শিরোনাম:
পাইকগাছা, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১

SW News24
সোমবার ● ১ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » মুক্তমত » বিনোদনে বৈচিত্র্যময় ক্রিড়া সাংবাদিকতা
প্রথম পাতা » মুক্তমত » বিনোদনে বৈচিত্র্যময় ক্রিড়া সাংবাদিকতা
১২৭ বার পঠিত
সোমবার ● ১ জুলাই ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বিনোদনে বৈচিত্র্যময় ক্রিড়া সাংবাদিকতা

---

প্রকাশ ঘোষ বিধান

বর্তমান পৃথিবীতে মানুষের বিনোদনের প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে খেলাধূলা। আর গণমানুষের কাছে খেলাধূলাকে বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে উপভোগ্য করে উপস্থাপনা করে ক্রীড়া সাংবাদিকগণ।  খেলাধূলা প্রেমীদের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে চলেছে ক্রীড়া সাংবাদিকরা। বাংলাদেশে গণমাধ্যমের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে ক্রীড়া সাংবাদিকতারও যথেষ্ট বিকাশ ঘটেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে এখন কাজ করছেন বিপুল সংখ্যক ক্রীড়া সাংবাদিক। শুধু ক্রীড়া বিষয় নিয়েও আছে নানা পত্রপত্রিকা।

বিনোদনের সর্ববৃহৎ মাধ্যম খেলাধুলা। বাচ্চা থেকে বৃদ্ধ, সবাই খেলাধুলা নিয়ে মেতে থাকে। আর কেউ সুযোগ পেলেই খেলাতে অংশগ্রহণ করে। এ আগ্রহের কারণে ক্রীড়া সাংবাদিকতাও সমাজের সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে গেছে। নানা রুচির মানুষের জন্য সাংবাদিকতারও বেশ কয়েকটা শাখা রয়েছে। এর মধ্যে যেমন জাতীয়, আঞ্চলিক, রাজনীতি, অর্থনীতি,  আন্তর্জাতিক, বিনোদন, ও ক্রীড়া সাংবাদিকতা রয়েছে। এই সবগুলো ধারা স্বতন্ত্র, তাদের প্রত্যেকের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে।

সাংবাদিকতা একটি বৈচিত্র্যময় পেশা।সাধারণ জনগণের কাছে দৈনন্দিনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খবর পৌঁছে দেওয়াই মূলত সাংবাদিকের কাজ। এটা কাজটি মোটেই কোনো সহজ নয়। অনেক বাঁধা-বিপত্তি সামনে আসে। সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই এগিয়ে যেতে হয় সাংবাদিককে।  এসব কারণে সাংবাদিকতাকে একটি মহান পেশা হিসেবে ধরা হয়। আর ক্রিড়া সাংবাদিকতা শুধু বিনোদন নয়। একটা সময় মনে করা হতো ক্রিড়া সাংবাদিকতায় কোনো ঝুকি বা ভয়  নেই। বর্তমানে ক্রীড়া সাংবাদিকতাও বাঁধা বিপত্তির ব্যতিক্রম নয়। সাংবাদিকতার বাকী ধারাগুলোর ন্যায় এইখানেও রয়েছে আশঙ্কা, নানারকম প্রতিকূলতা ও দায়বদ্ধতা। প্রায়শই দেখা যায় আমাদের সাংবাদিকেরা হয়রানির শিকার হন। ক্রিড়া সাংবাদিক এর ব্যতিক্রম নয়। কখনো খেলোয়াড়,কখনো দায়িত্বরত পুলিশ অথবা অন্যান্য কর্মকর্তাদের দ্বারা। বিনা অপরাধে মার পর্যন্ত খাওয়ার ঘটনাও রয়েছে।

মানবসভ্যতার ইতিহাসের মতোই খেলাধুলার ইতিহাসও পুরোনো। তবে  খেলাধুলার ইতিহাসের মতো ক্রীড়া সাংবাদিকতার ইতিহাস অতটা পুরোনো নয়। আধুনিক  ক্রীড়া সাংবাদিকতার সূচনা আমেরিকার হাত ধরে। আমেরিকায় ক্রীড়া সাংবাদিকতার শুরু ১৮২০-১৮৩০ এর দিকে। প্রাথমিকভাবে ঘোড়দৌড় এবং বক্সিংয়ের সংবাদ প্র্রকাশিত হতো।  সেই সময় খেলাধুলার সংবাদ সংগ্রহের কাজ চলত বিক্ষিপ্তভাবে। একজন সাংবাদিক সব বিষয় কাজ করতো। আালাদা কোন বিট ছিলো না। সামাজিক প্রেক্ষাপটকেন্দ্রিক সংবাদ সংগ্রহের প্রবণতা ছিল।

