শিরোনাম:
পাইকগাছা, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২

SW News24
শনিবার ● ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » মুক্তমত » শীতে গৃহহীনদের জীবন
প্রথম পাতা » মুক্তমত » শীতে গৃহহীনদের জীবন
১২ বার পঠিত
শনিবার ● ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

শীতে গৃহহীনদের জীবন

শীতে গৃহহীনদের জীবন অত্যন্ত দুর্বিষহ। শীতকাল সাধারণ মানুষের কাছে উৎসবের হলেও, গৃহহীন ও দরিদ্র মানুষের কাছে তা বেঁচে থাকার এক কঠিন লড়াই। শীতকাল অধিকাংশ মানুষের কাছে আরামদায়ক হলেও গৃহহীন মানুষের জন্য এটি চরম কষ্টের এবং জীবনমরণ লড়াইয়ের সময়।

শীতে যা এক কঠিন সংগ্রাম। তীব্র ঠান্ডা, কুয়াশা আর বাতাসের কারণে তাদের মৌলিক চাহিদা উষ্ণতা, আশ্রয় ও খাবারের অভাব দেখা দেয়। যা বিশেষত শিশু ও বয়স্কদের জন্য জীবন-মৃত্যুর সংকট তৈরি করে। তারা খোলা আকাশের নিচে বা দুর্বল আশ্রয়ে থাকে, কম্বল ও পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্ট পায়। তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ও কাজকে ব্যাহত করে এবং খাদ্য জোগাড় করাও কঠিন হয়ে পড়ে।

খোলা আকাশের নিচে বা জরাজীর্ণ কুঁড়েঘরে থাকা, যা ঠান্ডা বাতাস ও কুয়াশা থেকে সুরক্ষা দিতে পারে না। কম্বল, কাঁথা বা গরম কাপড়ের অভাবে তীব্র শীতে তারা কাঁপতে থাকে, যা হাইপোথার্মিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। ঠান্ডার কারণে কাজ কমে যাওয়ায় আয় কমে যায়, ফলে পর্যাপ্ত খাবার জোগাড় করা কঠিন হয়ে পড়ে, যা তাদের আরও দুর্বল করে তোলে। ঠান্ডা, আর্দ্রতা এবং অপুষ্টির কারণে শিশু ও প্রবীণদের মধ্যে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, ডায়রিয়া এবং অন্যান্য শ্বাসকষ্টজনিত রোগের প্রকোপ বাড়ে। দিনের বেলায়ও কাজের অভাব এবং সন্ধ্যায় দ্রুত ঘরে ফেরা, যা তাদের জীবনকে আরও কঠিন করে তোলে।

শীতে গৃহহীনদের জীবনের কঠিন বাস্তবতা। শীতের প্রকোপ ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে । তীব্র শীত আর এক টানা ঘন কুয়াশার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তুষারাচ্ছন্ন বাতাস আর ঘন কুয়াশায়সহ হাড় কাপাঁনো শীতে জবুথবু হয়ে পড়ে।স্থায়ী মাথা গোঁজার ঠাঁই না থাকায় তারা কনকনে বাতাসের মধ্যে পাতলা প্লাস্টিক বা চটের বস্তা বিছিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করে।পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র এবং কম্বলের অভাবে গৃহহীন মানুষ হাড়কাঁপানো শীতে ধুঁকতে থাকে। বিশেষ করে ফুটপাত, রেলস্টেশন বা বাস টার্মিনালে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটানো অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। শিশুদের ওপর এই শীতের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে। সরকারি বা বেসরকারি কিছু অস্থায়ী শেল্টার থাকলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।

শীতে কাজ কমে যাওয়ায় এবং অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের আয় কমে যায়। ফলে ক্ষুধার্ত অবস্থায় শীত সহ্য করা তাদের জন্য আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। প্রচণ্ড ঠান্ডায় নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশি এবং ডায়েরিয়ার মতো রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পর্যাপ্ত পুষ্টি ও চিকিৎসার অভাবে অনেক সময় এসব রোগ প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। প্রতি বছর শীতের প্রকোপে অনেক গৃহহীন মানুষ, বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা মারা যান।

শীতকালে গৃহহীন মানুষের পাশে দাঁড়ানো একটি সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্ব। শীতবস্ত্র, কম্বল, গরম কাপড় ও খাবার তাদের কষ্ট কমাতে পারে। জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র ও উষ্ণায়ন স্টেশন স্থাপন করা প্রয়োজন, যা তাদের রাতটুকু নিরাপদে কাটাতে সাহায্য করবে। যেখানে সামান্য উষ্ণতা ও সহায়তা তাদের জীবনে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।

আশেপাশে থাকা অসহায় মানুষদের সহায়তায় এগিয়ে আসা প্রয়োজন। পুরনো বা নতুন শীতবস্ত্র দান করতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে আপনার অবদান রাখতে হবে। এছাড়া গরম খাবার বা কম্বল বিতরণের মাধ্যমেও তাদের পাশে দাঁড়ানো সম্ভব।





আর্কাইভ