বৃহস্পতিবার ● ২৬ জুলাই ২০১৮
প্রথম পাতা » কৃষি » ডুমুরিয়ায় বেগুন চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে কৃষকরা
ডুমুরিয়ায় বেগুন চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে কৃষকরা
অরুন দেবনাথ ডুমুরিয়া ॥ ডুমুরিয়ায় বেগুনের চাষ করে ভাগ্যের পরিবর্তন হচ্ছে কৃষকদের। তারা বেগুন চাষ করে প্রতি বিঘা জমিনে এক মৌসুমে ৫/৭লক্ষ টাকা বিক্রয় করতে সক্ষম হচ্ছে।
সরজমিনে দেখা যায়,ডুমুরিয়া উপজেলার গোবিন্দকাটি গ্রামের আফজাল হোসেন বিশ্বাসের পুত্র ইয়াসিন বিশ্বাস লেখাপড়ার পাশাপাশি তাদের ২২শতক জমিনে বেগুনের চাষ করেছে। অবিশাস্য হলেও সত্য যার প্রতিটা গাছে বর্তমানে ২০/৩০টি বেগুনের ফলন ধরেছে। তিনি জানায় এ বেগুন গাছ রোপনের মাত্র ১ থেকে দেড় মাস পর গত ২৫ মে প্রথম বার প্রায় ৩ মন বেগুন উত্তোলন করেছেন তিনি। ৫ দিন পর ৩০ মে ৯ মন বেগুন উত্তোলন করেছেন এবং ৮ জুর্ন ১৫ মন বেগুন উত্তোলন করেছেন। ইয়াসিন আরও জানায় বর্তমানে প্রতি কেজি বেগুনের পাইকারী বাজার মূল্য ১৫/২০টাকা অথ্যাৎ প্রতিমন বেগুন ৬শ/৮শ টাকা দরে ব্যাপারীদের কাছে বিক্রয় করেছি। এভাবে আষাড় মাস পর্যন্ত দীর্ঘ ৪মাস ধরে ৫দিন পরপর বেগুন তোলা হবে। এছাড়া গোরিঘোনা গ্রামের বিদেশ মল্লিকের পুত্র শ্যামপদ মল্লিক তার ২০শতক জমিতে,গোবিন্দকাটি গ্রামের জালাল উদ্দিন বিশ্বাসের পুত্র ইমদাদুল বিশ্বাস ৩বিঘা জমিতে,শাহাদআলী জোয়াদ্দারের পুত্র আরশাফুল জোয়াদ্দার ২০শতক জমিতে,স্বদেশ মল্লিকের পুত্র দেবব্রত মল্লিক ২২শতক জমিতে,আনছার আলী গাজীর পুত্র হাবিবুর রহমান গাজী ১বিঘা জমিতে বেগুনের চাষ করেছে। এ সকল কৃষকরা ইতোমধ্যে ২/৩বার বেগুন উত্তোলন করেছেন। এ ব্যাপারে ইয়াসিন বিশ্বাস,হাবিবুর রহমান,ইমদাদুল ও শ্যামাপদ মল্লিক জানায়,আমাদের কাঁঠালতলা বাজারের সার ব্যবসায়ী রায়হান উদ্দিনের সার্বিক সহযোগীতায় আমরা গোবিন্দকাটি গ্রামে কৃষি বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম হয়েছি। এক সময় আমরা টাকার অভাবে সার কিনে ফসলে দিতে পারতাম না। রায়হান উদ্দিন তখন আমাদের বাকীতে সার ও ঔষধ দিয়ে সহযোগীতা করতেন। তাছাড়া আমাদের ফসলে পোকার আক্রমন সহ যদি কোন সমস্যায় পড়ি তাহলে রায়হান উদ্দিন নিজে জমিতে গিয়ে তারপর প্রতিকারের পরামর্শ দেন। এভাবে আজ আমরা গোবিন্দকাটি গ্রামের কৃষকরা বেগুন চাষ করে কৃষি বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম হয়েছি। এব্যাপারে কাঁঠালতলা বাজারের ব্যবসায়ী সাব ডিলার রায়হান উদ্দিন মোড়ল বলেন ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার নজরুল ইসলাম স্যারের সহযোগীতায় আমরা ঠিকমত সার ও কীটনাশক পাওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা ঝুঁকি মুক্তভাবে ও নিশ্চয়তার সাথে ফসল উৎপাদন করতে পারে। তাছাড়া কোন কৃষক যদি তার ফসলের পোকার আক্রমন সহ মারাত্বক কোন সমস্যায় পড়ে তাহলে আমি জমিতে গিয়ে তারপর প্রতিকারের ব্যবস্থা করি। ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন,আমরা উপজেলার প্রায় ১শ জন কৃষককে বারি ও বিডি জাতের বেগুনের বীজ সম্প্রসারণের কাজ করেছি। তারই ফলশ্র“তিতে রায়হানের মাধ্যমে গোবিন্দকাটি গ্রামের কয়েক জন কৃষককে এ জাতের বীজ দেয়া হয়েছে। এ বেগুনের চাষ করলে জমিতে কীটনাশক অনেক কম লাগে। ফলন হয় অনেক বেশি। তাই আগামীতে আমরা উপজেলার প্রত্যেক কৃষকের কাছে এ জাতের বেগুনের বীজ পৌছে দেয়ার চেষ্টা করব।