ক্রীড়া সাংবাদিকতার কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হয়েছে। ক্রীড়া সম্পর্কিত ইভেন্টগুলে সাধারণত দিনের শেষভাগে অনুষ্ঠিত হয়। তাই ক্রীড়া সম্পর্কিত অধিকাংশ নিউজও আসে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত। কিন্তু অন্য ধারাগুলোর ক্ষেত্রে সময়ের এই বিষয়টা একেবারেই ভিন্ন। ক্রীড়া সাংবাদিকতায় আরো একটি চ্যালেঞ্জ হলো সল্প সময়ের মধ্যে সবকিছু গুছিয়ে নিউজনিউজ করা।  প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা ঠিকমতো সময়ই পায় না প্রতিবেদন তৈরি করার। অতি অল্প সময়ে তাদের প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়। কারণ, পত্রিকা ছাপার একটা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া আছে।

সাংবাদিকতায় অধিকাংশ ধারাতে কেবল খবর এবং সাদামাটা বিশ্লেষণ হলেই চলে। কিন্তু ক্রীড়া সাংবাদিকতায় আজকাল তথ্য বিশ্লেষণ আবশ্যিক। কারণ, আধুনিক এই যুগে এসে খেলাধুলা নিয়ে অনেক বেশি ঘাঁটাঘাটি হয়। একই সঙ্গে তুলনামূলক বিশ্লেষণসহ নানা বিচার-বিশ্লেষণে সততার পরিচয় দিতে হয়। তাই শুধু সংবাদ জ্ঞান থাকলেই হচ্ছে না, ক্রীড়া সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানেও পারদর্শী হতে হয়।

ক্রীড়া সাংবাদিকতায় ফিচার স্টোরি করে খুব সহজে পাঠক বা দর্শক-শ্রোতাদের পরিতৃপ্ত করা সম্ভব হয়। ক্রীড়া সাংবাদিকতায় ফিচার স্টোরি করে খুব সহজে পাঠক বা দর্শক-শ্রোতাদের পরিতৃপ্ত করা সম্ভব হয়। তবে সাদামাটা প্রতিবেদন তৈরিই যথেষ্ট নয়। খেলাধুলা সংক্রান্ত প্রতিবেদন করতে গিয়ে অবশ্যই এর আইনকানুন সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি। বর্তমানে প্রতিনিয়ত খেলাধুলার নতুন নতুন প্রযুক্তিনির্ভর আইনকানুন যুক্ত হচ্ছে। প্রতিবেদককে অনেক কিছু বিচার-বিশ্লেষণ করতে হয়। দিতে হয় ভবিষ্যতের নির্দেশনা।  সেসব বিষয়ে অবশ্যই অবগত থাকতে হয়।

সাংবাদিকত পেশাতে সততা অপরিহার্য। সাংবাদিকতা অন্য আট-দশটি পেশার মতো নয়। এটি একদিকে যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, অন্যদিকে ঠিক তেমনি রোমাঞ্চকর। বর্তমান সময়ে ক্রীড়া সাংবাদিকতার সঙ্গে অনেক নেতিবাচক বিষয় জড়িত। ক্রীড়া সাংবাদিকরা একেবারেই নির্ঝঞ্ঝাট থাকেন তা নয়।  বাজিকরদের কাছ থেকে পান অনৈতিক প্রস্তাব। অনেক সময় ক্রীড়া সাংবাদিকদের বাজিকররা স্বার্থ সিদ্ধির মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করে। তারাও হুমকি পান। যাতে নিঃসন্দেহে ঝুঁকি থাকে। বেটিং, ফিক্সিং, স্পটফিক্সিং নানা বিষয়ে সাংবাদিকদের কাজ করতে হয়। সংবাদ তৈরির ক্ষেত্রে সাংবাদিক অবশ্যই সততার সঙ্গে সংবাদ পরিবেশন করতে হয়।

বাংলাদেশ খেলাধুলায় আন্তর্জাতিকভাবে সাফল্য পেয়েছে। সল্প দিনে সুনাম অর্জন করেছে। এসব কারণে গণমাধ্যমের পাঠক-দর্শক-শ্রোতার ক্রীড়া সংবাদের প্রতি আকর্ষণ বশেী থাকে। বস্তুত বাংলাদেশে খেলাধুলার সংবাদের প্রতি আকর্ষণ অন্যান্য সংবাদের চেয়ে অনেক বেশি। সার্বিকভাবে ক্রীড়া সাংবাদিকতা অনেক উপভোগ্য একটি পেশা। দেশের অনেক প্রতিশ্রুতিশীল মেধাবী তরুণ দিন দিন ক্রীড়া সাংবাদিকতার পেশার দিকে ছুটছেন।

লেথক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)