শিরোনাম:
পাইকগাছা, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

SW News24
সোমবার ● ১৬ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » মুক্তমত » শরীর, মন ও আত্মার সুস্থতায় যোগব্যায়াম
প্রথম পাতা » মুক্তমত » শরীর, মন ও আত্মার সুস্থতায় যোগব্যায়াম
৫৮ বার পঠিত
সোমবার ● ১৬ জুন ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

শরীর, মন ও আত্মার সুস্থতায় যোগব্যায়াম

 --- প্রকাশ ঘোষ বিধান

যোগব্যায়াম বা ইয়োগা একটি প্রাচীন শারীরিক ও মানসিক অনুশীলন। প্রাচীন ভারতে এর উদ্ভব। যোগ শব্দটি এসে সংস্কৃত শব্দ যুজ ও যুজির থেকে। এর অর্থ একত্র হওয়া। এটি শরীর, মন ও আত্মার সমন্বয় ঘটিয়ে শান্তি ও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। ইয়োগার বিভিন্ন আসন, প্রাণায়াম (শ্বাসপ্রশ্বাসের কৌশল) ও ধ্যানের মাধ্যমে এ লক্ষ্যে পৌঁছানো হয়। যোগ ব্যায়াম করা স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো। যে ব্যক্তি নিত্যদিন যোগব্যায়াম করেন তাঁর শরীর একেবারে ফিট থাকে।

প্রাচীন কাল থেকেই আমাদের দেশের শরীর ও মন সুস্থ রাখার জন্য যোগব্যায়াম করার রীতি প্রচলিত। আগেকার দিনে সাধু সন্ন্যাসীরা নিয়মিত যোগচর্চা করতেন। প্রাচীন কাল থেকে এই আধুনিক কালে এসেও সুস্থ থাকার জন্য যোগ ব্যায়ামের কোনও বিকল্প নেই। আমাদের দেশ থেকে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে যোগ চর্চার রীতি। যোগ ব্যায়াম আমাদের শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ রাখে। যোগব্যায়াম আমাদের শারীরিক, সামাজিক, আধ্যাত্মিক, মানসিক সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যোগব্যায়াম আমাদের দেহ এবং মন এই দুইয়ের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে জীবনকে অনেক আনন্দময় এবং রোগমুক্ত করে তোলে। পরিবেশ ও প্রকৃতির সঙ্গেও যোগব্যায়ামের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।

প্রতি বছর ২১ জুন পালিত হয় আন্তর্জাতিক যোগ দিবস। যোগব্যায়ামের ইংরেজি নাম ইয়োগা, যার সাধারণ অর্থ ইউনিয়ন বা মিলন। ইয়োগা কোনও একটি ব্যায়ামের নাম নয়। এটি তিন ধরনের চর্চার সমন্বয় আসন, প্রাণায়াম ও ধ্যান। ইয়োগার আসনেরও আছে অনেক ধরণ। সুতরাং শরীর, মন ও আত্মার মিলনে প্রাচীনকাল থেকে এ উপমহাদেশে শরীরকে সুস্থ রাখার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে যোগব্যায়াম বা ইয়োগা। ইয়োগা কেবল ব্যায়াম না, এটি সাধনা।

আজকাল ফিটনেসের ক্ষেত্রে নিয়মিত যোগব্যায়ামকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন আধুনিক ফিজিওথেরাপিস্টরাও। যোগব্যায়ামের কিছু উপকারিতা, নমনীয়তা ও শক্তি: ইয়োগার নানা আসন শরীরের বিভিন্ন পেশি ও অঙ্গের শক্তি এবং নমনীয়তা বৃদ্ধি করে। পেশি টোনিং ও ফিটনেস: নিয়মিত ইয়োগা অনুশীলন পেশির টোনিং ও ফিটনেস বজায় রাখতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা: শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ইয়োগা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্ট্রেস রিলিফ: ধ্যান ও প্রাণায়াম শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। মুড ইমপ্রুভমেন্ট: ইয়োগা অনুশীলন মানসিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি বৃদ্ধি করে। মানসিক স্বচ্ছতা: ইয়োগা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে মনোযোগ ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করে। হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধ: নিয়মিত যোগব্যায়াম হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায়। ওজন নিয়ন্ত্রণ: ইয়োগার মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। হজমশক্তি বৃদ্ধি: বিভিন্ন আসন হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক। আধ্যাত্মিক উন্নয়ন: ইয়োগার মাধ্যমে আত্মজ্ঞান ও আধ্যাত্মিক শান্তি পাওয়া যায়।

২১ জুন যোগ দিবস। সারা বিশ্বেই মহা সমারহে পালিত হয় এই বিশেষ দিন। উদ্দেশ্যে একটাই, যোগেই হোক রোগ-বিয়োগ। যোগের মাধ্যমেই সেরে উঠুক এ বিশ্ব। শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সেরে ওঠার অন্যতম বিশ্বাসযোগ্য মাধ্যম ছিল যোগ ব্যায়াম। সেই ভারতের দেখাদেখিই যোগব্যায়াম  ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বেই। প্রাচীনকাল থেকেই ভারতের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ যোগ। বিভিন্ন রোগ ঠেকাতে, শরীর ভালো রাখতে এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করতে তারা ভরসা রাখতেন যোগব্যায়ামের ওপর। বর্তমান সময়ে এর উপকারিতা ও গুরুত্ব বেশি হওয়ায় ভারতের এই প্রাচীন জ্ঞান এখন বিশ্বের অন্য দেশগুলোতেও আপন করে নেওয়া হচ্ছে।

যোগ সারায় রোগ। এই প্রবাদ বহু প্রাচীন। বহু যুগ ধরে ভারতের বিশিষ্ট ঋষি-মুণিরা নিয়মিত যোগব্যায়াম করতেন। সুষম খাদ্যাভাস ও যোগব্যায়ামের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে সুস্থভাবে জীবনযাপন করতেন। শুধু তাই নয়, মন ও শরীর উভয়ই সুস্থ ও শক্তিশালী থাকে। বর্তমানে দেশ ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বের দরবারেই এই যোগ-ব্যায়াম এক অন্য মাত্রা পেয়েছে। তাই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও যোগব্যায়ামের মাধ্যমেই সুস্থ ও সবল রাখার চেষ্টা করা প্রবণতা তৈরি হয়েছে। যোগব্যায়াম শুধুমাত্র দীর্ঘায়ু হতে নয়, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে, মনকে শান্ত ও মজবুত করতেও সাহায্য করে।

লেখক; সাংবাদিক ও কলামিস্ট





আর্কাইভ