তিকে বলা হয় - সুবর্ণ জয়ন্তী বা স্বর্ণ জয়ন্তী। ৬০ বছর পূর্তিকে বলা হয়- হীরক জয়ন্তী। ৬৫ বছর পূর্তিকে বলা হয় - নীলা জয়ন্তী। ৭৫ বছর পূর্তিকে বলা হয়- প্লাটিনাম জয়ন্তী। ১০০ বছর পূর্তিকে বলা হয়- শতবর্ষ। ১৫০ বছর পূর্তিকে বলা হয়- সার্ধশত। ২০০ বছর পূর্তিকে বলা হয়- দ্বিশতবর্ষ। ১০০০ বছর পূর্তিকে বলা হয় - সহস্রাব্দ জয়ন্তী। এছাড়াও এক মাস পূর্তিকে বলা হয়-মাসিক জয়ন্তী, তিন মাস পূর্তিকে বলা হয়-ত্রৈমাসিক জয়ন্তী, ছয় মাস পূর্তিকে বলা হয়-ষাণ্মাসিক জয়ন্তী, এক বছর পূর্তিকে বলা হয়-বাৎসরিক বা বার্ষিক জয়ন্তী ও ১০ বছর পূর্তিকে বলা হয়-এক দশক জয়ন্তী। এই জয়ন্তী পালনে বিশেষ আয়োজন নিয়ে অনুষ্ঠান জাঁকজমকপূর্ণভাবে সাজানো হয়।

উৎসব এবং অনুষ্ঠান আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অনুষ্ঠান আমাদের আনন্দ এবং আনন্দ ভাগ করার সুযোগ দেয়। একটি উৎসব একটি নির্দিষ্ট কার্যকলাপ বা ঘটনা দ্বারা চিহ্নিত একটি দিন বা উদযাপনের সময়কাল হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় জয়ন্তী বা জুবিলী। জয়ন্তী উদযাপনের মাধ্যমে, আমরা আমাদের অতীতকে সম্মান করতে, আমাদের বর্তমানকে উদযাপন করতে এবং আমাদের ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে সক্ষম হই। উৎসব এবং ঘটনাগুলি আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং আমাদের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য প্রদর্শনের সুযোগ করে দেয়। প্রায়শই ঐতিহাসিক ঘটনা বা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে স্মরণ করে এবং লোকেদের একত্রিত করে জাঁকজমকপূর্ণভাবে জয়ন্তী উদযাপন করা হয় ।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)