বৃহস্পতিবার ● ২ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » কৃষি » কেশবপুরে রবি-১ ও জেআরও ৫২৪ পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
কেশবপুরে রবি-১ ও জেআরও ৫২৪ পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
এম. আব্দুল করিম, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
যশোরের কেশবপুরে রবি-১ ও জেআরও ৫২৪ জাতের রোপা পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অল্প খরচে অধিক ফলন, সমান দূরত্বে রোপনের কারণে গাছ ছোট বড় হওয়ার সম্ভাবনা কম, নিড়ানীর সুবিধার কারণে আধুনিক এ পদ্ধতির পাট চাষ এলাকা ভেদে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে কৃষি বিভাগের ব্যাপক প্রচারণার অভাবে চলতি বছর এ উপজেলায় মাত্র এক হাজার হেক্টর জমিতে রোপা পদ্ধতির পাটের আবাদ হয়েছে। জানাগেছে, প্রাচীন কাল থেকে এ উপজেলায় পাটের আবাদ হয়ে আসছে। তবে সরকারের বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে পাট বিক্রির ভরা মৌসুমে কৃষকরা এর ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা পাটের আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এমন সময় এ উপজেলার কৃষকরা অল্প খরচে অধিক ফলন পেতে উদ্ভাবন করেন রোপা পদ্ধতির পাটের আবাদ। পরীক্ষামূলক আবাদে কৃষকরা বাম্পার ফলন পায়। উপজেলার মজিদপুর, মঙ্গলকোট, বিদ্যানন্দকাটি, কেশবপুর সদর ইউনিয়নের অধিকাংশ কৃষকরা এ পদ্ধতির পাট চাষে ঝুঁকে পড়েছে। অধিকাংশ কৃষক ক্ষোভের সাথে বলেন, পাটের পাটকাঠি একটি উৎকৃষ্টমানের জ্বালানী হিসেবে পরিচিত। খরচ না উঠলেও অনেকে জ্বালানীর জন্য পাটের আবাদ করে থাকেন। মজিদপুর গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, তিনি গত ৫ বছর ধরে এ পদ্ধতিতে পাটের আবাদ করছেন। এ বছর দেড় বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন।
সরেজমিনে তার ক্ষেত পরিদর্শনকালে তিনি জানান, ১৫ চৈত্র বৃষ্টিপাত হওয়ায় ধানের বীজ তলার মত পাটের বীজতলা তৈরী করে বীজ বপন করেন। ২২ দিন বয়সের চারা তুলে ক্ষেত তৈরী করে নির্দিষ্ট ব্যবধানে সেখানে পাটের চারা রোপণ করেন। চারার বয়স ১০ দিন হলে ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করেন। তার পাট মাঠের মধ্যে সেরা হওয়ায় তিনি বাম্পার ফলনের আশা করছেন। তবে পাটের বর্তমান যে বাজার আছে তা যদি থাকে তবে তিনি লাভবান হবেন। উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা বলেন, রোপা পদ্ধতির পাট চাষে বিঘা প্রতি ১৫ কেজি ডিএপি, ২০ কেজী এমওপি, ১৫ থেকে ২০ কেজী জিপসাম, ২ কেজী দস্তা ও ৫ থেকে ৮ কেজী ইউরিয়া সার চাষে প্রয়োগ করতে হয়। ৮/১০ দিন পর ১০ থেকে ১২ কেজী ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। বর্তমান বাজারে প্রতিমন পাট ১৮শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার বলেন, উচ্চ ফলনশীল রবি-১ বিএডিসি-১ ও জেআরও ৫২৪ জাতের পাট আবাদ বেশী হয়েছে। এ বছর পাটের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৪ হাজার ৭‘শ হেক্টর জমি। কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই পাট চাষের জন্য আবহাওয়া অনুকুল থাকায় অর্জিত হয়েছে ৫ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১০ হেক্টর বেশী জমিতে আবাদ হয়েছে। রোপা পদ্ধতির পাট আবাদ লাভজনক হওয়ায় কৃষক মাঠ দিবসের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। খুব অল্প দিনের মধ্যে এ পদ্ধতির পাটের আবাদ উপজেলা ব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে।