শিরোনাম:
পাইকগাছা, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

SW News24
রবিবার ● ১৪ জানুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » যশোর রোডের শতবর্ষী আড়াইশত গাছ কাটা হচ্ছে
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » যশোর রোডের শতবর্ষী আড়াইশত গাছ কাটা হচ্ছে
৬৫৭ বার পঠিত
রবিবার ● ১৪ জানুয়ারী ২০১৮
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

যশোর রোডের শতবর্ষী আড়াইশত গাছ কাটা হচ্ছে

 ---

এস ডব্লিউ নিউজ।
যশোর রোড নামে খ্যাত যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করতে শতবর্ষী আড়াই শতাধিক রেইনট্রি কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে গত কয়েক দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। তবে শতবর্ষী গাছগুলো রেখেই রাস্তা প্রশস্ত করার পক্ষে বেশির ভাগ মানুষ মতামত দিচ্ছেন।

এক সময় নড়াইলের জমিদার কালিবাবুর উদ্যোগে যশোর থেকে কলকাতা পর্যন্ত এ রাস্তাটি তৈরি করা হয়েছিল। সে সময় কালিবাবু রাস্তার দুই পাশ দিয়ে লাগিয়ে ছিলেন কয়েক হাজার রেইনট্রি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কালিবাবুর লাগানো বেশির ভাগ গাছ মরে গেছে। কিছু গাছ কেটে নিয়েছে অসাধু লোকজন। পরে আবার নতুন করে অনেক গাছ লাগানোও হয়েছে। যশোর জেলা প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, যশোর-বেনাপোল সড়কে নতুন-পুরনো মিলিয়ে আড়াই থেকে তিন হাজার গাছ রয়েছে। এর মধ্যে শতবর্ষী গাছের সংখ্যা আড়াইশ। রাস্তা চার লেনে প্রশস্ত করতে গেলে এসব গাছই কাটা পড়বে। গত ৬ জানুয়ারি যশোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক যথাযথ মানের ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের আওতায় রাস্তার দুই পাশের গাছগুলো অপসারণ’ বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় জানানো হয়, গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার জন্য ইতিমধ্যে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। শিগগিরই এর কাজ শুরু হবে। কিন্তু মহাসড়কটির দুই পাশে নতুন-পুরনো অনেক গাছ রয়েছে। সেগুলো রেখে মহাসড়ক চার লেন করা সম্ভব নয়। সে কারণে জনস্বার্থে গাছগুলো কাটতে হবে। সভায় উপস্থিত সরকারি কর্মকর্তাদের কেউই গাছ কাটার ব্যাপারে দ্বিমত করেননি। সভায় জানানো হয়, রাস্তা নির্মাণের পর দুই পাশে নতুন করে গাছ লাগানো হবে। যে গাছ রাস্তার ক্ষতি করবে না, তেমন গাছই লাগানো হবে। যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আশরাফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় যশোর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুল মালেক ও বেলায়েত হোসেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ খুলনার পরিচালক হোসেন আলী খন্দকার, যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রুহুল আমিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হোসাইন শওকত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আশরাফ উদ্দিন জানান, গাছ কাটার ব্যাপারে যশোর, ঝিকরগাছা ও শার্শা উপজেলা পরিষদ এবং যশোর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় আগেই সিদ্ধান্ত হয়। গাছগুলোর মালিকানা নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের এবং জেলা পরিষদের মধ্যে যে বিরোধ আছে তা আন্তমন্ত্রণালয় সভায় নিষ্পত্তি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এদিকে শতবর্ষী গাছগুলো কাটার সিদ্ধান্ত মিডিয়ায় প্রকাশ হলে এর পক্ষে-বিপক্ষে নানা ধরনের আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, শতবর্ষী এ গাছগুলোর এখন আর তেমন উপযোগিতা নেই। বেশির ভাগ গাছের কাণ্ডের ভিতরে ফাঁপা হয়ে গেছে। এসব গাছের ডাল ভেঙে দুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটেছে। তা ছাড়া এসব গাছ রেখে রাস্তার যত উন্নয়ন করা হোক না কেন, গাছের মোটা মোটা শেকড়ের কারণে কয়েক মাসের মধ্যেই রাস্তার অবস্থা আগের মতো হয়ে যাবে। তা ছাড়া উন্নত দেশগুলোতে রাস্তার পাশে এখন আর গাছ লাগানো হয় না। কারণ বৃষ্টি থেমে গেলেও বৃষ্টির পানি অনেকক্ষণ ধরে রাস্তার ওপর পড়তে থাকে। এতে রাস্তায় গর্তের সৃষ্টি হয়। তবে বৃক্ষপ্রেমীরা বলছেন, ছোট্ট একটা এলাকার মধ্য থেকে একবারে আড়াই থেকে তিন হাজার গাছ কেটে ফেললে এ এলাকার পরিবেশের ভারসাম্যের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে। বেনাপোলের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল থেকে বারাসাত পর্যন্ত শতবর্ষী গাছগুলো রেখেই যেখানে রাস্তা প্রশস্তকরণ করা হয়েছে, যশোর-বেনাপোল সড়কটিও সেভাবে করা যায় কিনা সে ব্যাপারেও মতামত দিয়েছেন অনেকে। আর গাছ কাটার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে কঠোর আন্দোলন করা হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে কয়েকটি রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)