

বৃহস্পতিবার ● ২৯ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » আঞ্চলিক » আশাশুনিতে কপোতাক্ষ নদের বিকল্প বাঁধ ভেঙ্গে ৪০০ বিঘা জমির মৎস্য ঘের প্লাবিত, অবশেষে বাঁধ বাধা সম্পন্ন
আশাশুনিতে কপোতাক্ষ নদের বিকল্প বাঁধ ভেঙ্গে ৪০০ বিঘা জমির মৎস্য ঘের প্লাবিত, অবশেষে বাঁধ বাধা সম্পন্ন
আহসান হাবিব, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) থেকে: সাতক্ষীরার আশাশুনিতে কপোতাক্ষ নদের পানি রক্ষা বিকল্প বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় ৪শ বিঘা জমির মৎস্য ঘের প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত এলাকার মৎস্য ঘের ভেসে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করছে এলাকাবাসী।
বুধবার দুপুরের জোয়ারের পানির চাপে প্রতক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, আশাশুনি উপজেলার দরগাহপুর ইউনিয়নের সুবেদখালী কপোতাক্ষ নদের পাউবো’র বেড়ী বাঁধে স্লুইচ গেটের পানি নিস্কাশনের নালা যেটি নদী খনন কালে বাধ দিয়ে আটকানো হয়। ফলে পাউবো’র বেড়ী বাঁধ ও নদী খননের মাটি দিয়ে বিকল্প রিং বাঁধের মাঝে বিস্তৃর্ন নদী ভরাটী জমিতে এলাকাবাসি ইজারা নিয়ে চিংড়ী চাষের ঘের করে আসছে। গত কয়েকদিন গুড়ি গুড়ি ও মাঝারি বৃষ্টিতে বিকল্প নদের পানি রক্ষা রিং বাঁধ টলমলে হয়ে যায়।
বুধবার (২৮ মে) দুপুরে জোয়ারে বাঁধ বসে গেলে নদের পানি উপচে ভেতরে প্রবেশ করতে থাকে। মহুর্তের মধ্যে বাঁধের প্রায় ৩০ ফুট এলাকা ভেঙ্গে প্রবল বেগে ভেতরে পানি প্রবেশ করে ছোট বড় ২৫/৩০ টি মৎস্য ঘের প্লাবিত হয়। এতে প্রায় ৪শত বিঘা জমির মৎস্য ঘের ডুবে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যায়। ফলে চিংড়ী চাষের ভরা মৌসুমের প্রায় ২০ রক্ষাধিক টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয় ঘের মালিকদের।
এ ঘটনায় দরগাপুর ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মুকুল জানান, বুধবার দুপুরের জোয়ারে নদী খনন করে তৈরি করা রিং বাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে ৪শ বিঘার অধিক জমির মৎস্য ঘের পানিতে ভেসে গেছে। কমপক্ষে ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছে মৎস্য চাষীরা। এলাকাবাসি মাইকিং করে শ্রমিক লাগিয়ে ও ক্ষতিগ্রস্তরা সহযোগীতা করে প্রানপন চেষ্টা চালিয়ে বাঁধ প্রাথমিকভাবে রাতে ও বৃহস্পতিবার সকালে বেধে ফেলতে সক্ষম হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে।
এ ঘটনায় পাউবোর উপ-সহকারি প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, ভাঙ্গন এলাকাটি মুলত পাউবো’র বেড়ী বাঁধ নয়, কপোতাক্ষ নদ খননের ফলে সৃষ্টি হওয়া একটি রিং বাঁধ। দুপুরের জোয়ারে পানির চাপে রিং বাঁধটি ভাঙ্গার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। রিং বাঁধ মেরামতে পাউবো কর্তৃক জিও বস্তা ও তাৎক্ষনিক কিছু বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে।
আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় বলেন, রিং বাঁধ ভাঙ্গার খবর পাওয়া মাত্রই আমি পাউবোসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে তাদের উপস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। পাউবো কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অবশেষে বাঁধ বাধাও হয়েছে, কিন্তু স্লুইচ গেট দিয়ে ভেতরে পানি ভাঙ্গন স্থান দিয়ে বিকল্প বাঁধ দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তা নাহলে ভরা বর্ষা মৌসুমে ওই বাঁধ আবারও ভাঙ্গার সম্ভবনা থেকে যাবে। তাছাড়া ভেতরের পানি নিষ্কাশনের পথ সুগম করতে হলে বিকল্প বাঁধ দেয়া সময়ের দাবী হয়ে পড়েছে।