বুধবার ● ৩ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাইকগাছায় দেরিতে খেজুর গাছ পরিচর্যা করছে গাছিরা
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাইকগাছায় দেরিতে খেজুর গাছ পরিচর্যা করছে গাছিরা
জলবায়ু পরিবর্তন ও অতিরিক্ত বৃস্টির কারণে পাইকগাছাসহ দক্ষিণাঞ্চলে খেজুর গাছ থেকে রস আহরণে গাছের পরিচর্চা দেরিতে শুরু হয়েছে। সে কারণে প্রায় এক মাস পরে উপজেলার গাছিরা খেজুর গাছ পরিচর্চা শুরু করছেন। এখন খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে পাইকগাছার গাছিরা।
শীতে রস আহরণের জন্য খেজুর গাছের পরিচর্যার মধ্যে প্রধান কাজ হলো গাছের মাথা পরিষ্কার করা এবং সুনিপুণভাবে কাটার প্রস্তুতি নেওয়া। রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করতে গাছিরা গাছের পুরাতন পাতা ও ডালপালা ছেঁটে গাছের মাথা পরিষ্কার করে। এই পরিচর্যার মূল উদ্দেশ্য হলো পরিষ্কারভাবে কাটার জায়গা তৈরি করা যাতে পরবর্তীতে রস সংগ্রহ করা যায়।
শীত মৌসুম এলেই পা্ইকগাছা উপজেলার সর্বত্র শীত উদযাপনে খেজুরের রসের মুখরোচক উপাদান তৈরি করা হয়। রসের চাহিদা থাকে প্রচুর। খেজুরের রস আহরণ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এ এলাকার গাছিরা। খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য বিশেষভাবে পারদর্শীদের স্থানীয় ভাষায় গাছি বলা হয়। এ গাছিরা হাতে দা নিয়ে ও কোমরে দড়ি বেঁধে নিপুণ হাতে গাছ পরিস্কার করে নল বসানোর কাজ শুরু করেছেন।
শীতের দিন মানেই গ্রামাঞ্চলে খেজুর রস ও নলেন গুড়ের মৌ মৌ গন্ধ। শীতের সকালে খেজুরের তাজা রস যে কতটা তৃপ্তিকর তা বলে বোঝানো যায় না। আর খেজুর রসের পিঠা এবং পায়েস তো খুবই মজাদার। এ কারণে শীত মৌসুমের শুরুতেই গ্রামাঞ্চলে খেজুর রসের ক্ষীর, পায়েস ও পিঠে খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। প্রতিদিনই কোনো না কোনো বাড়িতে খেজুর রসের তৈরি খাদ্যের আয়োজন চলে। শীতের সকালে বাড়ির উঠানে বসে সূর্যের তাপ নিতে নিতে খেজুরের মিষ্টি রস যে পান করেছে, তার স্বাদ কোনো দিন সে ভুলতে পারবে না। শুধু খেজুরের রসই নয় এর থেকে তৈরি হয় সুস্বাদু পাটালি গুড়। খেজুর গুড় বাঙালির সংস্কৃতির একটা অঙ্গ। নলেন গুড় ছাড়া আমাদের শীতকালীন উৎসব ভাবাই যায় না।
কালের বিবর্তনে উপকূলীয় এলকা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ। গাছ আর গাছির অভাবে বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেজুরের রস স্বাদ থেকে অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছে। উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের মাঠের ক্ষেতের আইলে, রাস্তার পাশে, পুকুর পাড়ে-অযত্নে-অবহেলায় বেড়ে উঠেছে খেজুরের গাছ। যাহা অর্থনীতিতে আশীর্বাদ স্বরুপ। শীত মৌসুমে রস-গুড় উৎপাদন করে প্রায় ৪ থেকে ৫ মাস স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে এই উপজেলার শতাধিক পরিবার।
উপজেলার গদাইপুর গ্রামের গাছি ইসলাম গাজী বলেন, আমার বয়স প্রায় ৭০ বছর, এখনও খেজুর গাছ থেকে রস বের করার কাজ করছি। তবে নতুন কেহ গাছির কাজ করতে আসছে না। তকিয়া গ্রামের গাছি আব্দুল মজিদ জানান, চলতি মৌসুমে প্রায় একশত গাছ থেকে খেজুরের রস আহরণ করবেন। খেজুর গাছের রস, গুড়-পাটালি বিক্রয় করে খরচ বাদে প্রায় ৭০ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন জানান, খেজুর গাছের জন্য বাড়তি কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। ক্ষেতের আইলে ও পরিত্যক্ত জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খেজুর বাগান গড়ে তোলা হলে কৃষকেরা রস ও গুড় উৎপাদন করে আরো বেশি লাভবান হবে।






মনোরম সৌন্দর্যের লাল মুক্তঝুরি ফুল
রেড পামকিন বিটল পোকা
পৌষ্পিক সৌন্দর্যের দাদমর্দন ঔষধি গুণে ভরা
পাইকগাছায় পতিত জমিতে কাগজি লেবুর বাম্পার ফলন
বন টেপারি বা ফটকা ভেষজ উদ্ভিদ
পাইকগাছায় আঁশফলের ফলন ভালো; বাজারে চাহিদা বেড়েছে
পাইকগাছায় কাঁঠালের ফলন ভাল হয়নি; তবে ভালো দামে খুশী চাষিরা
পাইকগাছায় লতা আমের খোসার রং বাদামি সফেদার মতন ; বাজারে চাহিদা নেই
পাইকগাছায় বাণিজ্যিকভাবে কলার আবাদ বেড়েছে 