শিরোনাম:
পাইকগাছা, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

SW News24
মঙ্গলবার ● ১০ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » মুক্তমত » গোসলে যত শান্তি মেলে
প্রথম পাতা » মুক্তমত » গোসলে যত শান্তি মেলে
১২০ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ১০ জুন ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

গোসলে যত শান্তি মেলে

 ---  প্রকাশ ঘোষ বিধান

গোসল আমাদের দৈনন্দিন কাজের একটি অংশ। গোসলের উপকারীতা আমরা কম-বেশি সবাই জানি। আমাদের প্রত্যেকদিনের রুটিনে নিয়মিত একটি অভ্যাস গোসল করা। গোসল করলে শরীর-মনে আসে প্রশান্তি।

১৪ জুন আন্তর্জাতিক গোসল দিবস উদযাপন করা হয়। যদিও গোসল দিবসটি আপনার অদ্ভুত লাগতে পারে। পৃথিবীর কত কিছু নিয়ে তো কত দিবস আছে, গোসল নিয়ে একটি দিবস থাকলে মন্দ নয়। প্রতিদিন দিনে অথবা রাতে একবার গোসল করা উচিত। তাহলে আমাদের শরীর সুস্থ থাকবে। গোসল আমাদের শরীরের অতিরিক্ত তাপ রোধ এবং ত্বকের সৌন্দর্য্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া রোগ-জীবাণু থেকে মুক্ত থাকতে রোজ একবার গোসলের বিকল্প নেই।

শীতের দিনে গোসল নিয়ে আলসেমি প্রায় সকলেরই চেনা গল্প। সকাল কিংবা দুপুর যে বেলাই হোক, কুয়াশায় ঢাকা দিনগুলোতে গোসলখানায় পা বাড়াতে অনীহা লাগে। শীতে একদিন পরপর গোসল করা দোষনীয় কিছু নয়। তবে একেবারে না করলে আবার ক্ষতি। শীতে গোসল না করলে আপনার ত্বকে নানা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ বাড়তে পারে। যক্ষ্মা, ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ নানা অসুখ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, আপনি চাইলে সর্বোচ্চ দুইদিন গোসল ছাড়া থাকতে পারেন। তাতে শরীরে সমস্যা বেশি হয় না। গোসল না করলেও ভেজা তোয়ালে দিয়ে শরীর মুছে নেওয়া ভালো।

গোসল দিবসের কিংবদন্তি অনুসারে, ১৪ জুন গ্রিক গণিতবিদ, বিজ্ঞানী এবং পণ্ডিত আর্কিমিডিস গোসল করার সময় আবিষ্কার করেছিলেন, পানিতে ডুবে কোনো বস্তুর আয়তন সঠিকভাবে পরিমাপ করা যেতে পারে! এই আবিষ্কারের উত্তেজনা ধরে রাখতে না পেরে আর্কিমিডিস বাথটাব থেকে লাফিয়ে উঠে চিৎকার করে বলেন, ইউরেকা, ইউরেকা! শুধু তাই নয় তিনি আনন্দে গ্রিসের সিরাকিউজের রাস্তায় দৌড়াতে শুরু করেন। সেই দিনকে স্মরণে আজকের দিনটি বেছে নেওয়া হয়েছিল বলে বিশ্বাস করা হয়।

গোসলের অনেক উপকারিতা আছে। এই যেমন- রোগজীবাণু প্রতিরোধ করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এই গরমে গোসল মানেই আরাম। গোসলের মাধ্যমে ভালো অনুভূতি সৃষ্টির হরমোন যাকে এন্ডোরফিনস বলা হয়, সেটা নিঃসৃত হয়। গোসলে ক্যালরি ক্ষয় হয়। ৩৮ ডিগ্রি তাপমাত্রায় এক ঘণ্টা ধরে গোসল করলে গড়ে ১৩০ ক্যালরি ক্ষয় হয়। তার মানে গোসল মানেও জিম করা। গোসলে ভালো ঘুম হয়, হালকা গরম পানিতে গোসল করতে পারেন তাহলে তাদের মাংসপেশি শিথিল হবে। শরীর শিথিল হওয়া মানেই ঘুমের জন্য শরীর উপযুক্ত হওয়া। গোসল শুষ্ক ত্বকের মহৌষধ। গোসল করলে শীতটা কমই অনুভূত হয়। আর যাদের ত্বক শুষ্ক, তাদের জন্য গোসল তো মহৌষধ। গোসল মানেই সুস্থতা, গোসল আমাদের হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দেয়। গোসল আমাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে এতটাই প্রশান্তি এনে দেয়। গোসল মেজাজও ঠিক রাখে। নানান কারণে মেজাজ খারাপ হতেই পারে। গোসল করলে মেজাজ শান্ত হয়।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, শীত খুব বেশি পড়লে সপ্তাহে তিন-চার দিন গোসল করাই যথেষ্ট। গোসল না করলেও হাত মুখ ভালো করে ধুয়ে নেওয়া জরুরি। শীতে গোসলের সময় স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি ব্যবহারের চেষ্টা করুন। বেশি ঠাণ্ডা কিংবা বেশি গরম পানি দুটোই ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। গরম পানি ব্যবহার করে পানি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় নিয়ে আসা ভালো।

নিয়মিত গোসল করলে শরীর থেকে কোনো অপ্রীতিকর গন্ধ আসে না। এছাড়া নিয়মিত গোসলে ত্বকের ছিদ্রগুলো শ্বাস নিতে পারে, ত্বকের কোষগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে, ইমিউন সিস্টেমের উন্নতি ঘটে, রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, একাগ্রতা ও শ্বাসের ক্ষেত্রেও সাহায্য করে।

লেখক ; সাংবাদিক ও কলামিস্ট





আর্কাইভ