শিরোনাম:
পাইকগাছা, রবিবার, ১ জুন ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

SW News24
বুধবার ● ২১ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » নারী ও শিশু » চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর প্রহর গুনছে শিশু মিম
প্রথম পাতা » নারী ও শিশু » চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর প্রহর গুনছে শিশু মিম
৭৫ বার পঠিত
বুধবার ● ২১ মে ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর প্রহর গুনছে শিশু মিম

--- মাগুরা প্রতিনিধি :দুই বছর চার মাস বয়সি শিশু মাসুরা আক্তার মিম। জন্ম থেকেই হার্টের সমস্যা নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে। এ সময় মাগুরা শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আব্দুল হাইয়ের নিকট চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটিকে। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর হার্টের সমস্যা ধরা পড়ে। তখন থেকেই শুরু হয় চিকিৎসা। বর্তমানে মিমের বয়স দুই বছর চার মাস। প্রায়ই অসুস্থ থাকে। এমতাবস্থায় ফরিদপুর রেজওয়ান মোল্যা স্পেশালইজড হার্ট সেন্টারের শিশু বিশেষজ্ঞ ও শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মুহাম্মাদ তানভীর ইসলামকে গত ৮ মে দেখান। তিনি জানান, শিশুটির হার্টের দুইটা ভাল্বই নষ্ট হয়ে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অপারেশন না করানো গেলে শিশুটিকে বাঁচানো যাবে না। কয়েকদিন আগেও শিশুটি অনেকটা সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল। খুনসুঁটিতে মেতে থাকতো সারাদিন। সারা বাড়ি মাতিয়ে রাখতো। বাবা-মা, দাদা-দাদী ও ভাইদের ডাকত সে। হঠাৎ অসুস্থ হওয়ায় ধীরে ধীরে কঙ্কালসার হতে থাকে শিশুটির শরীর। হারিয়ে ফেলেছে জীবনের স্বাভাবিক গতি। খেতে পারে না কোনো কিছুই। ফ্যাকাসে হয়ে পড়েছে সম্পূর্ণ শরীর। মনে হবে যেন এক জীবন্ত লাশ!
মেয়ের এমন করুণ অবস্থায় ফুটপাতে ফল বিক্রেতা বাবা ও শিশুটির পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছে। মেয়েকে অপারেশন করা তো দূরে কথা, ঠিকমত ঔষধই খাওয়াতে পারছে না। মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা সদরের শ্রীপুর মাঠপাড়া গ্রামের রাশিদুল ইসলাম চান্নু-তৃপ্তি বেগম দম্পতির দুই ছেলে ও একমাত্র মেয়ে মিম। তাদের একমাত্র মেয়েটি এখন মৃত্যু পথযাত্রী! শীর্ণকায় শরীরে এখন মৃত্যুর প্রহর গুনছে শিশুটি!
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেল, শরীর শুকিয়ে কাঠ শিশুটির। বুক-পিঠ ও পাঁজরের হাড় বেরিয়ে পড়েছে। মাথার হাড়গুলো নরম হয়ে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অপারেশন না করা গেলে নিশ্চিত মারা যাবে শিশুটি। শিশুটির পরিবারটি অত্যন্ত দরিদ্র। বসতবাড়ির ১০ শতক জমি ছাড়া আর কোন কিছুই নেই। শ্রীপুর শহরে রাস্তার ধারে ফুটপাতে ফলের দোকান থেকে যা উপার্জন করে তা দিয়েই ৭ জনের সংসার চলে কোনমতে।
মিমের বাবা-মা জানান, জন্মের পর থেকেই মেয়েটির হার্টের সমস্যা ধরা পড়ে। বর্তমানে দুইটা ভাল্বই নষ্ট হয়ে গেছে। চিকিৎসকেরা বলেছেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা অথবা দেশের বাইরে নিয়ে যেতে হবে মিমকে। অতিসত্তর অপারেশন না করা হলে শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব নয়। কিন্তু ফুটপাতে ফলের দোকানের ব্যবসা থেকে মিমের বাবার পক্ষে স্থানীয় ডাক্তার দেখানোই কষ্ট্যসাধ্য, সেখানে ঢাকায় বা বিদেশে নেওয়ার ভাবনা অসম্ভব তাদের কাছে। এমনকি মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে পরিবারটি। মেয়ের চিকিৎসা খরচের জন্য অনেকের কাছেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। কিন্তু কোথাও মেলেনি সহযোগিতা।
অশ্রসিক্ত মা তৃপ্তি বেগম বলেন, মেয়ের সুস্থতার জন্য যখন যে যা বলছে সেটাই করছি। ডাক্তার বলেছেন অপারেশন করাতে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা খরচ হবে। আমাদের সাধ্য নাই। চোখের সামনে আমার একমাত্র মেয়ে এভাবে কষ্ট পাচ্ছে, কিন্তু কিছুই করতে পারছি না! আমি তো মা! কোন মা কি পারে সন্তানের মৃত্যু মেনে নিতে? সবার প্রতি অনুরোধ আমার মেয়েকে বাঁচান।
শিশুটির ব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শিশুটির ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে যতদূর সম্ভব শিশুটির চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করা হবে। শিশুটির পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে এই নাম্বারে- ০১৪০১৭৩৫২০৫





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)