

শুক্রবার ● ১৫ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » ব্যবসা-বাণিজ্য » মাগুরায় সবজির বাজারে আগুন, বিপাকে ক্রেতারা
মাগুরায় সবজির বাজারে আগুন, বিপাকে ক্রেতারা
মাগুরা প্রতিনিধিঃ মাগুরায় সবজির বাজারে আগুন লেগেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির বাজারে প্রতিটি পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটি পণ্যের দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। ফলে সাধারণ মানুষসহ নিম্ন খেটে খাওয়া মানুষের করেছেন বিপাকে। সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, তিন সপ্তাহ ধরে টানা বর্ষণের ফলে জেলার বিভিন্ন ক্ষেত্রে জলাবদ্ধতা থাকায় সবজির ক্ষেত তলিয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন গ্রামের কৃষকের সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাজারে সবজির পর্যাপ্ত আমদানি না থাকার কারণে এ দাম বেড়েছে। প্রতিদিন যে পরিমাণ বাজারে সবজি থাকার কথা তার স্বল্পতা থাকায় এর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
শুক্রবার মাগুরা একতা কাঁচাবাজার ও পুরাতন বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি বেগুন কেজিতে বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ৮০ টাকা দরে প্রতি কেজি পটল, করলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা,কচুর মুখি প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কাঁচা পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ১ কেজি পুঁইশাক প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ঝিঙে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ৫০ টাকা, কাঁকরোল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কাঁচা কলা এক হালি ৬০ টাকা, কচুর লতি এক আটি ৬০ টাকা। কুমড়ো প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ধুন্দল প্রতি কেজি ৫০ টাকা। লাউ প্রতি পিস ৭০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। দিকে মরিচের বাজারে লেগেছে আগুন গত সপ্তাহে কাঁচামরিচ ছিল ১৬০ টাকা। বর্তমানে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা।
সদরের বাগডাঙ্গা গ্রামের কৃষক বৈদ্যনাথ মন্ডল জানান, দুই সপ্তাহের টানা বর্ষণের ফলে আমার সবজি ক্ষেত তলিয়ে গিয়েছে। জমিতে পানি থাকার কারণে আমি সবজি তুলতে পারছে না। আমার কাঁচা মরিচের ক্ষেত, বেগুনের ক্ষেত, ও লাউ এর খেতে পানি থাকার কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে আমি বিপাকে আছে।
সদরের টেংরাখালী গ্রামের সবজি চাষী হারেজ আলী জানান, আমি এক বিঘা জমিতে মরিচ, বেগুনের চাষ করেছি। টানা বর্ষণের ফলে আমার সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়া আমি সবজি বাজারে তুলতে পারছি না।
পুরাতন বাজারে সবজি কিনতে আসা শাহ আলম জানান, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটি সবজির দাম দ্বিগুণ হয়েছে। গত সপ্তাহে বেগুন কিনেছিলাম ৬০ টাকায়। এখন প্রতি কেজি বেগুন ৯০ থেকে ১০০ টাকা । তাছাড়া অন্যান্য সবজি কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পেয়েছে। ফলে আমরা সাধারণ মানুষ খুবই বিপাকে আছে।
সবজি কিনতে আসা একজন নারী লিলি বেগম জানান, গত সপ্তাহে কাঁচা মরিচ কিনেছিলাম ৪০ টাকা পুয়া। এখন সেই আছে মরিচ কে জিততে বেড়েছে ৮০ টাকা। এখন কাঁচামরিচের পোয়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা। পোয়া মরিচ কিনতে টাকা শেষ। আমি সামান্য বেতনে একটি স্কুলে আয়া চাকরি করি। প্রতিমাসে বেতন পাই ৫ হাজার টাকা। টাকা দিয়ে সংসার চালাতে পারি না। এভাবে সবজির বাজার দিন দিন বেড়ে গেলে আমাদের জীবন দুর্বিসহ হবে।
রিকশা চালক মোহর আলী জানান, প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা রোজগার করি। সবজির বাজারে প্রতিটি পণ্যের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় বাজার করতে পারছি না। বেগুন মরিচের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় খুবই চিন্তিত আমরা। আমাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষের বেঁচে থাকাই বড় দায়। এখন আমাদের না খেয়ে দিন কাটাতে হবে।
পুরাতন বাজারের সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, কয়েক সপ্তাহের টানা বর্ষণের ফলে বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। ফলে বাজারে সবজি সরবরাহ কম থাকার কারণে এ দাম বেড়েছে। তবে আমরা মনে করছি কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বাজারে স্বস্তি ফিরবে।